Image description
 

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সেলিম জাহাঙ্গীর (৪৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বাঙ্গড্ডা পশ্চিমবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও দু’জন নেতাকর্মী।

 
 

নিহত সেলিম জাহাঙ্গীর হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। তিনি হেসাখাল ইউপির খিলপাড়া গ্রামে আব্দুল খালেকের ছেলে। 

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া তার নেতাকর্মীদের নিয়ে কাকৈরতলা বাজারে বিএনপির মতবিনিময় সভায় যাচ্ছিলেন। বাঙ্গড্ডা বাজার এলাকায় পৌঁছালে উপজেলা বিএনপি সাবেক আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়।

 

এসময় তারা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ও হেলমেট দিয়ে জাহাঙ্গীরের মাথা আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটে পড়েন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরও দু’জন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

জানা যায়, বর্তমানে নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত। ২০০১ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে আবদুল গফুর ভূঁইয়ার সংসদ সদস্য নির্বাচন হন। পরে ২০০৮ সালে নতুন করে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া দলীয় মনোনয়ন পেয়ে পরাজিত হন। সেই সঙ্গে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

 

২০১৯ সালে মোবাশ্বের উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলে নজির আহমেদ ভূঁইয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পান। তিনি এ পদে এখনো রয়েছে। তিনজনই বর্তমানে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন। দীর্ঘদিন ধরে গফুর ভূঁইয়া, মোবাশ্বের ভূঁইয়া ও নজির আহমেদ ভূঁইয়ার মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ চলছে। তাঁরা তিনজই কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।

 

উপজেলা বিএনপির সদস্য আবু সায়েম শিপু বলেন, আমাদের পূর্বনির্ধারিত পেরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কাকৈরতলা বাজারে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া উপস্থিত থাকার কথা। মতবিনিময় সভায় নেতাকর্মীরা যেন উপস্থিত না হতে পারে তাই আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা মোবাশ্বের আলমের অনুসারীরা হামলা চালায়। এতে একজন নিহত ও ২ জন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে সাবেক এমপি আব্দুল গফুর ভূঁইয়া হাসপাতালে ছুটে যান।

এ বিষয়ে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার অনুসারী অভিযুক্ত মোবারক হোসেন, কামাল ও লিটনের মুঠো ফোনে একাধিক বার কল দিলেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনার আমি কিছুই জানি না। এ মাত্র আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে শুনেছি। খবর নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো।

সাবেক এমপি আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় আমি মর্মাহত। মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার পেটুয়া বাহিনী আমার নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে একজনকে মেরে ফেলেছে। আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। 

নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।