
বিএনপি, গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ক্রমাগত নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে সতর্ক করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তারা গত কয়েকদিন ধরে একটি চক্রান্তের কথা বলছি। আরেকবার ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হচ্ছে। আমরা এটা নিছক রাজনৈতিক বক্তব্য বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বলছি না। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ক্রমান্বয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয়তাবাদী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সদস্যদের সম্মানে জিয়া সাইবার ফোর্সের ইফতার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক বলেন, অতীতেও দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তারা লক্ষ্য করেছেন যে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনে ভোটারদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকায় বিএনপি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছে।
সোমবার গণমাধ্যমে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীদের জড়িয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি জানান, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের পর তিনি জানতে পারেন, ঘটনাটি পত্রিকায় বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তারেক আরও বলেন, 'একটি স্বার্থান্বেষী মহল বা যারা বিএনপি, জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা ক্রমান্বয়ে ১/১১-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় বিএনপি যে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছিল, সেরকম একটি পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে।’
জাতীয়তাবাদী সাইবার ফোর্সকে এ ধরনের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক বলেন, 'আপনারা যারা অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, তাদের এটা অনুধাবন করতে হবে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য ও প্রকৃত তথ্য প্রচারের মাধ্যমে এ ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় বিএনপিপন্থী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, 'আপনাদের কাছে আমার একটি বিশেষ অনুরোধ আছে। আপনাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিতে পারে। কিন্তু যে প্রেক্ষাপটে আপনারা কাজ শুরু করেছেন, তাতে বিএনপি মনে করছে, তাদের সব অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের সহযোগিতা এখন আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। আপনারা সবাই মিলে কাজ করলে আগামী দিনে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিএনপি কী করতে চায়—তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারবেন এবং জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারবেন।’
তিনি শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে ফ্যাসিবাদবিরোধী জনসমর্থন আদায়ে বিএনপিপন্থী অনলাইন কর্মীদের ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। ‘আপনার ভূমিকা এখন আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। মনে হচ্ছে আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হলেই এটা করতে পারবেন... আমার বিশ্বাস আপনারা এই কাজটি সবচেয়ে সুন্দর ও সঠিক উপায়ে করতে পারবেন।’
স্বাধীনতার পর থেকে যখনই বিএনপি দেশ শাসনের সুযোগ পেয়েছে তখনই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন, শিল্প, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণের মতো ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বলে দাবি করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘হয়তো আমরা আরও কিছু করতে পারতাম ... কিন্তু আমরা পারিনি, এটাই আমাদের সীমাবদ্ধতা। এখন পর্যন্ত যা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নত করে, জাতিকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে, সেগুলোর প্রতিটি খাতে বিএনপি সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে এবং মারাত্মক দমন-পীড়ন সহ্য করেছে।’
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের সাইবার যোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, দেশ ও বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আবারও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন আবার সেই লড়াইটায় নামতে হবে। আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমার বিশ্বাস আমাদের যোদ্ধারা এই চক্রান্তকে পরাজিত করে এই লড়াইয়ে জয়ী হবে।’