পরকীয়ার দায়ে অভিযুক্ত ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর রিমান্ডের শেষদিন আজ। বুধবার দুপুর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মিতুকে তিন দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেন চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার এসআই মোহাম্মদ আবদুল কাদের। তিনি এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় এসআই আবদুল কাদের বলেন, দু’দফা জিজ্ঞাসাবাদে মিতু ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার না করলেও শুক্রবার তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। এর আগে দু’দফায় মিতু শুধুমাত্র বন্ধুত্ব থাকার কথা স্বীকার করেন।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে আকাশের আত্মহত্যার পেছনে কারণ কি জানতে চাইলে মিতু বলেন- আকাশ সন্দেহবসত আমার ওপর নির্যাতন করত। আত্মহত্যার আগে ওই রাতে আকাশ শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। এ কারণে মিতু তার সঙ্গে আর থাকবে না বলে বাবার সঙ্গে চলে যায়।
পরে নারী নির্যাতন মামলায় ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে আকাশ আত্মহত্যা করে বলে দাবি মিতুর।
মিতু দাবি করেন- ওই রাতে আকাশ মারধর ও ভয় দেখিয়ে মোবাইলে ভারতীয় নাগরিক প্যাটেলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার বক্তব্য রেকর্ড করে। এমনকি তার পাসপোর্ট ও গ্রিনকার্ড নিয়ে ফেলার দাবি করে।
পরপুরুষের সঙ্গে অশ্লীল ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে মিতু বলেন, এগুলো সব নকল ছবি। আসল নয়। ফটোশপে এডিটিং করে এসব ছবি তৈরি করা হয়েছে।
মিতু জিজ্ঞাসাবাদে বলেন- ২০১৬ সালে ডা. আকাশের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর থেকে প্রতিটা মুহূর্তে তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখত আকাশ। যেখানে সন্দেহ বা বিশ্বাস থাকে না, সেখানে শান্তি থাকে না। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদে এক চিকিৎসক বন্ধু ও ভারতীয় নাগরিক উত্তম প্যাটেলের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
অবশ্যই এর আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মিতুর বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা লেখেন- ২০১৬ সালে আকাশের সঙ্গে মিতু আপুর বিয়ে হলেও তার সঙ্গে নয় বছরের সম্পর্ক। এতদিনের সম্পর্ক ফেসবুকে কয়েকলাইন স্ট্যাটাস লিখে কি শেষ করা যায়। আর ছবি দেখে উপরে যা দেখা যায় তা কি সবসময় সত্যি হয়। এ যুগে ফটোশপে এডিটিং করে এর চেয়ে খারাপ ছবি বানানো যায়।
এসআই আবদুল কাদের বলেন- এ মামলার অন্য আসামি মিতুর বন্ধু ডা. মাহবুব আলম ও পিতা আনিসুল হক চৌধুরী দেশে আছেন। তারা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মিতুর মা, বোন ও অন্য এক বন্ধু দেশের বাইরে থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুশ বাশার এ প্রসঙ্গে বলেন, তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে রিমান্ডে তিন দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আদালতের গাইডলাইনের আলোকেই নারী কনস্টেবল রেখে মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তদন্ত কর্মকর্তা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন