
এম আবদুল্লাহ
দেড় দশক পর ভিন্ন পরিবেশে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ পালিত হলো। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে এ দিবসটিও মুক্তভাবে পালন করা যায়নি। গত ১৫ বছরে দিবসটি উপলক্ষে সভা-সেমিনার করতে গিয়ে প্রচণ্ড বাধা ও হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনুষ্ঠান আয়োজনের পর গোয়েন্দা চাপে হল বুকিং বাতিল হয়েছে। নিরাপত্তা হুমকির মুখে অনেক আলোচকও এ ধরনের অনুষ্ঠানে হাজির হতে এবং কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করতেন।
এবারের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর কোনো সভা-সমাবেশ এখন আর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। ফলে এবার ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে সরব আয়োজনে। সবাই মন খুলে কথা বলছেন। বর্তমান সরকারের সময়ে মিডিয়া পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করলেও ছোটখাটো ঘটনায় সরকারের সমালোচনা করতে পারছেন সবাই। চব্বিশের রক্তভেজা বিপ্লবের এটা অন্যতম প্রাপ্তি বলা যেতে পারে।
প্রতি বছরের মতো এবারও ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স প্রকাশ করেছে সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা প্যারিসভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার। এ বছরের মুক্ত গণমাধ্যম সূচকটি বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। সূচকে দেখা যাচ্ছে, এক বছরের ব্যবধানে রেকর্ড ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ; ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯-এ উন্নীত হয়েছে। সূচকে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের অবস্থান বাংলাদেশের পরে। ভারতও এবারের সূচকে গতবারের চেয়ে আট ধাপ এগিয়েছে। দেশটির অবস্থান ১৫১তম, বাংলাদেশের দুই ধাপ পেছনে। গত বছর তাদের অবস্থান ছিল ১৫৯তম। ছয় ধাপ পিছিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান এবার ১৫৮তম। গত বছর পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল তলানিতে। পেছনে ছিল কেবল আফগানিস্তান। এবারের সূচকে নেপাল ১৬ ধাপ পিছিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেরও অবনতি হয়েছে। তাদের অবস্থান ৫৭তম, গত বছর ছিল ৫৫তম।
বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনে ৪৪ ধাপ অবনতির পর বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বড় ধরনের এ উন্নতি বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের মে মাসে প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়ায় ১৬৫-তে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার সময় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২১তম।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণমাধ্যম কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে, তার ওপর ভিত্তি করে আরএসএফ সূচক প্রকাশ করে আসছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, আইনি সুরক্ষা, আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিত এবং নিরাপত্তা—এই পাঁচ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক তৈরি করা হয়। এবার গত বছরের তুলনায় প্রতিটি বিষয়ে ভালো করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কেমন, সেই আলোচনায় আরএসএফ বলেছে, বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি নাগরিকের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে এবং মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তাদের সংযোগ সামান্য। সংবাদ ও তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলোর ভূমিকা বাড়ছে।
সাংবাদিকতার স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি দেশের সংবাদপত্রগুলোর কাছে তেমন গুরুত্ব পায়নি। কেন পায়নি তা বোঝা গেল না। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রধান প্রধান সংবাদপত্র আরএসএফের ইনডেক্সটি প্রথম পৃষ্ঠায় স্থান দেয়নি। প্রশ্ন উঠতে পারে—ইনডেক্সে যদি উল্টোচিত্র আসত বা বড় ধরনের অবনতি হতো, তা হলেও কি সংবাদমাধ্যম একই সংবাদমর্যাদা দিত? আগের মতো বিশেষ বিশেষ মহল থেকে ফোন বা নির্দেশনা না থাকায় বৈশ্বিক সূচকে দেশের অগ্রগতিকে হেয় করে দেখার প্রবণতা দুঃখজনক।
গতকাল মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে একটি শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক তাদের প্রধান প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২৬৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা হয়েছে। তারা যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকায় ৮৮, সিলেটে ৩৯, চট্টগ্রামে ৩৬, বগুড়ায় ১৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৬, কুষ্টিয়ায় ১৫ ও নারায়ণগঞ্জে ১১ সাংবাদিক হত্যায় প্ররোচনাসহ ফৌজদারি অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি হয়েছেন। এ ছাড়া আরো ১২টি জেলায় এক থেকে ছয়জন পর্যন্ত সাংবাদিক অভ্যুত্থানোত্তর দায়ের করা মামলায় জড়িয়েছেন। পত্রিকাটি তাদের রিপোর্টে বলার চেষ্টা করেছে, শারীরিক নিরাপত্তা ও বিচারিক হয়রানি আগের মতোই দেখা যাচ্ছে, কেবল এসবের নায়কেরা বদলেছে। পত্রিকাটি উল্লেখিত সংবাদটি লিড করলেও বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের ১৬ ধাপ উন্নতি-সংক্রান্ত সংবাদটি হেলাফেলায় খুব ছোট অক্ষরে সিঙ্গেল কলামে প্রকাশ করেছে। যদিও ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম হওয়া গৌরবের নয়, তবুও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। দ্রুত আরো উন্নতি করে দুই ডিজিটে আসুক, সে প্রত্যাশা সংবাদকর্মী হিসেবে বোধ করি সবার।
পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা কোনোমতেই সমর্থনযোগ্য নয়। যারা গত ১৫ বছরে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট ভোগ করে অবৈধ উপায়ে বিত্তবৈভব গড়েছেন, তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে সুনির্দিষ্টভাবে তাদের বিরুদ্ধে সেসব অভিযোগে মামলা হতেই পারে, আইনের মুখোমুখি করা যেতে পারে। কিন্তু অতীতের মতো গায়েবি অভিযোগ দিয়ে হয়রানি নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে যায় না। আবার অভিযুক্ত সবাইকে ঢালাওভাবে ‘দুধে-ধোয়া’ দাবি করাও ন্যায্যতার পরিপন্থী।
শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিকটির রিপোর্ট পড়ে বোঝা গেল না—যারা হত্যায় উসকানির অভিযোগে আসামি হয়েছেন, তাদের মধ্যে কতজন বিগত ১৫ বছরে সঠিক সাংবাদিকতা করেছেন, পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছেন। দেশে সাংবাদিকের সংখ্যা তো কম করে হলেও ৩০ হাজার। ২৬৬ জনের বিরুদ্ধে কেন মামলা হলো? মামলায় আসামি হওয়ার পর তাদের সাংবাদিক পরিচয় সামনে আনা হলেও কতজন সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে দলবাজি, তেলবাজি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও তদবিরবাজি করেছেন, সে পরিসংখ্যান বা চিত্রটি তুলে আনতে পারলে রিপোর্টটিকে সত্যিকারের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হিসেবে বিবেচনা করা যেত। জুলাই বিপ্লবের পর মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তদের গ্রেপ্তারে তো কোনো অভিযান হয়নি। তারা কেন একবার পূর্ব সীমান্ত, আরেকবার উত্তর সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন? তাদের তো পাবলিক আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
একটি উদাহরণ দিই। ইংরেজি দৈনিকটির রিপোর্ট অনুযায়ী কুষ্টিয়ায় ১৫ সাংবাদিক আসামি হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি। টিউলিপ সিদ্দিকীর পক্ষে দায়ের করা মামলায় দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়ার আদালতে জামিন নিতে গেলে তার ওপর বর্বরোচিত হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা। আমি সে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সারাদিন আমাদের ঘেরাও করে রেখে শেষ বিকালে বের হওয়ার সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বর্বর কায়দায় হামলে পড়ার পুরো ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন এসব সাংবাদিক পরিচয়ধারীরা। আমার ফেসবুক আইডিতে লাইভ প্রচারে সবাই তা দেখেছে।
শুধু মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলাই নয়, সরকারপন্থি সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে থেকে ১৫ বছরে হেন কোনো অপকর্ম নেই, যা তারা কুষ্টিয়ায় করেননি। তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা কমিটিতে বড় পদ রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর মাহমুদুর রহমান হামলার সময়কার ভিডিওচিত্র দেখে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী হিসেবে তাদেরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। এটা কি মাহমুদুর রহমানের অন্যায়, নাকি সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে হয়রানিমূলক মামলা সেটি? কীভাবে দেখবেন ইংরেজি কাগজটির কর্তৃপক্ষ? একুশে পদকে ভূষিত ড. মাহমুদুর রহমানের প্রাণনাশের চেষ্টাকারী ওই সাংবাদিক নামধারী রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা তাদের মামলাটি হয়রানিমূলক দাবি করে তথ্য মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির কাছেও আবেদন করেছে।
সাংবাদিকেরা যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা যাচাই ও পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেয়। সে কমিটির আহ্বানে ৭৪ সাংবাদিক আবেদন করে দাবি করেন, ৫ আগস্টের পর তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা হয়েছে। আবেদনগুলো মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ মামলাই হয়েছে আবেদনকারীর রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আবেদনকারী সাংবাদিকদের প্রায় ৯০ শতাংশের রাজনৈতিক পদ-পদবি রয়েছে। তারা বিগত রেজিমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করেছেন, আর্থিক সুবিধা আদায় করেছেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। এখন ক্ষমতার পালাবদলে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে নির্যাতিতরা বিভিন্ন হত্যাচেষ্টা ও উসকানির মামলায় তাদের নাম দিয়েছেন, অথবা অন্য কোনো অপরাধের কারণে আসামি হয়েছেন। এই যে পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিজমের কারণে মামলা হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সরকারের দায় কতটুকু? সাংবাদিক হিসেবেইবা আমরা তাদের দায় কতটুকু নেব?
