Image description

দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ভারতবিরোধী মনোভাব বিদ্যমান, যা ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের ঐতিহাসিক আধিপত্যবাদী নীতিই এর মূল কারণ। বিশাল ভূখন্ডের এই দেশটি এখনও তার সম্রাজ্যবাদী মনোভাব থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে নি। এই প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি দেখা দেয়। বাংলাদেশ কেন ভারতকে সন্দেহের চোখে দেখে, তা নিয়ে সম্প্রতি ভারতে "বাংলাদেশ: এইদিকে ও ওইদিকে" শিরোনামে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভারতের রাজস্থানের জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভ্যালে আয়োজিত এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন—

 
  • পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার
  • অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, লেখক ও অধ্যাপক
  • সুদীপ চক্রবর্তী, লেখক


এই আলোচনায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এবং ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েনের অন্যতম কারণ হলো শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে সন্দেহ করছে, কারণ ভারত অতীতে কেবল আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল।

লেখক সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশে রক্ষণশীলতা বেড়েছে, যা উদ্বেগজনক। তবে শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতসহ গোটা বিশ্বেই রক্ষণশীলতার উত্থান দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বর্তমান কূটনৈতিক টানাপোড়েনের জন্য ভারতও কিছু ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারত যদি চীনের প্রস্তাব দেওয়ার আগেই বাংলাদেশকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিত, তবে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হতে পারত।

সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে, তার প্রতিক্রিয়ায় ভারত যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহয়তা করেছে তবে এখন সে প্রেক্ষাপট বিবেচনা না করে নতুন করে আলোচনায় বসতে হবে। কারণ, রাজনীতিতে কৃতজ্ঞতার স্থায়িত্ব স্বল্পমেয়াদি—এই বাস্তবতাও স্বীকার করা জরুরি।

আলোচনায় অংশ নেওয়া সবাই একমত হন যে বাংলাদেশ ও ভারতকে অবশ্যই পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য যেসব কূটনৈতিক পদক্ষেপ জরুরি, তা দ্রুত গ্রহণ করা প্রয়োজন।