
জাতিগত, সামাজিক, লিঙ্গীয়, ধর্মীয় আর সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও বৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে একটি বহুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই। আমাদের রিপাবলিক সকল নাগরিককে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ন করা হবে না। বরং রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে সমান গুরুত্ব প্রদান ও সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। মিরাজ মিয়া এ বিষয়ে বলেন, সেকেন্ড রিপাবলিক বলে আমরা কী বোঝাতে চেয়েছি সেটি নাহিদ ইসলামের ঘোষণাপত্রেই পরিষ্কার। তবে আমরা বলছি একটি গণপরিষদ গঠনের কথা। যারা নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। ওই অনুযায়ী দেশ চলবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীরাই গণপরিষদের সদস্য হিসেবে ৩ থেকে ৬ মাস দায়িত্ব পালন করবেন। তারা নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবেন। তারপর তারা সংসদের সদস্য হিসেবে থেকে যাবেন। গণপরিষদের কথা আমরা এজন্য বলছি যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা কিন্তু সংবিধানে বড় পরিবর্তন আনতে পারেন না। তারা কেবল কিছু আর্টিকেল চেঞ্জ করেন। যেটি আবার অন্য দল আসলে বাদ দিয়ে দেয়। তাই আমরা চাই গণপরিষদের মাধ্যমে এমন একটি সংবিধান প্রণয়ন করতে যেটি পরবর্তীতে অন্য কেউ চাইলেও আর পরিবর্তন করতে পারবে না। এদিকে নতুন দলের কর্মকৌশল ঠিক করতে শিগগিরই তিনটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানা গেছে। যারা দলের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন, নির্বাচনী প্রস্তুতি ও কেন্দ্রীয়ভাবে দলকে পরিচালনার কাজ করবে।
এ বিষয়ে সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া বলেন, আমাদের প্রাথমিক কমিটির পর আমরা তিনটি কমিটি করে দেবো। প্রথম কমিটিতে যারা নির্বাচন করবে তারা নির্বাচনী কলাকৌশল ও মাঠ গোছানো নিয়ে কাজ করবেন। দ্বিতীয়টি পার্টি শক্তিশালী করা ও গঠতন্ত্র নিয়ে কাজ করবে। আর তৃতীয়টি ন্যাশনাল পলিটিক্স নিয়ে কাজ করবে। এদিকে শিগগিরই সব জেলা উপজেলায় কমিটি চূড়ান্ত করতে চায় এনসিপি। দলের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, রমজানে আমরা দল গোছানো, কর্মবণ্টন- এসব নিয়ে কাজ করবো। জেলা, থানা কমিটি নিয়ে কাজ করবো। আমাদের সংগঠন গোছানো প্রায় শেষ। সারা দেশে ৪৩০ থানায় নাগরিক কমিটির কমিটি আছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে এনসিপি’র কমিটি হিসেবে রূপ নেবে। আশা করছি মার্চের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি শেষ করতে পারবো।
দলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) আবু সাঈদ লিয়ন বলেন, ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনার বিগতদিনের স্বৈরশাসনের পরও তাকে এদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সরাতে পারেনি। রাজনীতিতে সেই ঘাটতি ছিল। যেটি পোষাতেই আমরা নতুন দল নিয়ে এসেছি। আমরা মনে করি এনসিপি সেই কাজটি করতে পারবে। রাজনৈতিক যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে সেটি পূরণ করবে। সম্পূর্ণ বাংলাদেশপন্থি একটি দল হবে এনসিপি। তিনি বলেন, রমজানের মধ্যেই আমরা নিবন্ধন ও প্রতীক চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবো। কারণ আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো ইতিমধ্যে চূড়ান্ত। তিনি বলেন, আমাদের মূল টার্গেট এদেশের কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী ও প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ। আমরা মনে করি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে এরাই ছিল আমাদের অন্যতম শক্তি। তারাই ফ্যাসিবাদকে সরিয়েছে। তাই আগামীদিনের বাংলাদেশও তাদের গুরুত্ব দিয়ে তৈরি হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা আমাদের কর্মসূচিতে তাদের গুরুত্ব দিচ্ছি।