দুটিই ক্যামেলিয়া সিনেনসিসগাছের পাতা থেকে আসে। প্রক্রিয়াজাতকরণের পার্থক্যের কারণে নাম বদলে যায়। গ্রিন টি ও রং চা—দুটিই শরীরের জন্য উপকারী। দুটির মধ্যে মূল পার্থক্য রং চা অক্সিডাইজ করা হয়, আর গ্রিন টি হয় না।
রং চা চার ধাপের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ফলে পাতাগুলো হয় গাঢ় বাদামি। যে কারণে এর স্বাদ হয় তীব্র। সব ধরনের চায়ের মধ্যে এ চায়েই সবচেয়ে বেশি ক্যাফেইন থাকে। ফলে চটজলদি এনার্জি মেলে।
শারীরিক ফিটনেস ঠিক রাখতে গ্রিন টি সহায়তা করে
অপর দিকে গ্রিন টি প্রক্রিয়াজাতে অর্গানাইজেশন হয় না, ফলে এটি সবুজ থাকে। পাতা তোলার পর চুলার হালকা তাপে শুকানো হয়। অ্যান্টি–অক্সিডেশনে ভরপুর এ চা। তাই গ্রিন টি পানে অনেকভাবে উপকৃত হওয়া যায়।
প্রায় একই রকম হলেও চা দুটির গুণাগুণে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যেমন
অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের মাত্রা
রং চায়ের চেয়ে গ্রিন টিতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের উপস্থিতি বেশি। গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটাচিন নামের উপাদান ক্যানসারের কোষের জিনের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে।
ক্যাফেইনের মাত্রা
গ্রিন টির তুলনায় রং চায়ে ক্যাফেইন মাত্রা কিছুটা বেশি। তাই ঘুম ভাব, ক্লান্তি দূর করে কাজ শুরু করার জন্য রং চা–ই ভালো।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
গ্রিন টিতে আছে ক্যাটাচিন নামের উপাদান। যে কারণে ক্ষুধা অনুভব হয় কম। ফলে ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিবিদেরা গ্রিন টি খাওয়ার পরামর্শ দেন।
হৃদ্যন্ত্রের উপকারিতা
গ্রিন টি রক্তনালির চাপ হ্রাস করে হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রং চায়ে একাধিক পলিফেলোনিক যৌগ থাকায় হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ও টিজির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি
এই দুই ধরনের চা–ই মস্তিষ্কের সচলতা ও বিপাক ঠিক রাখতে কাজ করে। তবে এদিকে গ্রিন টি একটু এগিয়ে। শরীর ঠান্ডা করার পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তি দেয় এই চা। এতে থাকা এল থিয়েনিন উপাদান পারকিনসন ও আলঝেইমারের মতো সমস্যাগুলো হওয়ার আশঙ্কা কমায়।
প্রদাহজনিত প্রতিরোধ
গ্রিন টিতে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে বলে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ থেকে বাঁচায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে।
মুখের দুর্গন্ধ
গ্রিন টির পলিফেনলস যৌগ ব্যাকটেরিয়ানাশক হিসেবে কাজ করে। সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে। ফলে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে গ্রিন টি।
দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য
গ্রিন টি ও রং চা—দুটিতেই পর্যাপ্ত ফ্লোরাইড পাওয়া যায়। তাই দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
তাই দেখা যাচ্ছে উভয় চা–ই উপকারী। গন্ধ, স্বাদ ও প্রয়োজনীয়তা অনুসারে এখন আপনিই বেছে নিন, কোনটা পান করবেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন