Image description
 

ভোটের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্নে দেশে বারবার তৈরি হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। প্রতিযোগী রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের প্রতি আস্থাহীন। ভোটের প্রশ্নে কেউ কারো ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে নারাজ। এই আস্থাহীনতাই রাজনীতিকে উত্তপ্ত করছে বারবার। ভোটে আস্থাহীনতাকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক কাইজ্জা শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মাগুরায় একটি উপনির্বাচন কেন্দ্র করে। এই রাজনৈতিক কাইজ্জা রূপ নিয়েছিল ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে।

 

মাগুরার উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। তখন বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জোরেশোরে দাবি ওঠে, দলীয় সরকারের অধীনে আর জাতীয় নির্বাচন নয়। ধীরে ধীরে এই দাবি জোরালো থেকে জোরালো হতে থাকে। বাড়তে থাকে কাইজ্জার তীব্রতা। এত চরম অস্থিরতা শুরু হয় দেশে। একদিকে সরকারি দল, অন্যদিকে একজোট হয় জাতীয় সংসদে সব বিরোধী দল। ছোট-বড় সবার দাবি একটাইÑভোটের সময় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই।

 

তখন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। ৩৬ আসনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ২০ আসনে (দুজন সংরক্ষিত মহিলা আসনসহ) তৃতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর এনডিপির সিঙ্গেল আসনকেও জোটের বাইরে রাখা হয়নি। সব বিরোধী দল একজোট হয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেয়। এতে একঘরে হয়ে পড়ে বিএনপি। যদিও এই পদত্যাগ ঝুলে ছিল প্রায় দেড় বছর। এর মধ্যে আন্দোলনের নামে দেশে জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়ে যায়। অফিসগামী আমলাদের রাজপথে দিগম্বরের ছবি তখন ছিল বেশ আলোচনায়। ১৭৩ দিনের হরতাল-অবরোধ, জনতার মঞ্চের নামে আমলাদের বিদ্রোহের পর মেনে নেওয়া হয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি।

 

সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচন হয়েছে। এর আগে ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনও হয়েছে দলনিরপেক্ষ সমঝোতার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এই নির্বাচনগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষ এবং পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কোনো প্রশ্ন ছিল না। যদিও পরাজিত দল নির্বাচনে কখনো সূক্ষ্ম কারচুপি, আবার কখনো স্থূল কারচুপি, কখনো সাগরচুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল।

 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংস্কার দাবিতে চারদলীয় জোট সরকারের সময় বিরোধী দল আওয়ামী লীগ তার মিত্রদের নিয়ে আবার মহাজোট গঠন করে। এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংস্কার দাবিতে শুরু হয় জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন। তখন দাবির মধ্যে ছিল স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স, ছবিযুক্ত ভোটার লিস্ট ও ভোটার আইডি। একপর্যায়ে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চারদলীয় জোট সরকারের (কেউ কেউ বলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার) বিদায়ের দিনে লগি-বইঠার জঙ্গি আক্রমণ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট। প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের উপর উল্লাস-নৃত্য অবাক বিস্ময়ে দেখেছিল বিশ্ব।

 

এরই ধারাবাহিকতাতেই ২০০৭ সালের ১/১১ বা ওয়ান-ইলেভেনে এসেছিল জেনারেল মঈন উদ্দিনের জরুরি আইনের সরকার। ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন এ সরকারও ছিল নির্দলীয়। তবে এ সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। দিল্লির নীলনকশা অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসীন করার লক্ষ্য নিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই নির্বাচন। ফলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে।

 

ক্ষমতায় আরোহণের পরই শেখ হাসিনা ভোটের স্বচ্ছতার বিষয়টি ভুলে যান। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের ফর্মুলা এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে অনুগত দলদাস বিচারপতিদের মাধ্যমে বাতিল করেন একসময় তারই দাবিতে প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান। এরপরই ধীরে ধীরে ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠেন শেখ হাসিনা।

