Image description
বিএনপির বর্ধিত সভা কাল, ঐক্য ও শৃঙ্খলা ধরে রাখার ওপর প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও থাকবে, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে উচ্ছ্বাস, অংশ নেবেন প্রায় ৪ হাজার নেতা

দীর্ঘ বছর পর বিএনপির বর্ধিত সভা ঘিরে সারা দেশের নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের এলডি হল ও মাঠে এ সভা হবে। এতে প্রায় চার হাজার নেতা অংশ নেবেন। ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কেন্দ্র ও তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য শোনার পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ একগুচ্ছ বার্তা দেবেন শীর্ষ এই নেতা। এছাড়া ঐক্যবদ্ধ থাকা ও দলীয় শৃঙ্খলা ধরে রাখার ওপর প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন দলটির হাইকমান্ড। এই সভা ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

১৯৯৭ সালের পর বড় পরিসরে বর্ধিত সভা এটাই প্রথম। এই সভা আহ্বান করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জানা গেছে, বর্ধিত সভা সকাল ১০টা থেকে রাত পর্যন্ত চলবে। সভায় অংশ নেওয়া নেতাদের জন্য সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, সন্ধ্যার নাস্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দিনব্যাপী সভায় জাতীয় স্থায়ী কমিটি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সব কর্মকর্তা ও সদস্য উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া সব জেলা ও মহানগরীর সভাপতি/আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিব, মহানগর ও জেলাধীন সব থানা, উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি/আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিব এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছিলেন ও মনোনয়নের জন্য প্রাথমিক চিঠি পেয়েছিলেন তারাও এ সভায় অংশ নেবেন।

সভা সফল করতে বর্ধিত সভা ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, বর্ধিত সভা সফল করতে গঠিত একাধিক উপকমিটি কাজ করছে। সারা দেশের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি, সভা থেকে দেশের জনগণ ও বিএনপির জন্য ভালো বার্তা যাবে।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা করে বিএনপি। তখন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন।

এদিকে প্রস্তুতির অংশ হিসাবে প্রতিদিনই বর্ধিত সভাস্থল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল ও তৎসংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন বর্ধিত সভা বাস্তবায়ন উপকমিটির সব আহ্বায়ক ও সদস্য। মঙ্গলবারও সভাস্থল পরিদর্শন করেন নেতারা।

বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেন, ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম দলের প্রথম নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা আহ্বান করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখান থেকে মাঠপর্যায়ের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক ও অর্থনীতি অবস্থা সম্পর্কে সবার কাছ থেকে ধারণা নিতে চান। তিনি বলেন, এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাংলাদেশ নিয়ে দেশি-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পর্যায়ের ষড়যন্ত্র চলছে। সেখানে করণীয় কী, তা নিয়ে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের কারণে গত ১৫-১৬ বছর সাংগঠনিক তৎপরতা ও গোছানোর কাজটি ঠিকমতো করতে পারিনি। ৫ আগস্টের পর তৃণমূলে সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছি। যার কারণে বর্ধিত সভা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন। যা নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করবে। এ মুহূর্তে যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে বর্ধিত সভায় অংশ নিতে আমন্ত্রিত নেতারা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নির্ধারিত কার্ড সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় জলবায়ুবিষয়ক সহসম্পাদক ও জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল যুগান্তরকে বলেন, বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে অনেক বছর পর তৃণমূল নেতাদের মহামিলন ঘটবে। সে কারণেই সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা রয়েছে।