সহিংসতা অহিংসতার বিকল্প নয়
02 Mar, 2014
আন্দোলন, সংগ্রাম, দাবি আদায় প্রভৃতি অহিংস ও সহিংস উভয় পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। বিচক্ষণ, দূরদর্শীসম্পন্ন এবং ইতিহাস জ্ঞানসমৃদ্ধ শাসক যে কোনো আন্দোলন বা সংগ্রাম অহিংস থাকাবস্থায় আলোচনা বা সংলাপের মাধ্যমে নিরসনে উদ্যোগী হয়ে দাবি পূরণে সচেষ্ট হয়। তাই বলে সব অহিংস আন্দোলন বা সংগ্রাম যে আলোচনা বা সংলাপের মাধ্যমে নিরসন হয় তা নয়। বরং আলোচনা বা সংলাপের মাধ্যমে নিরসন করা না গেলেই তা সহিংসতায় রূপ নেয়।
একজন ব্যক্তি, একটি গোষ্ঠী বা শ্রেণী অথবা একটি দল বা জাতিকে যখন তার বৈধ বা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন তা আলোচনা বা সংলাপের মাধ্যমে নিরসন করা না গেলে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নিরসন করার প্রয়াস নেয়া হয়। এ শক্তি প্রয়োগ শাসক বা বিরোধী অধিকার বঞ্চিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী, শ্রেণী, দল বা জাতি উভয় পক্ষের তরফে হতে পারে। শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে যে পক্ষ শক্তির ব্যবহার করে সে পক্ষ সব সময় তার অবস্থান ন্যায়সঙ্গত মনে করে থাকে। তাই এক পক্ষের দৃষ্টিতে যেটি ন্যায় অপর পক্ষের দৃষ্টিতে সেটি অন্যায় এবং পাল্টাভাবে এর বিপরীত।
এ পৃথিবীতে মানুষের আগমনের পর থেকে মানুষ ব্যক্তি, গোষ্ঠী, শ্রেণী, দল বা জাতি হিসেবে নিজের অধিকার রক্ষায় প্রত্যয়ী হয়েছে। আর সব ক্ষেত্রেই সবার কাছে দুর্বল পরাভূত হয়েছে। এখানে ন্যায়-অন্যায়ের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক।
যে কোনো শক্তিধর দেশ গণতান্ত্রিক হলে সে দেশ নিজ দেশে গণতান্ত্রিক শাসন সমুন্নত রাখতে যতটুকু সচেষ্ট, অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশে গণতান্ত্রিক শাসন বহাল রাখতে সেভাবে সচেষ্ট নয়। অপরদিকে শক্তিধর রাষ্ট্র সাম্যবাদী বা সমাজতান্ত্রিক হলে নিজ দেশে ভিন্নমতকে সব সময় শক্তি দিয়ে অবদমিত করে রাখতে সচেষ্ট থাকে। আর অপর রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ন্যায়-অন্যায় বিবেচনার চেয়ে নিজ রাজনৈতিক অভিলাষ বা অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়।
অন্যায়ের প্রতিবিধানে যে কোনো দেশের প্রচলিত আইনের চেয়ে মানুষের ধর্মবিশ্বাসের অবদান কোনো অংশে কম নয়। ধর্ম হল স্বর্গীয় শক্তির কাছে নিজ জীবনের স্বেচ্ছায় সমর্থন। কোনো ধর্মই অন্যায়কে সমর্থন করে না। ধর্মের সঠিক উপলব্ধি ও ব্যাখ্যার মধ্যে নিহিত আছে নিজ অধিকার রক্ষণ এবং অপরের অধিকার সমর্থন। শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার এবং নিষ্পেষণ থেকে নিপীড়িত ও অধিকার বঞ্চিতদের রক্ষার জন্য যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি বা সমগ্র মানব জাতির জন্য নবী-রাসূলের আবির্ভাব হয়েছে। নবী-রাসূলদের মাধ্যমে প্রেরিত স্বর্গীয় বাণী শাসককুলের স্বার্থের পরিপন্থী হওয়ায় প্রত্যেক নবী-রাসূলকে প্রতিকূল পরিবেশে ধর্ম প্রচার করতে হয়েছিল এবং এ প্রতিকূলতাকে অনেক ক্ষেত্রে শক্তি দিয়ে পরাভূত করে অতিক্রম করতে হয়েছিল।
ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগের অবসানের পর প্রায় দুই দশক ধরে বিশ্ব রাজনীতিতে মাার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্য ছিল। সে আধিপত্য বর্তমানে ক্রমহ্রাসমান। এখন চীন বা রাশিয়ার অবস্থান ভিন্নতর হলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে একক সিদ্ধান্তে কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন হয়ে দেখা দেয়। অধুনা আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে রাজনীতির ব্যাপারে খুব বেশি সক্রিয়। তারা উপমহাদেশের প্রতিটি দেশে তাদের আজ্ঞাবহ সরকার দেখতে আগ্রহী। অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে হলেও বিভিন্ন দেশে নিজেদের আজ্ঞাবহ সরকারকে শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রাখতে সচেষ্ট থাকত, বর্তমানে উপমহাদেশের প্রায় সব দেশের ক্ষেত্রে ভারতকে সমরূপ ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। আর এ ভূমিকা বাস্তবায়নে জনমত তাদের কাছে গৌণ হলেও মুখ্য হচ্ছে নিজেদের আজ্ঞাবহ সরকার।
বিগত এক শতাব্দীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধসহ যতগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, এগুলোর পেছনের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, আলোচনা বা সংলাপ ব্যর্থ হওয়ার পর যুদ্ধের সূচনা হয়েছে এবং অধিকাংশ যুদ্ধে শক্তির কাছে বৈধ বা ন্যায়সঙ্গত অধিকার পরাভূত হয়েছে।
