সরকারের নানা উদ্যোগের পরও বাজারে আলু, পিঁয়াজের দাম কমছে না। কয়েক সপ্তাহে ধরে ৫ টাকা করে বেড়ে এখন খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া নতুন আলু ও পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে।
যদিও বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে সরকার। এ ছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন জেলা পর্যায়ে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি বাজার মনিটর করছে। এর পরেও আলুর দাম বাড়ছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মতে, সব ধরনের খরচ মিলে এক কেজি আলুর সর্বোচ্চ দাম হতে পারে ৪৬ টাকা। আর সব ধরনের খরচ মিলে এক কেজি দেশি পিঁয়াজ সর্বোচ্চ দাম হতে পারে ৬৫ টাকা ৪০ পয়সা। এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেট। দাম বাড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। বাজার করতে গিয়ে তাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে এনবিআর আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে আলু আমদানিতে যে ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আছে, তা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আলু আমদানিতে এ শুল্ক সুবিধা বহাল থাকবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। সরকারের নানা উদ্যোগের পর আলুর দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ২৮ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, ভোক্তা পর্যায়ে আলুর যৌক্তিক দাম ৪৬ টাকা। তাদের মতে, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। শুল্ক কমানোর আগে এ আলুর বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আর গত বছরের এ সময় আলুর দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সরকারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের সর্বশেষ তথ্যমতে বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। আর গত বছরের এ সময় আলুর দাম ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়।
বাজারে নতুন পিঁয়াজ এলেও এখনো পুরনো দেশি পিঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পিঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের সর্বশেষ তথ্যমতে বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১৩০ টাকায়। আমদানি করা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজের যৌক্তিক দাম হলো ৬৫ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। এ ছাড়া আমদানি করা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকায়।
বাজারে বেড়েছে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। তবে সে তুলনায় দামে প্রভাব পড়েনি। রাজধানীর বিভিন্ন সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গোল বেগুন ৭০ থেকে ১০০, লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০, মানভেদে শিম ৫০ থেকে ৮০, পটোল ৫০ থেকে ৬০, ঢ্যাঁড়শ ৬০ থেকে ৭০, উচ্ছে (ছোট জাত) ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি আকার ভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউয়ের পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। মান ভেদে কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিম ও মুরগির দাম। আগের মতোই ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ এবং সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন