বই প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি যাচাইয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে সব মহলে। খোদ সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টাও বলেছেন- এটি হাস্যকর প্রস্তাব। উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, গণমাধ্যমে একটা সংবাদ ভুল- বোঝাবুঝির সৃষ্টি করছে। পুলিশের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, বই ছাপানোর আগে বাংলা একাডেমি বা পুলিশকে পড়তে দেয়া উচিত। এটা অবিশ্বাস্য ও হাস্যকর। আমাদের সরকারের নীতিমালার আশপাশেই নেই। গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটা যদি আমাকে গালাগালি করেও হয়, এতে কিছু যায় আসে না। আর বই প্রকাশ সেন্সর করবো- এটা হাস্যকর। এই ভুল বোঝাবুঝি এখানেই দূর করতে চাই। অন্তর্বর্তী সরকারের বই সেন্সরের পরিকল্পনা নেই। ওই পুলিশ কর্মকর্তা যদি বলে থাকেন, সেটা তিনি তার ব্যক্তিগত ভাবনার কথা বলেছেন। এটার সঙ্গে আমরা একমত নই।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বাংলা একাডেমির পুরস্কারের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ থাকে না। তারা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু স্বায়ত্তশাসনের সুযোগের অপব্যবহার করে ফ্যাসিবাদের দোসর ঢুকে গেছে। এটা নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে যে, কিছু কিছু মানুষ নিজেদের পছন্দের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তখন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হয় বাংলা একাডেমিকে জিজ্ঞেস করা, কী হয়েছে। মানে খতিয়ে দেখা। তিনি আরও বলেন, একাডেমির পুরস্কার কমিটির সভাতেই সিদ্ধান্ত হয় স্থগিত করার এবং কেন ঝামেলা হয়েছে, তা দেখা। সেই সিদ্ধান্ত একাডেমির মহাপরিচালক আমাকে জানালে আমি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় তা ফেসবুকে প্রকাশ করি। তার মানে, আমি সিদ্ধান্ত দিইনি।
এই পুরস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যেই ঝামেলা আছে উল্লেখ করে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, এখানে ৩০ জন ফেলো নমিনেশন দেন। এই ফেলোরা আগে যারা পুরস্কার পেয়েছেন, তারা। গত ১৬ বছরে যারা পেয়েছেন তারা এবং সদস্য তারা বিশেষ মতাদর্শের মানুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পুরস্কার কমিটি নমিনেশন খাম সভায় খুলে একঘণ্টার মধ্যে নাম ঘোষণা করবে। নমিনেশনে দুর্নীতি হয়েছে বলে যে অভিযোগ, তা উড়িয়ে দেয়া যায় না যে, তারা প্রভাবিত করেছেন।
জাতীয় কবিতা পরিষদের উদ্যোগে ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসবের শুরুর দিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম কবিতা উৎসব উদ্বোধন করেন। বক্তব্য দেন- কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রায়হান, সদস্যসচিব রেজাউদ্দিন স্টালিন প্রমুখ।