Image description
লেবাননে বিপাকে পড়া বাংলাদেশিদের বড় অংশই নারী-শিশু
‘যুদ্ধকবলিত’ লেবাননের আকাশপথে চলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় সরাসরি রাজধানী বৈরুত থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পারবে না দেশটিতে অবস্থানরত কর্মীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশে ফিরতে চাওয়া কয়েক হাজার বাংলাদেশি। এঁদের বড় অংশই নারী ও শিশু। লেবাননে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, বেশির ভাগ আশ্রয়কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি রয়েছে নারী ও শিশু। তারা দ্রুত দেশে ফিরতে চায়। তাদের জন্য এখানে অবস্থান করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর এই ফিরতে চাওয়া কর্মীদের তালিকা প্রণয়নের কাজ করছে দেশটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস। ফিরতে আগ্রহী কর্মীরা আজ শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। এ বিষয়ে বৈরুতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে একটি যাচাই ফরম দিয়েছি। ফরম পূরণের কার্যক্রম আজকে (গত বুধবার) থেকে শুরু হয়েছে। এর আগে মৌখিকভাবে প্রায় হাজারখানেক কর্মী আমাদের দেশে ফেরত যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে এই সংখ্যা এখন বাড়বে। ১২ তারিখে বলা যাবে, কতজন কর্মী দেশে ফেরত যেতে চান।’ তবে এই আবেদনই চূড়ান্ত আবেদন নয় বলে ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভীর খান। ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক একটি ফরম বিতরণ করছি। এটিই দেশে ফেরার চূড়ান্ত ফরম নয়। এই ফরমের মাধ্যমে আমরা একটি সংখ্যা যাচাই করব। সেই সংখ্যা আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইওএমকে জানাব। এই সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে তারা আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে যে আমরা কতজন প্রবাসীকে দেশে ফেরত পাঠাতে পারব। তখন আমরা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করব।’ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কর্মীরা লেবাননে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যের পর যেন কর্মীদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে দুই বছরের ছেলে আব্রাহামকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন রেশমা। তিনি বলেন, ‘আমার অসহায় লাগছে। ছেলেটাকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অপেক্ষা করছি। কবে দেশে যেতে পারব, সেই আশায় আছি।’ দেশে ফেরার আকুতি জানান আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা আরেক নারী হাসি আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও আমরা রাস্তায় বের হয়ে এসেছি। মালিক কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি। মালিক কোনো টাকা-পয়সাও দেয়নি। আমরা টাকা ছাড়াই যার যার জীবন নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে এসেছি।’ দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তি গত বুধবার বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লেবাননে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত যেতে আগ্রহী প্রবাসীদের প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দূতাবাসের ফেসবুকে প্রদত্ত নির্ধারিত ফরম ডাউন লোড করে বা হার্ডকপি সংগ্রহ করে আগামী ১১ অক্টোবর রাত ১২টার মধ্যে পূরণকৃত ফরম জমা দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রবাসী ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠনের সহায়তায় পরিচালিত বিভিন্ন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো অথবা বৈরুতের দাওরায় ইসমাঈলের দোকান থেকে ফরম সংগ্রহ এবং সেখানে জমা দেওয়া যাবে।’