বিপজ্জনক ব্যাক্তি ও সংগঠন নিয়ে ফেসবুকের করা একটি গোপন তালিকা ফাঁস হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অলাভজনক সংবাদ সংস্থা দ্য ইন্টারসেপ্ট মঙ্গলবার ওই তালিকা প্রকাশ করেছে।
তালিকায় অপরাধী, বিদ্বেষী গোষ্ঠী এবং সন্ত্রাসী সংগঠনসহ ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং গোষ্ঠীর নাম রয়েছে।
এ তালিকায় বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত বা দেশে সক্রিয় ৬টি জঙ্গি সংগঠন এবং এক ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে।
ফেসবুকের ‘ডেঞ্জারাস ইন্ডিভিজুয়ালস অ্যান্ড অর্গানাইজেশন্স’ পলিসির অধীনেই গোপন এই কালো তালিকার একটি সংস্করণ প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্টারসেপ্ট।
তালিকায় থাকা বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত বা বাংলাদেশে সক্রিয় ৬টি জঙ্গি সংগঠন হলো- আল মুরসালাত মিডিয়া, ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশ, হরকাতুল-জিহাদ-ই ইসলামী বাংলাদেশ, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও সাহাম-আল-হিন্দ মিডিয়া।
জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তরিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকেও ওই তালিকায় রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির নামসহ সম্পূর্ণ তালিকাটি প্রকাশ করেছে ইন্টারসেপ্ট। এ তালিকাভুক্ত সংগঠন ও ব্যক্তিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্য কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে এই তালিকায় থাকা সংগঠন বা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সেগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে ফেসবুক।
তালিকার অর্ধেকের বেশি কথিত বিদেশী সন্ত্রাসীদের নিয়ে তৈরি, যারা প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যীয়, দক্ষিণ এশীয় এবং মুসলিম। বিশেষজ্ঞরা দ্য ইন্টারসেপ্টকে বলেন যে, তালিকা এবং ফেসবুকের নীতি অনুসারে কোম্পানিটি প্রান্তিক গোষ্ঠীর উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে।
ফেসবুকের একটি তিন স্তরের প্রতিরক্ষা সিস্টেম রয়েছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, বিদ্বেষী গোষ্ঠী এবং অপরাধী সংগঠনগুলোকে প্রথম স্তরের বিধি-নিষেধের মধ্যে রাখা হয়। তৃতীয় বা সর্বনিম্ন স্তরের অধীনে সামরিকীকৃত সামাজিক আন্দোলনকে রাখা হয়। বেশিরভাগ ডানপন্থী আমেরিকান সরকার বিরোধী শেতাঙ্গ মিলিশিয়াদের এই স্তরের বিধি-নিষেধের আওতায় রাখা হয়।
সন্ত্রাস দমন ও বিপজ্জনক সংগঠনের জন্য ফেসবুকের পলিসি ডিরেক্টর ব্রায়ান ফিশম্যান এক সিরিজ টুইট বার্তায় বলেছেন যে, দ্য ইন্টারসেপ্ট প্রকাশিত তালিকাটিই চূড়ান্ত নয়। তালিকা ক্রমাগত আপডেট করা হয়, নতুন নতুন নাম যুক্ত করা হয়।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিপজ্জনক সংগঠনের সংজ্ঞা দেওয়া এবং চিহ্নিত করা অত্যন্ত কঠিন। এ ব্যাপারে সর্বসম্মত কোন একক সংজ্ঞা নেই’। ফিশম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, ইসলামিক স্টেট গ্রুপ এবং আল-কায়েদার মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর শত শত আলাদা শাখা রয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলোকে ‘প্রয়োগের সুবিধার্থে’ আলাদা সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম স্তরের তালিকায় ইউরোপ-আমেরিকার ২৫০টিরও বেশি শেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী বা সাদা মানুষদের আধিপত্যবাদী সংগঠনও রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন