Image description
সজীব ওয়াজেদ জয় কি ফেঁসে গেলেন?
কথিত কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়-এর আমেরিকায় থাকা সম্পদ জব্দ এবং বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি তাঁর মা শেখ হাসিনার মুখ থেকেই এসেছে। ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি সম্পদ জব্দ এবং বাজেয়াপ্তের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা আমেরিকায় সফরে থাকাকালীন অবস্থায়ই বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দেশটির ভিসানীতি কার্যকর করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। এই ভিসানীতির আওতায় কতজনের আমেরিকা যাওয়ার পথ আপাতত বন্ধ হয়েছে সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। ভিসানীতির আওতাভুক্তদের আমেরিকায় থাকা সম্পত্তিও বাজেয়াপ্তের আওতায় আসবে। এনিয়ে ফ্যাসিবাদের সহযোগী সরকারি আমলা, পুলিশ-র‌্যাবের কর্তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে বলে জানা গেছে। তবে, সজীব ওয়াজেদ জয় যে ফেঁসে গেছেন সেটা তাঁর মা’র মুখ থেকেই প্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশের আওয়ামীপন্থী পত্রিকা গুলো শেখ হাসিনার এই উক্তি দিয়েই শিরোনাম করেছে। যেমন, ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামীপন্থী দৈনিক যুগান্তরের শিরোনাম ছিল-‘ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে করবে, তাতে কিছু যায় আসে না-প্রধানমন্ত্রী’। আরো কয়েকটি আওয়ামী পত্রিকা এই শিরোনাম করেছে। বাংলাদেশের টাকা লুটপাট করে আমেরিকায় সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পদের পাহাড় গড়ার খবর এতদিন ছিল মানুষের মুখে মুখে। এখন তাঁর মা নিজেই বললেন, আমেরিকায় বিয়ে করেছে, স্ত্রী সন্তান রয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়িঘর ও সম্পত্তি রয়েছে। কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয় কি ধরনের ব্যবসা করেন সেটা কেউ এখনো জানে না। নিজেও কোনদিন ঘোষণা দেননি কোন ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত তিনি। তবে বিদ্যুৎ খাত, গ্যাস ও টেলিকমিউনিকেশন থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শেখ হাসিনার এই তনয় এটা মুখে মুখে প্রচারিত ছিল এতদিন। বাংলাদেশ থেকে হাতিয়ে নেওয়া এই টাকা পাচার করেছেন আমেরিকায়। তাঁর মা এখন বলছেন, আমেরিকা সম্পদ জব্দ করে করুক। আমাদের তো বাংলাদেশ রয়েছে। বাংলাদেশটাকে তারা তাদের বাপের তালুক মনে করেন। দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করবেন। আবার সেই পাচার করা টাকা জব্দ হলে বা বাজেয়াপ্ত হলে বাংলাদেশ রয়েছে বলে স্বস্তির নি:শ্বাস নিবেন! সজিব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনার পাচার করা ৩০০ মিলিয়ন নিয়ে একটি তদন্ত আমেরিকায় চলছিল দীর্ঘদিন থেকে। এমন একটি তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। এক হিসাবেই ৩০০ মিলিয়ন। এরকম আরো বহু ঘটনা আমেরিকানরা অনুসন্ধান করে পেয়েছে এমন খবরও রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই আমেরিকা সজীব ওয়াজেদ জয়-এর মানিলন্ডারিং নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অনুসন্ধান জোরদার হওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে দীর্ঘদিন থেকে এই কম্পিউটার বিজ্ঞানী একরকম লাপাত্তা। এনিয়ে গত ৬ জুন আমার দেশ, “লাপাত্তা সজীব ওয়াজেদ জয়” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এই প্রতিবেদনেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্পদ অনুসন্ধানের কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। চলতি বছরের শুরু থেকেই সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রকাশ্যে আর তেমন দেখা যাচ্ছিল না। ইতোমধ্যে তাঁর মা দুই দফা আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। এমন কি গত দুই সপ্তাহ আগে ইন্ডিয়া সফরেও কন্যা পুতুল এবং বোন রেহানাকে সঙ্গে দেখা গেছে। কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয়-এর দেখা মিলেনি। দুই সপ্তাহ আগে শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় চন্দন নন্দি নামে দেশটির একজন সাংবাদিক নর্থইস্ট নিউজে সজীব ওয়াজেদ জয়ের টাকা পাচার নিয়ে একটি সংবাদ লিখেছেন। বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করে পালিয়ে যাওয়া ব্যাংকার পিকে হালদারের জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে এই সংবাদটি প্রকাশ করা হয়। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভারতের গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ার পর পিকে হালদার যে জবানবন্দি দিয়েছেন সেখানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম উঠে এসেছে (পত্রিকাটির লিঙ্ক- [url href=https://nenews.in/politics/tk-1500-cr-kickback-to-sheikh-hasinas-son-in-2014-bdesh-banker-told-ed-in-may-2022/2428/]click here[/url] এভাবেই সজীব ওয়াজেদ জয়, বিদ্যুৎ-গ্যাস এবং টেলিকমিউনিকেশন থেকে শুরু করে বড় খাত গুলো থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজারো কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন। তাঁর মা শেখ হাসিনার মুখে প্রকাশ হওয়া তথ্য অনুযায়ী এই টাকার কত অংশ তিনি আমেরিকায় পাচার করেছেন সেটা স্পষ্ট নয়। আমেরিকা ছাড়াও ভারতসহ আরো বিভিন্ন দেশে তাঁর সম্পদ রয়েছে বলে শোনা যায়।