Image description
ব্যবসায়ীদের ভারতীয় বন্দর ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করবে সরকার
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের রপ্তানি-আমদানি বাণিজ্য করার জন্য ভারতীয় বন্দর ব্যবহার করতে নিরুসাহিত করবে বাংলাদেশ সরকার। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভারতীয় বন্দর থেকে বিশেষ কোনো সুবিধা আসছে না। এছাড়া খুব শিগগিরই স্থানীয় গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে জাহাজ চলাচল এখন সময়ের ব্যাপার। ২০২০ সালে এ প্রকল্প চালু হয়। গভীর সমুদ্র বন্দর ও সংযোগ সড়কসহ এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে ১২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে জাপান থেকে নেওয়া হয়। আর বাংলাদেশ সরকার ২ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ২১৩ কোটি টাকার যোগান দিচ্ছে। ২০২৬ সাল নাগাদ এ বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, কলম্বো, সিঙ্গাপুর ও কুয়ালাপুরের দক্ষিণ পশ্চিমে পোর্ট ক্লাং-এর আঞ্চলিক ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরের তুলনায় ভারতীয় বন্দরগুলো বাংলাদেশকে কোনো বিশেষ সুবিধা দিতে পারবে না। এই রুটে শিপিং সেবা চালু করার জন্য মাদার ভেসেল অপারেটরদের দ্বারা চট্টগ্রাম এবং ভারতীয় বন্দরের মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফিডার ভেসেল মোতায়েন প্রয়োজন হবে। তবে মাদার ভেসেল অপারেটররা ব্যবসার সম্ভাবনা বিবেচনা করে এই রুটে জাহাজ মোতায়়েন করতে রাজি হবে কি-না তা স্পষ্ট নয়।নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এস এম মোস্তফা কামাল জুলাই মাসের প্রথম দিকে চেন্নাই, কৃষ্ণপত্তনম, বিশাখাপত্তনম, কলকাতা এবং হলদিয়া বন্দর পরিদর্শনের জন্য ১৩ সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইন্দো-বাংলা শিপিং সেক্রেটারি পর্যায়ে বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের ফলো-আপ হিসেবে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলটি ভারতীয় বন্দর পরিদর্শন করে। পরিচিতি ভ্রমণের লক্ষ্য ছিল ভারতীয় বন্দরে প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা, বাণিজ্যিক কার্যকারিতা এবং অবকাঠামোগত সুবিধাগুলো পর্যবেক্ষণ করা এবং বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বহি-বাণিজ্যের জন্য বন্দরগুলো ব্যবহার করলে তারা কী কী অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা। এ বিষয়ে যুগ্ম-সচিব এস এম মোস্তফা কামাল দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, পরিদর্শনকালে ভারতীয় বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশের রপ্তানি-আমদানি ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কী কী অতিরিক্ত সুবিধা পেতে পারে সেটি জানাতে সেখানকার কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছিল। তিনি বলেন, সফরের দেড় মাস কেটে গেছে। কিন্তু ভারতীয় বন্দর কর্তৃপক্ষ আর যোগাযোগ করেনি। আমরা শিগগিরই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেব। ৩৬ বছর আগে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এমভি বাংলার জ্যোতি জাহাজ দিয়ে সমুদ্রে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জাহাজের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন সমুদ্রে কনটেইনারবাহী, কার্গো, এলপিজি, কেমিক্যাল ও অয়েলট্যাংকারবাহী জাহাজের সংখ্যা শতক পার করেছে। এ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।