
বাংলাদেশের বিশেষ ভাবাদর্শের মিডিয়া দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতি, বুদ্ধিজীবী এবং সংবাদমাধ্যমকে প্রগতিশীলতা ও প্রতিক্রিয়াশীলতার দ্বৈতে (Binary) বিভক্ত রাখতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভূমিকা রেখে চলেছে।
এই চিহ্নিত মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী স্বাধীনতার পর থেকে প্রগতিশীলতার যে বয়ান জাতিকে অনবরত গিলিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, ভারত সম্পর্কে মোহাবিষ্ট মনোভাব প্রদর্শন, আওয়ামী লীগ ও ভারতপন্থি বাম রাজনীতির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন, মুসলিম বিশ্ব বিশেষ করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঘৃণা সৃষ্টি, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিদ্বেষ কিংবা নিদেনপক্ষে ঔদাসীন্য পোষণ, বাঙালি মুসলমানের নিজস্ব সংস্কৃতির উপেক্ষা ও বিরুদ্ধাচরণ এবং সমাজে হিন্দু সংস্কৃতির বিস্তার ও আত্তীকরণ।
উপরোক্ত শ্রেণি কী উপায়ে প্রগতিশীলতার মানদণ্ড স্থির করে, তার উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আল মাহমুদের প্রতি তাদের সময়ের সঙ্গে ব্যবহার পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। যতদিন আল মাহমুদ ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন ততদিন এই বিশেষ শ্রেণির মিডিয়া তাকে একজন খুবই শ্রদ্ধাভাজন প্রগতিশীল কবি হিসেবে বিবেচনা করত। তারা কবির জীবন ও সাহিত্য নিয়ে সে সময় নিয়মিত প্রচার চালাত। জীবনের একটি পর্যায়ে আল মাহমুদের চিন্তাধারায় যখন পরিবর্তন এলো এবং তিনি প্রাত্যহিক জীবনে একজন ধর্ম পালনকারী মুসলমানে (Practicing Muslim) পরিবর্তিত হলেন, সঙ্গে সঙ্গে তার প্রগতিশীলতা খারিজ হয়ে গেল। এরপর এই মহান কবি যতদিন বেঁচে ছিলেন, তাকে প্রতিক্রিয়াশীলতার অপবাদ নিয়ে বৈরী পরিবেশে নীরবে, নিভৃতে দিন কাটাতে হয়েছে।
প্রগতিশীলরা শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদকে যথাক্রমে বাঙালি এবং ইসলামপন্থি কবি হিসেবে ভাগ করেছিলেন। আল মাহমুদ বাংলাদেশের কবি হতে চেয়েছেন, উভয় বাংলার কবি হওয়ার কোনো বাসনা তার মধ্যে ছিল না। ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার দোর্দণ্ড ফ্যাসিস্ট শাসনামলে তিনি একরকম অবহেলা নিয়েই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।
আরেকজন কবি আল মাহমুদ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কতকাল অপেক্ষা করতে হবে, সেটা একমাত্র সর্বশক্তিমান জানেন। আমাদের মহান কবি ফররুখ আহমদকেও স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশে নিদারুণ অপমান ও দুঃখ-কষ্ট নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। আশ্চর্য হয়ে আরো একটি লক্ষ করার মতো বিষয় হলো, কখনো দেখবেন না ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তি এই মিডিয়ার কাছে কখনো প্রতিক্রিয়াশীলতার খেতাব পেয়েছেন। চট্টগ্রামের হিন্দু চরমপন্থি ইসকন নেতা চিন্ময় পর্যন্ত তাদের চিন্তায় একজন অতি প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার মানুষ। এদের কাছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ একটি ‘অসাম্প্রদায়িক’ ও ‘প্রগতিশীল’ সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হয়। অথচ কোনো রাজনৈতিক কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠনের নামে ‘ইসলাম’ শব্দটি থাকামাত্র সেই সংগঠন তাদের কাছে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগে অচ্ছুত হয়ে যায়।
এসব কথিত প্রগতিশীল মিডিয়ার রিপোর্টিংয়ের মধ্যেও যেকোনো মনোযোগী পাঠক পরিষ্কার পক্ষপাত দেখতে পাবেন। আমাদের সব পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে দলীয়ভাবে বিভক্ত। শিক্ষক এবং সাংবাদিকরাও এই দলীয় বিভাজনের বাইরে নন। ফ্যাসিস্ট জামানায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বর্তমান সময়ে ভয়ানক তিক্ততার সম্পর্কে বিভক্ত বিএনপি ও জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা আওয়ামীপন্থিদের বিরুদ্ধে সচরাচর একসঙ্গে যৌথ প্যানেল দিতেন। সে সময় প্রাসঙ্গিক সংবাদ প্রকাশকালে, সুশীল মিডিয়া সেই প্যানেলকে বিএনপি-জামায়াত নামে ব্র্যাকেটবন্দি করে লিখলেও, আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের প্যানেলকে দলীয়ভাবে ব্র্যাকেটবন্দি না করে সেটিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এবং প্রগতিশীল প্যানেল আখ্যা দিত। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেই সুশীল মিডিয়ার দৃষ্টিতে সেটি প্রগতিশীলতার দাবিদার হয়ে পড়ে। সাংবাদিকদের বিষয়ে এদের রিপোর্টিংয়ের ধরন খানিকটা ভিন্ন ধাঁচের।