 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের রাতের ভোট ও ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারির ডামি ভোট অনুষ্ঠিত হয় শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে। নিজের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের নামে জাতিকে তামাশা দেখান তিনি। ভোটের অধিকার নিয়ে এই দীর্ঘ সময় অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। প্রাণ দিয়েছেন অনেক মানুষ। গুম-খুনের শিকার হয়েছেন বহু নাগরিক।

 

২০২৪ সালের ১ জুলাই শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়। পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনাসহ তার পুরো সরকার ও পার্লামেন্ট সদস্যরা। হাসিনার পলায়নের পর মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষ মনে করতে থাকে ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে আর প্রাণ দিতে হবে না। ৫ আগস্টের বিপ্লবে গঠিত সরকারও ঘোষণা করে ইতিহাসে সুন্দরতম নির্বাচনের রেকর্ড উপহার দিতে চায় তারা। কিন্তু ইতোমধ্যেই উঠেছে নানা প্রশ্ন। সরকার সত্যিই কি একটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে কি নাÑএ নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে।

 

সিসিটিভি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন সংস্কারের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির সুপারিশে রয়েছে ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন করা। প্রথমে এ নিয়ে পজিটিভ আলোচনাও ছিল নির্বাচন কমিশনে। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা সিসিটিভি স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে, যাকে বলা যায় একেবারেই ইউটার্ন! গত ৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে সাফ জানিয়েছে, সিসিটিভি ও বডি ক্যামেরা নিয়ে কমিশনের করণীয় কিছু নেই। অজুহাত হচ্ছে, বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ হবে সিসি ক্যামেরায়। একদিনের জন্য এত টাকা ব্যয় গ্রহণযোগ্য নয়।

 

কেন দরকার সিসি ক্যামেরা?

আগে দেখে নিই সিসি ক্যামেরা থাকলে কী সুবিধা দেবে নির্বাচনে।

১. ডেটাবেস ধারণসহ সিসি ক্যামেরা প্রতিটি কেন্দ্রে থাকলে নিশ্চিত হওয়া যাবে কোন ভোটার এসেছেন কেন্দ্রে।

২. কেউ দ্বিতীয়বার ভোট দিতে এলে সেটা ধরা পড়বে ক্যামেরায়।

৩. কোনো অপরাধী কেন্দ্রে এলে সেটাও ধারণ করা থাকবে সিসি ক্যামেরার ডেটা সেন্টারে।

৪. কেউ ভোটকেন্দ্রে গন্ডগোল করার বা ভোটের বাক্স ছিনতাই করতে চাইলে সবই সিসি ক্যামেরার ডেটাবেসে থাকবে।

৫. প্রভাবশালীরা কেন্দ্র দখল করতে চাইলে সেটাও থাকবে সিসি ক্যামেরার ডেটা সেন্টারে।

৬. নির্বাচন কমিশনও কেন্দ্রীয়ভাবে দেশের কেন্দ্রগুলোয় তাৎক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে সক্ষম হবে।

৭. এছাড়া ভোটকেন্দ্রগুলোর চারপাশও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে থাকবে।

৮. ভোট গণনায় প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার এবং পোলিং এজেন্টদের সারা দিনের সব কর্মকাণ্ড সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড থাকবে।

 

যদিও নির্বাচন কমিশন থেকে যুক্তি দিয়ে বলা হচ্ছে, কমিশনের নিয়োজিত প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, অমোচনীয় কালি ব্যবহার, প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট, নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার নির্বাচনে ভোটের স্বচ্ছতার জন্য যথেষ্ট। সব প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট উপস্থিত থাকলে তারাই জাল ভোটার চিহ্নিত করতে ভূমিকা রাখবেন। কিন্তু সিসি ক্যামেরায় যেসব ডেটাবেস সংরক্ষিত থাকবে, সেগুলো পুলিশ, আনসার, পোলিং এজেন্ট দিয়ে কখনো সম্ভব নয়।

 

ভোটের পর সিসি ক্যামেরা অকেজো থাকবে?

নির্বাচন কমিশনের একটি যুক্তিতে আরো বলা হচ্ছে, এক দিন ব্যবহারের জন্য এত বিপুল খরচ মেটানোর যৌক্তিকতা নেই। এটি আসলে একটি অজুহাত মাত্র। দেশের ভোটকেন্দ্রগুলো সাধারণত স্কুল, কলেজ এবং মাদরাসায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। অস্থায়ী চিন্তা না করে স্থায়ী চিন্তা করলে প্রতিটি স্কুল, কলেজ এবং মাদরাসাকে একসঙ্গে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে পারলে জবাবদিহি এবং স্বচ্ছতা সারা বছর পর্যবেক্ষণে রাখা সম্ভব হবে। এছাড়া এই সিসি ক্যামেরাগুলো প্রতিটি এলাকার রাস্তাঘাটে সম্প্রসারিত করলে পুরো এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আসবে। অপরাধ দমনে তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখবে সিসি ক্যামেরার ডেটাবেস। অপরাধ সংঘটিত হলে সঠিক তদন্তে সিসি ক্যামেরা তখন সাক্ষী হিসেবে সচিত্র ডেটা সরবরাহ করবে।

 

জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোয় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সিসি ক্যামেরাগুলো ব্যবহার করে মুহূর্তে বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে সারা দেশে। মোটকথা, ভোটকে কেন্দ্র করে শুধু শহর নয়, দেশের ৬৮ হাজার গ্রাম সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে।

 

খরচ কি খুব বেশি?

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ও আস্থাহীনতার কারণে ১৯৯৪ সাল থেকে দেশের বিপুল সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নির্বাচনব্যবস্থাকে অকার্যকর করার মাধ্যমে। এতে বিপুল টাকা পাচার করেছেন ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচনে আস্থাহীনতার প্রশ্নে ধ্বংসাত্মক আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি এবং নির্বাচনব্যবস্থাকে দলীয়করণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠে। এসব বন্ধ করতে হলে প্রয়োজন বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। সিসি ক্যামেরা থাকলে ভোটে মানুষের আস্থাও বৃদ্ধি পাবে।

 

সুতরাং নির্বাচন কেন্দ্র করে একযোগে সারা দেশকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতাই শুধু নয়, পাশাপাশি স্থায়ীভাবে সামাজিক নিরাপত্তাও তৈরি হবে। সিসি ক্যামেরাকে শুধু ভোটের দিনের জন্য চিন্তা না করে, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা হিসেবে চিন্তা করার যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে।

 

দেশে সার্বিক নিরাপত্তার চিন্তা করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পৃথকভাবে বিভিন্ন এলাকায় সিসি টিভি স্থাপনের প্রজেক্ট নিচ্ছে। এত পৃথক পৃথক বাজেট দিতে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। নির্বাচন কেন্দ্র করে সারা দেশে একযোগে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলে এক খরচে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের কাজ হচ্ছে। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খণ্ড খণ্ড খরচ না করে এক খরচেই রাষ্ট্রীয় ব্যয়ও সংকুচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

 

স্বচ্ছ ভোটের প্রশ্ন থেকেই তো পরস্পরে আস্থাহীনতা, অবিশ্বাস ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ভোটের অধিকারের প্রশ্নেই তো দীর্ঘ লড়াই। সুতরাং সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে এই ভোটকে প্রশ্নাতীত স্বচ্ছতায় নিতে পারলে অসুবিধাটা কোথায়!

 

১৭ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের অধিকারের লড়াই করেছে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে টানা ৩৬ দিনের সর্বাত্মক লড়াইয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ যোগ দিয়েছেন। মানুষের মাথার ওপর চেপে বসা ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকারও যদি একটি গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এর দায় বহন করতে হবে প্রধান উপদেষ্টাকে। কেননা তার ওপরই দেশের মানুষের নিরঙ্কুশ আস্থা।

 

অলিউল্লাহ নোমান

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, আমার দেশ