আমাদের উপমহাদেশের রাজনীতির দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, স্বাধীনতার জন্য যখন এ অঞ্চলের মানুষ অহিংস আন্দোলনে অবতীর্ণ ছিল তখন বিচক্ষণ ব্রিটিশ শাসকরা বুঝে উঠতে সক্ষম হয়, খুব বেশি দিন নির্বিঘেœ ঔপনিবেশিক শাসন চালিয়ে যাওয়া যাবে না। ব্রিটিশ রাজনীতিকদের মধ্যে ভূখণ্ডগত উপনিবেশ নাকি অর্থনৈতিক উপনিবেশ কোনটি অধিক ফলপ্রদ হবে এ বিষয়ে মতভেদ থাকলেও অর্থনৈতিক উপনিবেশ রক্ষা করা গেলে শক্তি প্রয়োগ সংক্রান্ত কোনো ধরনের ব্যয় ছাড়াই সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে অনুকূল পরিবেশে যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব বিধায় এর পক্ষে অবস্থান দৃঢ়তর হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন এ উপমহাদেশের শাসনভার ব্রিটিশদের কাছে ন্যস্ত থাকায় আমাদের এ উপমহাদেশ স্থল, নৌ ও আকাশ- তিন পথেই জাপান দ্বারা আক্রান্ত হয়। তখন বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) এ উপমহাদেশের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ শাসনের অধীন ছিল। বার্মা রণাঙ্গনে ব্রিটিশ বাহিনী জাপানিদের হামলা মোকাবেলা করতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং তখন তাদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা জন্ম নেয় যে, উপমহাদেশের রাজনৈতিক নেতারা তাদের স্বপক্ষে অবস্থান না নিলে জাপানের অগ্রাভিযান রোধ করা দুরূহ হয়ে দাঁড়াবে। এ আশংকা থেকেই ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকরা তৎকালীন কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতাদের আশ্বস্ত করেন, যুদ্ধে তারা ব্রিটিশদের সমর্থন করলে যুদ্ধের পর তাদের স্বাধীনতা দেয়া হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে জার্মানির শোচনীয় পরাজয় ঘটলে জার্মানির পূর্বাঞ্চলের মিত্র জাপানকে আত্মসমর্থন করতে হয়। যুদ্ধ-পরবর্তী নির্বাচনে যুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের কনজারভেটিভ পার্টি ক্লিমেন্ট অ্যাটলির নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এ নির্বাচনে যুদ্ধ বিজয়ী কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের লেবার নেতা অ্যাটলির কাছে পরাজয় অপ্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু ব্রিটিশ ভোটারদের মূল্যায়ন ছিল- যুদ্ধকালীন নেতৃত্বের জন্য চার্চিলের মতো কঠোর ও দৃঢ় নেতার প্রয়োজন ছিল আর যুদ্ধ পরবর্তী দেশ পুনর্গঠন এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজন অ্যাটলির মতো মধ্যপন্থী নেতা।
যুদ্ধ-পরবর্তী কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ নেতারা অহিংস পন্থায় ব্রিটিশদের পূর্ব প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা দেয়ার কথা বললে চার্চিল কিছুতেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সীমানা সংকুচিত হওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। কিন্তু অ্যাটলির কাছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সীমানার চেয়ে অর্থনৈতিক স্বার্থ বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে অ্যাটলি আলোচনার মাধ্যমে অহিংস পন্থায় ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা দেয়ার পক্ষে অবস্থান নেন।
ব্রিটিশদের সঙ্গে স্বাধীনতার আলোচনা চলাকালীন সিদ্ধান্ত হয়, হিন্দু ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য সমন্বয়ে এক বা একাধিক রাষ্ট্র গঠিত হবে। সে সময় পাক-ভারত উপমহাদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ যেসব প্রদেশ ছিল সেগুলো হল- পশ্চিম প্রান্তে পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এবং পূর্ব প্রান্তে বাংলা। কংগ্রেস নেতারা ব্রিটিশদের সঙ্গে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার আলোচনার প্রথমদিকে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্রের দাবি মেনে না নেয়ার ব্যাপারে অনড় থাকলেও পরবর্তী সময়ে মুসলিম লীগের চাপের কাছে নতিস্বীকারে বাধ্য হন। কিন্তু তখন তারা শর্তজুড়ে দেন যে, ভারতবর্ষকে হিন্দু ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য অনুযায়ী বিভাজিত করা হলে বাংলা ও পাঞ্জাবকে বিভাজিত করতে হবে। ব্রিটিশরা প্রথমদিকে বাংলা ও পাঞ্জাব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায় উভয় রাজ্য মুসলিম রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হবে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের মদদে এমনভাবে বাংলা ও পাঞ্জাবে সহিংস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেয়া হয়েছিল যে, অবশেষে ব্রিটিশরা সহিংসতার ভয়াবহতা থেকে দুটি সম্প্রদায়ের মানুষকে রক্ষার জন্য বাংলা ও পাঞ্জাবের বিভাজন মেনে নিয়েছিল। প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ শাসিত বাংলায় পূর্ব-বাংলার মুসলমানরা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত এ উপলব্ধি থেকে ব্রিটিশরা যখন ১৯০৫ সালে বাংলাকে বিভাজিত করে পূর্ব-বাংলা ও আসাম সমন্বয়ে একটি পৃথক প্রদেশ সৃষ্টি করে তখন কলকাতাভিক্তিক বর্ণ হিন্দুরা বঙ্গভঙ্গের তীব্র বিরোধিতা করে। বর্ণ হিন্দুদের বিরোধিতার কারণে ৬ বছরের মাথায় ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়। কিন্তু অমোঘ সত্য হল, যে বর্ণ হিন্দুদের বিরোধিতায় বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়েছিল, সে বর্ণ হিন্দুরাই পুনরায় বাংলাকে বিভাজিত করে তাদের হীন স্বার্থ সংরক্ষণে সচেষ্ট থেকেছে।
এ উপমহাদেশের অহিংস স্বাধীনতা আন্দোলনে পাঞ্জাব ও বাংলা বিভাজনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কলংকময়। এ কলংকময় ইতিহাসের পেছনের ব্যক্তিদের স্বরূপ উদঘাটন করা গেলে এমন অনেকের মুখাবয়ব কালিমায় ভরে যাবে, যারা শ্রদ্ধার সুউচ্চ আসনে সমাসীন। ভারতবর্ষ বিভাজন-পরবর্তী সম্পূর্ণ ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে সৃষ্ট ভারত ও পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র দুটির প্রথমোক্তটি ব্রিটিশ সৃষ্ট অখণ্ডতা অক্ষুণ্ন রাখতে পারলেও শেষোক্তটির ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হয়নি। শেষোক্ত রাষ্ট্রটির পূর্বাঞ্চলের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও তাদের রাষ্ট্রটির পশ্চিমাঞ্চলের শাসকগোষ্ঠী অধিকার বঞ্চিত করে অবদমিত করে রাখতে সচেষ্ট থাকে। এরই মধ্যে ২৩ বছরের মাথায় সে রাষ্ট্রটির পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম দল আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রটির গণপরিষদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করলে পশ্চিমা সামরিক শাসকরা অহিংস পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকে। এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে সহিংস পন্থায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
অধিকার বঞ্চিত বাঙালি জাতির বৈধ ও ন্যায্য দাবি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর সহিংসতার মাধ্যমে সৃষ্ট দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আশা ছিল, সদ্য স্বাধীন দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দেশ শাসন করে দেশটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর দেখ গেল, ক্ষমতা পরিবর্তনে অহিংস পথ রুদ্ধ করে দেয়ায় বারবার সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভবে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। এ সহিংস পরিস্থিতি আমাদের মুক্তি সংগ্রামের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাছাড়া যে জাতি গণতান্ত্রিক অধিকার প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় বাধ্য হয়ে সশস্ত্র সামরিক অভিযান মোকাবেলায় সহিংস যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল, সে জাতিকে গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে বারবার সহিংস হতে হবে এটি কল্পনাতীত।
এটি সবার উপলব্ধিতে আসা প্রয়োজন, যে মার দেয় সে ভুলে যায় কিন্তু যে মার খায় সে কখনও ভোলে না। তার মধ্যে সবসময় প্রতিশোধ স্পৃহা কাজ করে। সে সদাসর্বদা সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় থাকে এবং মাহেন্দ্রক্ষণের হাতছাড়া করে না। আমাদের দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় সহিংসতা সাময়িক সফলতা দিলেও তা স্থায়ী হয় না। তাই সহিংসতাকে অহিংসতার বিকল্প না ভেবে যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা সংগ্রাম অহিংস থাকাবস্থায় আলোচনা বা সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এর ওপরই নির্ভর করছে একটি দেশ এবং এর পাশাপাশি বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা।
ইকতেদার আহমেদ : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
(যুগান্তর, ০২/০৩/২০১৪)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন