
বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ডিসি ও এসপিকে নির্দেশ করে তাহলে দেশে আইন প্রয়োগ কি করে হবে বলে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে মাগুরায় এক শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে র্যালিপূর্ব সমাবেশে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। র্যালিটি কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেঁস্তোরার মোড় হয়ে নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা শুনি ডিসি অফিস, এসপি অফিস, মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন জায়গায় নাকি ছাত্ররা গিয়ে নির্দেশনা দিচ্ছে। তারা যদি ডিসিকে নির্দেশ দেয়, তারা যদি এসপিকে নির্দেশ দেয়, তারা যদি ডিসি-এসপির ঘরে বসে থাকে তাহলে আইন প্রয়োগ হবে কি করে? আরে ডিসি-এসপি অন্যায় করলে আপনি ক্যাম্পাসে তার প্রতিবাদ করুন। আপনার জায়গায় ক্যাম্পাস। আপনার হাতে বই থাকবে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও কিভাবে মজবুত করা যায়, আরও কিভাবে শিক্ষার মেরুদন্ডকে মজবুত করা যায় সেটা করুন। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অনুরোধ করবো, আপনারা ক্যাম্পাসে অন্যায়ের প্রতিবাদ গড়ে তুলুন। আপনাদের কাজ না এসপির রুমে গিয়ে তদারকি করা, আপনাদের কাজ না ডিসির রুমে গিয়ে তদারকি করা, আপনাদের কাজ না বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তদারকি করা।
আজকে ধর্ষণের পরিমান বেড়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে নারীরা নিরাপদ নয়। আজকে আপনার মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে তার প্রত্যাবর্তন কিভাবে হবে, ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বাসায় ফিরবে না কি স্বাভাবিকভাবে বাসায় ফিরবে তার কোনো নিরাপত্তা নাই। সকলকে আবারও ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করতে হবে। সেখানে গণতন্ত্রমনা মানুষ, রাজনৈতিক দল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা, ছাত্র সংগঠনসহ সবাইকে একত্রিত হয়ে এই কাজটি করতে হবে।
রিজভী বলেন, আমি সরকারের প্রতি বলতে চাই, যেটি মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আছিয়ার ওপর জুলুমকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। যে দৃষ্টান্ত দেখে অন্যান্য অপরাধীরা, অন্যান্য ধর্ষকরা, অন্যান্য দুস্যরা তাদের হৃদয়ে হৃদকম্পন তৈরি হয়। এটাই হচ্ছে আইনের শাসন, এটার জন্যই ১৫ বছর আমরা লড়াই করেছি। এর জন্য এতো আত্মত্যাগ, এর জন্য আরেক দুস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আছিয়ার জন্য সমস্ত আইনি দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ঘটনার পর দ্রুত গতিতে নারী নেত্রীদের হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আর এখন তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, স্বৈরাচার তো নাই। তাহলে কেনো এসব ঘটনা ঘটছে? প্রশাসনে কারা? আমরা অনেক বারই বলেছি, কোনো দিনই সমাজে ধর্ষণ, খুন, জখম, দুর্নীতির প্রসার ঘটবে না যদি আপনার প্রশাসন ঠিক হয়। প্রশাসন ঠিক থাকতো তাহলে এটি হতো না।
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর নার্গিসের সঞ্চালনায় সমাবেশে মহিলা দলের সহ-সভাপতি নেওয়াজ হালিমা আরলি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহানা আখতার শানু, মহানগর উত্তরের সভানেত্রী রুমা আখতার, দক্ষিণের সদস্য সচিব লুনা লায়লা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।