Image description
অন্তর্বর্তী সময়ের শুরু থেকেই জামাতের ভালো সময় যাচ্ছে,পারফর্ম ভালো হচ্ছে!
শরীফ মুহাম্মদ (Sharif Muhammad) অন্তর্বর্তী সময়ের শুরু থেকেই জামাতের ভালো সময় যাচ্ছে। পারফর্ম ভালো হচ্ছে। বড় দল বিএনপির সঙ্গে জামাতের দৃশ্যমান দূরত্ব দূরত্ব একটা ভাব তৈরি হয়েছে, এর পেছনে বিএনপির দায় কম না। রাজাকার আর মৌলবাদ ইস্যুতে বিএনপি সব সময় সংকুচিত। এই সংকোচনের প্রভাব পড়ে জোটের রাজনীতিতে। কিন্তু জামাতের মনে হয়, একক ভালো পারফরম্যান্সের পাশাপাশি নিজের চেষ্টায় বিএনপির সঙ্গে দৃশ্যমান কোন দূরত্বে ব্যাপকভাবে না যাওয়াটা ভালো। স্বাতন্ত্র্য থাকুক, আবার বিএনপি'র সঙ্গে একটা বোঝাপড়াও থাকুক। আনুকূল্যের ধাক্কায় অতীতে দুবার জামাতকে কিছুটা একা হতে দেখা গেছে, এরপর বিপদে পড়তেও দেখা গেছে। ৯৫/৯৬ সনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির সঙ্গে মিলে কেয়ারটেকার সরকারের আন্দোলনে বিএনপি'র বিরুদ্ধে জামাত বিরাট ভূমিকা পালন করে। যুগপৎ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামাতের সমস্ত দূরত্ব দূর হয়ে যায়; ২ বছর আগের জাহানারা ইমামের আন্দোলনের পরও যেন ৭১ ইস্যুতে জামাত দায়মুক্ত হয়ে গেল, এরকম একটা অবস্থা। জামাতের জন্য এটা একটা বিরাট ব্যাপার ছিল, তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে এটা নিয়ে উচ্ছ্বাসও ছিল। কিন্তু ৯৬ এর নির্বাচনে জামাত আসন পায় মাত্র ৩ টি। (91/96 পার্লামেন্টে জামাতের আসন ছিল ১৮+২ 20 টি)। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং যথারীতি জামাতের সঙ্গে তারা ৭১ এর বিরোধ সহ পূর্বতন সব সমস্যাকে নতুন করে জাগ্রত করে। ২০০৭/০৮ সময় ওয়ান ইলেভেন সরকারে বিএনপি আওয়ামী লীগ দুটি দলই ছিল দৌড়ের ওপরে। জামাত তুলনামূলক শান্তিতে ছিল এবং নির্বাচনে ভালো কিছু করার ব্যাপারে তাদের আগ্রহ ছিল। যতদূর জানা যায়, ওই সময়ে বিএনপি'র বিপদকাল আর জামাতের অপেক্ষাকৃত আরাম কালে জামাতের সঙ্গে বিএনপির একটা মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হয়। নানা কারণে জামাত সেটাকে গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধ ইস্যু সহ জামাতের উপর ভয়ংকর ডিজাস্টার নেমে আসে। এই ইস্যুগুলোতে জামাত আবার বিএনপিকে সেভাবে পাশে পায়নি। আনুকুল্য এবং একা হয়ে যাওয়া, ভালো পারফরম্যান্স করা এবং নিজে নিজে চলতে চাওয়া, এটা দলীয় রাজনীতির জন্য অবশ্যই ভালো জিনিস। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির স্টেকহোল্ডারদের যে কাঠামো চোখে পড়ে, তাতে এটা জামাতের জন্য অদূর ভবিষ্যতে কোন জটিলতা নিয়ে আসে কিনা এ ভাবনা/শংকাটা জাগে। সব সময় পরিস্থিতি এক রকম থাকে না। একসময়ের রাজনৈতিক অংক আরেক সময়ের সঙ্গে মিলেও না। এজন্য এবার ভালো কিছুও হতে পারে। তবে আমার কাছে মনে হয়, জামাত-বিএনপির দূরত্ব বা নৈকট্য অনেক কিছু নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের শেষে নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতির উপর। ওই সময় আওয়ামী লীগ কোন পর্যায়ে থাকে, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্কের ধরনটা কেমন থাকে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। বিএনপি জামাত এ দুটি দল যদি তাদের নিজ নিজ ভোটের কারণে বেশ কিছু আসনে ভোট বিভক্তি এবং আওয়ামী লীগের নির্দিষ্ট ও অবিভক্ত ভোট ব্যাংক সম্পর্কে সচেতন না থাকে তাহলে ভুল হবে। আল্লাহ তায়ালা দেশের জন্য কল্যাণের ফয়সালা করুন।