মুসলিমদের কোনো ভোটাধিকার থাকা উচিত নয়- এমনই মন্তব্য করেছেন ভারতের কর্ণাটকের বিশ্ব ভোক্কালিগা মহাসমস্থান মঠের সন্ন্যাসী কুমার চন্দ্রশেখরনাথ। তবে এই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই সন্ন্যাসী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, এমন আইন আনা দরকার, যার মাধ্যমে মুসলিম বা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া যায়!’
কর্ণাটক ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষ থেকে ইস্যু করা একটি নোটিশের বিরোধিতায় গত মঙ্গলবার একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ। সেই কর্মসূচি চলাকালীনই মুসলিমদের ভোটাধিকার নিয়ে ওই মন্তব্য করেন ওই সন্ন্যাসি।
এই কর্মসূচির মঞ্চ থেকে বক্তৃতা করার সময় কৃষকদের জমি ও রুটি-রুজি রক্ষা করার পক্ষে বক্তব্য দেন ওই সন্ন্যাসি। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি বলেন, ‘মুসলমানদের ভোটদানের অধিকার থাকা উচিত নয়।’
একইসাথে, ওয়াকফ বোর্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অন্য কারো জমি কেড়ে নেয়া মূলত ধর্মবিরুদ্ধ আচরণ।
সেদিন কী বলেছিলেন ওই সন্ন্যাসী?
সন্ন্যাসী কুমার চন্দ্রশেখরনাথ বলেন, ‘কৃষকদের প্রতি যে অন্যায় করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সকলের সরব হওয়া উচিত। বলা হয়, ওয়াকফ বোর্ড নাকি যে কারো জমি কেড়ে নিতে পারে! এটা একটা বিরাট অবিচার। কেউ যদি অন্য কারো জমি কেড়ে নেয়, তাহলে সেটা ধর্মবিরুদ্ধ আচরণ। তাই সকলেরই কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় সরব হওয়া উচিত। যাতে ওই জমি কৃষকদেরই থাকে।’
এই মন্তব্য করার সময়ই মুসলিমদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া উচিত বলে দাবি করেন চন্দ্রশেখরনাথ। যদিও এর ঠিক পরদিন তিনি তার এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান। বলেন, ‘মুখ ফসকে’ তিনি ওই মন্তব্য করে ফেলেছেন।
সেদিন তিনি আরো বলেন, মুসলমানরাও ভারতের নাগরিক। তাই বাকি নাগরিকদের মতো তাদেরও ভোট দেয়ার অধিকার রয়েছে।
এদিকে, ওই ঘটনায় সন্ন্যাসী চন্দ্রশেখরনাথের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হন এক সমাজকর্মী। তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। বুধবার কর্ণাটকের উপ্পরপেট থানায় এই অভিযোগ নথিভুক্ত হয়। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এ বিতর্কের মধ্যেই ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনা করার জন্য যে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার কার্যকালের মেয়াদ ২০২৫ সালের বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস