Image description
ভারত থেকে এলো ডিম, ৩২ টাকা হালি
দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত দুই দিনে ভারত থেকে চার লাখ ৩৮ হাজার ৬৮০টি মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। বন্দরে শুল্কসহ প্রতি পিচের ডিমের দাম পড়েছে সাড়ে ৭ টাকার মতো। এর সঙ্গে গুদাম ভাড়া, এলসি খরচ, ট্রাক ভাড়া যোগ করলে ৮ টাকার মতো আমদানি খরচ পড়েছে। রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বন্দর থেকে একটি চালানে ২ লাখ ৩১ হাজার ৪৮০টি ডিম খালাস নিয়েছেন আমদানিকারকরা। অন্য চালানটি আগামীকাল সোমবার (৭ অক্টোবর) ছাড় হবে বলে জানা গেছে। এর আগে শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ১৫ মেট্রিক টন ও রোববার বিকেলে ১৫ মেট্রিক টন মিলিয়ে দুটি চালানে মোট ৩০ টন ডিম আমদানি হয়। জানা যায়, ডিমের আমদানিকারক, ঢাকার ‘হাইড্রো ল্যান্ড সল্যুশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ডিমগুলো কেনা হয়েছে ভারতের ‘শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ ভাণ্ডার' নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। বন্দর থেকে চালানটি ছাড় করার জন্য বেনাপোল শুল্কভবনে কাগজপত্র দাখিল করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ। বন্দর, কাস্টমস ও আমদানিকারক সূত্র জানায়, দেশে ডিমের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলার মধ্যে সরকার ৫০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। চলতি বছর এটি আমদানি করা ডিমের দ্বিতীয় চালান। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর দুই লাখ ৩১ হাজার ৮৪০টি ডিম আমদানি করা হয়। গত বছরের শেষেও একবার ৬১ হাজার ডিমের একটি চালান আসে। সে সময় ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি ছিল। তবে দেশেই দাম কমে আসায় আর কোনো চালান আসেনি। এ দিকে গতবার দেশে ডিম আসার পর বাজার নিম্নমুখী হলেও এবার এমনটি হয়নি, বরং গত এক মাসে ডিমের দাম উল্টো বেড়েই চলেছে। বর্তমানে প্রতি পিচ ডিম ১৪ থেকে ১৫ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমসের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, পরীক্ষণ শেষ করে ডিমগুলো বন্দর থেকে একটি চালান খালাস দেয়া হয়েছে। এ দিকে বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘আমদানিকারকের কাগজপত্র পেয়েছি। ভারতীয় সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। অন্য চালানটি কাগজপত্র দাখিলের পর খালাস হবে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার ওথেলো চৌধুরী বলেন, ডিম আমদানির ওপর কাস্টমসের ৩৩ শতাংশ ভ্যাট-ট্যাক্স রয়েছে। সব আনুষ্ঠানিকতা ও পরীক্ষণের পর খালাস দেয়া হয়েছে। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বরও একই দরে ডিম এসেছিল দেশে। সেই ডিম পাইকারিতে ১০ টাকা ৪০ পয়সা দরে বিক্রি হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘হাইড্রো ল্যান্ড সল্যুশন’ এর স্বত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ। দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা চার কোটির মত। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ডিমের দাম বৃদ্ধিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা বেঁধে দিয়েও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। পরে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। সে সময় প্রতিটি ডিমের আমদানি খরচ পড়ে ৭ টাকার কিছু বেশি, যা দেশের বাজার দরের চেয়ে অনেকটাই কম ছিল। তবে যে পরিমাণ ডিম আমদানির অনুমতি ছিল, নানান কারণে সে পরিমাণ ডিম দেশে ঢোকেনি।