অনেকের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধ ভিত্তিহীন ফৌজদারি মামলা এর আগে কখনো হয়নি। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে যে ১২৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, তার মধ্যে কিন্তু শাহবাগ ও রমনা এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের মামলাও আছে। তিনি আমার দেশ অফিসে পুলিশ-গোয়েন্দা বেষ্টনে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায়ও রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছিলেন! যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শেখ হাসিনাপুত্র জয়কে অপহরণের চেষ্টার মামলায় কারাগারে থেকে মাহমুদুর রহমানের ক্ষেত্রে যদি গ্রেপ্তার, রিমান্ড ও সাত বছরের সাজা পাওয়া সংগত হয়, তা হলে সংবাদ সম্মেলনে ও টিভিপর্দায় জুলাই আন্দোলকারীদের জঙ্গি অভিহিত করে কঠোরভাবে দমন করতে উৎসাহিত করাটা গণহত্যায় উসকানির শামিল হবে না কেন?
সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ যে অর্ধশতাধিক মামলা নিয়ে বছরের পর বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরেছেন, সেগুলোর মধ্যে যাত্রাবাড়ীতে পেট্রোলবোমা মেরে গাড়িতে আগুন দিয়ে হত্যা ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রোলবোমায় গাড়ি পোড়ানোর মামলা রয়েছে। তখন কাউকে প্রশ্ন তুলতে দেখা গেল না—‘শওকত মাহমুদ পেট্রোল বোমা মেরেছেন, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?’ আমাদের এই যে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি, মানুষ কি তা খালি চোখে দেখছে না?
মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের প্রাক্কালে সাংস্কৃতিক উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে যে ঘটনা ঘটল, তা নিয়েও ব্যাপক বিতর্ক চলছে। খুব মনোযোগ দিয়ে ওই অনুষ্ঠানের ভিডিওটি দেখলে পরিষ্কার বোঝা যাবে, সেখানে যতটা না সাংবাদিকতা ছিল তার চেয়ে প্রবল ছিল ‘অ্যাক্টিভিজম’। পতিত শেখ হাসিনার পক্ষে খুল্লুমখোলা ভূমিকা রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে তাদের। পরে দুই সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি এবং একজনকে সাময়িক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও এক ধরনের প্রোপাগান্ডার আশ্রয় নিতে দেখা গেছে সাংবাদিকদের একটি অংশকে। সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও ভার্চুয়াল ট্রায়াল হয়েছে।
স্মরণ রাখা দরকার, বর্তমানে স্বাধীন সাংবাদিকতার সুযোগকে যদি আমরা অস্বীকার করি, স্বাধীনতার অপব্যবহার করি, সাংবাদিকতার মোড়কে দলবাজিকে সুরক্ষা দিই, তাহলে আবারও আমাদের চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। এই স্বাধীন দেশে সময়ে সময়ে সাংবাদিকতা যে শৃঙ্খলিত হয়েছে, তার দায় আমরাও এড়াতে পারি না। স্বৈরশাসকদের পদতলে নিজেদের সমর্পণ করার দৃষ্টান্তও কম নয়। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে সংবাদমাধ্যমের ডানাগুলো যে দুর্বল হয়ে ওড়ার সক্ষমতা হারিয়েছে, তা ফিরে পাক—এবারের মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে এটাই কাম্য।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট