ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে অবিলম্বে শর্তহীন ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এই প্রস্তাবে গাজার জিম্মিদের তাৎক্ষণিক মুক্তির দাবিও করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে ১৫৮ ভোটে এই প্রস্তাব পাস হয়। এবার যুদ্ধবিরতির আরও জোরালো দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর আগে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির 'আহ্বান' জানানো হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে 'দাবি' হিসেবে উপস্থাপিত হয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলো মানতে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এগুলোর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এসব প্রস্তাবে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ আরও সাতটি দেশ এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। ভোটদানে বিরত থেকেছে ১৩টি দেশ।
ওই বৈঠকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-কে সমর্থন জানিয়ে আরেকটি প্রস্তাব ১৫৯ ভোটে পাস হয়েছে। এতে ইসরায়েলের নতুন একটি আইনের সমালোচনা করা হয়। ওই আইন অনুযায়ী, জানুয়ারির শেষ থেকে ইসরায়েলে ইউএনআরডব্লিউএ-র কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে। গৃহীত প্রস্তাবে ইউএনআরডব্লিউএ-র কার্যক্রমে সহযোগিতা ও সংস্থাটিকে বাধাহীন কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এই প্রস্তাবেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ সাতটি দেশ বিরোধিতা করেছে আর ভোটদানে বিরত থেকেছে ১১ সদস্য।
এ বিষয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন উপ-প্রতিনিধি রবার্ট উড দাবি করেছেন, এই প্রস্তাবগুলোর মাধ্যমে বিশ্বকে যে বার্তা দেওয়া হয়, তা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই দুই প্রস্তাবেই বড় সমস্যা রয়েছে।
তার অভিযোগ, একটি প্রস্তাব হামাসকে পুরস্কৃত করে ও জিম্মিদের মুক্তির প্রয়োজনীয়তাকে ছোট করে দেখায়। আর অন্যটি ইসরায়েলকে নিন্দা জানিয়েছে ঠিকই, কিন্তু মানবিক সহায়তা বাড়ানোর কোনও বাস্তবসম্মত পথ বাতলে দেয়নি।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন অভিযোগ করেছেন, জাতিসংঘের আচরণ দেখলে মনে হয়, ইসরায়েলকে অপদস্থ করতে তারা যেন অঙ্গীকারবদ্ধ। অপরদিকে, ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি রিয়াদ মনসুর গাজাকে 'মানবজাতির জন্য এক উন্মুক্ত, বেদনাদায়ক ক্ষত' বলে উল্লেখ করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন