
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু একমাত্র বিএনপি স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা ঘোষণা করে দেশ পুনর্গঠনের কথা বলেছে।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু একমাত্র বিএনপি স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা ঘোষণা করে দেশ পুনর্গঠনের কথা বলেছে। বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে সবার আগে পুনর্গঠন করবে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ পুনর্গঠনে দ্রুততম সময়ে স্বচ্ছ নির্বাচন দেয়া জরুরি।’
গতকাল দুপুরে যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে এর আয়োজন করা হয়। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।তারেক রহমান আরো বলেন, ‘জনগণের সমর্থন নেই এমন কোনো কাজ বিএনপি করে না। বিভ্রান্ত হয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়া নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাই বিএনপির বিরুদ্ধে কারো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। বিএনপিই একমাত্র প্রমাণ করেছে অন্যায়ের সঙ্গে তারা আপস করে না।’
তিনি বলেন, ‘এ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা যেমন দলকে পুনর্গঠন করব, আসুন শপথ নিই, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে আমাদের প্রথম কাজ হবে প্রিয় মাতৃভূমিকে পুনর্গঠন করা। দেশের সব কাঠামোকে আমাদের মেরামত করতে হবে—এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’গণ-অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম ও জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে খুনি-লুটেরা স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। ওই সরকার অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় থেকে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। যারা সম্পদ লুটতরাজের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল, দেশের মানুষের অধিকারের কথা বলেছিল, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছিল, কথা বলার অধিকারের কথা বলেছিল, তাদের অনেক ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। কোটির কাছাকাছি বেকারের কর্মসংস্থান, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচি আবার চালু করা। এর মাধ্যমে কৃষকের সেচের পানির ব্যবস্থা করা; শুকিয়ে যাওয়া খাল-বিলে যাতে আবারো পানিপ্রবাহ শুরু হয়। আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি দৃঢ় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যাতে শিক্ষার সুযোগ তাদের কাছে পৌঁছে যায়। নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি, যাতে তাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পায়। এ দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, যাতে চিকিৎসাসেবা নিতে আর কাউকে বিদেশে যেতে না হয়। দেশে থেকেই যেন তারা স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে।’
বিএনপি একটি বিশাল দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সম্মেলনে ১ হাজার ৬১৬ জন কাউন্সিলর, এদের মধ্যে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যাদের বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেয়নি। দলের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে ওই রকম মিথ্যা ও গায়েবি মামলা রয়েছে।’দীর্ঘ ১৬ বছর পর গতকাল যশোর জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সকালে সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু ও সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু। সম্মেলনে কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নেতারা বক্তব্য দেন।