Image description
প্রভাবশালী চিন্তক ও বিশিষ্ট লেখক ফাহমিদুর রহমানের সাথে আলাপচারিতা
তাওকীর আনছারী প্রভাবশালী চিন্তক ও বিশিষ্ট লেখক ফাহমিদুর রহমানের সাথে ইদানীং বেশ আলাপচারিতা হয়।এদিন স্যার আক্ষেপ করে বলেছেন-"এটা ঠিক যে তোমাদের সংগঠনে একদল জানবাজ কর্মী বাহিনী আছে যারা নেতার কথায় জীবন দিয়ে দিতে দুইবার ভাববে না।কিন্তু নেই একদল দক্ষ প্রশিক্ষিত চিন্তাশীল লোক।যারা দেশের যেকোনো বাতিল চিন্তাকে বুদ্ধিবৃত্তিক,তাত্ত্বিক ও বিদ্যায়তনিকভাবে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।তারা মিছিল মিটিং ও কিছু স্থূল প্রতিবাদ করেই দায়িত্ব শেষ করতে চায়।" তিনি আরও বলেছেন- "দেখো ফরহাদ মজহারদের মতো লোকদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবে এত সুশৃঙ্খল একটা দল ভেঙে দুই টুকরো হয়ে গেছে কিন্তু এখনো তাকে বা তাদেরকে নিয়ে সংগঠনের কোনো কনসার্ন আছে বলে মনে হয় না।তার সাথে আছে দহরম মহরম সম্পর্ক।তার চিন্তাকে মোকাবিলা করার কোনো কালেক্টিভ প্রচেষ্টা নেই।" উপরের কথাগুলো বলেছি একজন শুভাকাঙ্ক্ষী শীর্ষ বুদ্ধিজীবী আমাদের সম্পর্কে কী চিন্তা করে সেটা বোঝানোর জন্য।তাতেও যদি আমাদের বাস্তবতা উপলব্ধি হয়! একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণ হিশবে মাওলানা আব্বাস আলী খান প্রথমেই কুরআন হাদীস ও ইসলামি সাহিত্য অধ্যয়ন না করাকে দায়ী করেছেন।এর ফলে সৃষ্টি হয় চিন্তার বিকৃতি,চিন্তার স্থবিরতা,লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগত অস্পষ্টতা।আমরা এই কথা ভুলে গেছি যে,আমাদের সংগঠন যতটা না রাজনৈতিক তার চেয়ে বেশি সামাজিক সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক।আল কায়েদ আল ফাদ্বিল উস্তায আবুল আলা মওদুদী রহঃ যতটা না রাজনৈতিক ব্যাক্তি ছিলেন তার চেয়ে বেশি একাডেমিক ও তাত্ত্বিক ছিলেন।তিনি এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার আগে টানা ১০বছর শুধু লিখেছেন আর লিখেছেন তার মশহুর পত্রিকা তরজুমানুল কুরআনে,বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই চালিয়ে গেছেন।সেই চিন্তার উপরই পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মোবারাক একটা জামায়াত। এখন আমরা মাওলানা রাজনৈতিক কর্মসূচীগুলোকে গ্রহণ করেছি,কিন্তু তার দার্শনিক সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সিলসিলাকে বর্জন করেছি।ফলে আমরা একধরনের খেয়ানত করে চলছি।উস্তাযের সামগ্রিক কর্মসূচীর অর্ধেকটা নিয়েছি,অর্ধেকটা বর্জন করেছি।অন্তত আমার সেটাই মনে হয়।মাওলানার চিন্তার সিলসিলাকে কিছুটা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন উস্তায আব্দুর রহীম রহঃ। যারা এসোসিয়েট ও মেম্বার আছেন,তারা সিলেবাসের কয়টা বই কমপ্লিট করেছেন এবং বোঝার মতো বুঝেছেন,অনুধাবন করেছেন একটু যাচাই করে দেখুন।এমন এসোসিয়েটের সাথে কিছুদিন আগে পরিচিত হয়েছি যে সিলেবাসের একটা বইও পড়েনি।অধিকাংশ এসোসিয়েট সিলেবাসের বেশিরভাগ বই পড়ে না,আমার আশেপাশের এসোসিয়েটদের দেখে তাই মনে হয়েছে। আমাদের চিন্তার দৈন্যদশা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে সহজে বুঝতে পারবেন আমাদের ভাইবেরাদরদের অনলাইন এক্টিভিটিজ দেখলেই।কেউ ন্যায্য সমালোচনা করলেও দল বেঁধে গিয়ে গালাগালি আর নগ্ন আক্রমণ করাকেই তাদের দ্বীনি কর্তব্য বলে মনে করে।অথচ তারা জানে না যে,বজ্রের আঘাতে ফল পাকে না।শুধু হুংকার গর্জন ছুঁড়ে আসল সমস্যার সমাধান হবে না।ফেসবুক গালাগালি সংগঠনের ইমেইজ নষ্ট করা ছাড়া আর কোনো ফায়দা করছে না।আপনার গালাগালি প্রমাণ করে আপনার কাছে আসলে দেওয়ার মতো যুক্তি বা উত্তর নেই,তাই গালি দিয়ে কাজ সারছেন। তাই আমাদের ভাইবেরাদরদের প্রতি অনুরোধ,প্লিজ একটু পড়াশোনায় মনোযোগী হোন।অন্তত নিজের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য,সেই লক্ষ্যে পৌঁছার পদ্ধতি,যে রাষ্ট্র চান সেই রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য,আপনার চাওয়া রাষ্ট্রের সাথে সেকুলার রাষ্ট্রের পার্থক্য,আপনার রাষ্ট্রে অমুসলিমদের অধিকার,নারীদের অধিকার,সেকুলার ও কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের চেয়ে আপনার চাওয়া রাষ্ট্র কেন বেটার ইত্যাদি বিষয়ে একটু ক্লিয়ার কনসেপ্ট রাখুন।আপনাদের একজন ভাই,একান্ত আত্মীয় হিশেবে এই পরামর্শটা রাখলাম।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হেদায়েত দিন ও হেদায়েতের উপর অটল রাখুন।