সেখানে বিভাজনটা ঠিক প্রগতিশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল নয়। সাংবাদিকদের দুই ইউনিয়ন বিএফইউজে এবং ডিইউজে দুই ভাগে বিভক্ত। সুশীল মিডিয়া এ ক্ষেত্রে রিপোর্টিংয়ে বিএফইউজে ও ডিইউজের এক অংশকে শিক্ষকদের মতো (বিএনপি-জামায়াত) করে ব্র্যাকেটবন্দি রাখলেও অপর অংশ অর্থাৎ আওয়ামীদের কোনো ব্র্যাকেট ছাড়া শুধু বিএফইউজে কিংবা ডিইউজে নামে লিখত যাতে পাঠকদের মনে এই ধারণা হয় যে, ব্র্যাকেট ছাড়া অংশটিই সাংবাদিকদের প্রকৃত প্রতিষ্ঠান এবং অপর অংশটি ভুয়া। বুদ্ধিজীবীদের বেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নামের আগে ‘বিশিষ্ট’ বিশেষণ জুড়ে দেওয়া হলেও বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা কেউ বিশিষ্ট নন। তারা সবাই বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক নিতান্তই এক অপাঙ্ক্তেয় দলীয় বুদ্ধিজীবী শ্রেণি। তারা কেউ কস্মিনকালেও বিশিষ্ট হতে পারবেন না। গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো ধর্মবিমুখ ব্যক্তিকেও সুশীল মিডিয়া সবসময় বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী নামেই প্রচার করত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নেও এ ধরনের প্রগতিশীলতার সার্টিফিকেটধারী ব্যক্তি ও সংগঠনের অবস্থানের মধ্যে সর্বদা ভারতীয় বয়ানের প্রতিধ্বনি শুনতে পাবেন। একটি সাম্প্রতিক ঘটনার উদাহরণ দেওয়া যাক। গত সপ্তাহে খাগড়াছড়িতে পরিকল্পিত সহিংসতার সময় তথাকথিত প্রগতিশীল মিডিয়া এবং সুশীল সমাজ বিভিন্ন বয়ানে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের পক্ষেই প্রচার চালিয়েছে। গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বিপ্লবোত্তর সরকারকে ব্যর্থ প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে ভারত তার এদেশীয় এজেন্টদের মাধ্যমে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে গেছে। বিগত এক বছরে দফায় দফায় সংখ্যালঘু, ইসলামি জঙ্গি ও মৌলবাদ এবং নানা ধরনের দাবিদাওয়া সংবলিত অসংখ্য কার্ড ব্যবহার করে ব্যর্থ হওয়ার পর এবারের দুর্গাপূজার সময় পাহাড়কে নতুন করে অশান্ত করার অপচেষ্টা হয়েছিল।
এক মারমা কিশোরীকে গণধর্ষণের সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং পরিকল্পিত অভিযোগ তুলে খাগড়াছড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ নামধারী পাহাড়িদের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন। মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে সেখানকার চাকমা ও মারমা অধিবাসীদের উত্তেজিত করে সমতলভূমির জনগণের বাড়িঘর, দোকানপাট এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা টানা তিন দিন খাগড়াছড়ি এবং অন্যান্য পাহাড়ি অঞ্চলে তাণ্ডব সৃষ্টি করে। জনগণের জানমাল এবং আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলিবর্ষণ করলে তিনজন বিক্ষোভকারী দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিহত হয়। ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে প্রায় এক সপ্তাহ চরম অশান্তি বিরাজ থাকার পর খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলে কারফিউ, ১৪৪ ধারা ইত্যাদিও উঠে গেছে। এলাকার পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠী তাদের দৈনন্দিন জীবনে ফিরে গেছে।
প্রকৃতপক্ষে বেশ কিছুদিন ধরেই পাহাড়কে অশান্ত করার অপচেষ্টা চলছে। এর সাম্প্রতিক সূত্রপাত হয়েছিল ফ্যাসিস্ট আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামক ভারত সমর্থিত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে। সংগঠনটির সদস্যরা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে এরা নিয়মিত চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড চালালেও বিগত সরকার সন্ত্রাসীদের দমনে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করে রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে ক্রমাগত হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে। পার্বত্য সীমান্ত অঞ্চলে মূল জঙ্গিদের মোকাবিলার পরিবর্তে শেখ হাসিনার সরকার কল্পিত ইসলামি জঙ্গি কার্ড ব্যবহার করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছে।
পাহাড়ে অস্থিরতার একেবারে মূল উৎপত্তি হয়েছিল সত্তরের দশকে শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে। সে সময় ভারত চাকমা বিদ্রোহীদের সমন্বয়ে গঠিত শান্তিবাহিনী নামে এক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে মদত দেওয়া শুরু করে। পরে ইউপিডিএফ নামক আরো একটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম হয়েছে। শান্তিবাহিনী এবং ইউপিডিএফের মধ্যে পার্বত্য অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায়ই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের উপরোক্ত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত হলেও আমরা দেখলাম, কথিত প্রগতিশীল মিডিয়ায় খাগড়াছড়ির সন্ত্রাসের জন্য ইউপিডিএফ এবং ভারতকে দায়ী করার পরিবর্তে আমাদের সেনাবাহিনী ও সরকারকে বিতর্কিত করে অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। পাহাড়ে সন্ত্রাস শুরু হওয়ামাত্র সব ‘স্বঘোষিত প্রগতিশীল সুশীল বুদ্ধিজীবীরাও’ পরিকল্পনামাফিক মাঠে নেমে গিয়েছিলেন। তারা প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর না নিয়েই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকার ও সেনাবাহিনীবিরোধী বিবৃতিবাজিতে লেগে গেলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ভারতের বিবৃতির সঙ্গে এসব প্রগতিশীলের বক্তব্যের দৃশ্যমান মিল রয়েছে।
১৯৭৫ সাল থেকেই ভারত বাংলাদেশের পাহাড়কে অশান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিশীলরাও ভারতের সেই খেলার স্থানীয় অংশীদারের ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই সুশীল শ্রেণি প্রায়ই ভারতের সুরে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার রাষ্ট্রবিধ্বংসী দাবি করে বিবৃতি দিয়ে থাকে। অথচ কাশ্মীর থেকে শুরু করে অরুণাচল পর্যন্ত, ভারতের সব পার্বত্য অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিপুল উপস্থিতি রয়েছে। ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু এবং কাশ্মীরে মাত্র এক কোটি জনগোষ্ঠীর উপত্যকায় প্রায় ১০ লাখ ভারতীয় সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী এবং পুলিশ রয়েছে। মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ড বছরের পর বছর প্রচ্ছন্ন সামরিক আইন (The Armed Forces Special Powers Act, AFSPA) দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৫৮ সালে প্রণীত এই আইনে ভারতীয় সেনাবাহিনী সে দেশের যেকোনো নাগরিককে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার এবং প্রয়োজনে হত্যা করারও ক্ষমতা রাখে।
এই কাজের জন্য সেনাবাহিনীকে এসব রাজ্য সরকারের কাছে কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। যে দেশ এমন ভয়ংকর দমনমূলক আইন প্রণয়ন করেছে, তারাই আবার আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অহরহ মন্তব্য করে চলেছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের অনৈক্যের কারণেই দিল্লি এই স্পর্ধা দেখাতে পারছে। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার পনেরো বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ভারতের কাছে আমাদের সার্বভৌমত্ব বন্ধক দেওয়ার ফলেই বাংলাদেশের নিরাপত্তা ক্রমান্বয়ে অধিকতর হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের সেনাবাহিনীর একশ্রেণির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লোভ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ভীরুতার ফলে জনগণের সঙ্গে সেনাবাহিনীর দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সে সময় রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনে অমনোযোগী হয়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে পেশাদারিত্ব বিসর্জন দিয়ে দলীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। সেনা কর্মকর্তাদের আত্মসম্মানবোধ এবং দেশপ্রেমের এতটাই ঘাটতি হয়েছিল যে, বাংলাদেশের দুই সাবেক জেনারেলের ভারতে গিয়ে পালিয়ে থাকার তথ্য মিলেছে। এদের মধ্যে একজন দীর্ঘদিন ডিজিএফআইর প্রধানও ছিলেন। হয়তো সে দেশে এ ধরনের পলাতক, ভারতীয় দালাল বাংলাদেশি জেনারেলদের তথ্য ভবিষ্যতে আরো মিলবে। এর ফলে রাষ্ট্রের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সামরিক বাহিনীর মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশা করি,
খাগড়াছড়ির সর্বশেষ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের সবার সংবিৎ ফেরাতে সহায়তা করবে।
তথাকথিত প্রগতিশীল সুশীল সমাজ, সামরিক বাহিনী, রাজনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রের অন্যান্য অংশে লুকিয়ে থাকা মীরজাফরদের সম্পর্কে দেশপ্রেমিক জনগণকে সতর্ক করে আজকের লেখা সমাপ্ত করছি।