দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাতিল চায় না বিএনপি’। খবরে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাতিলের ব্যাপারে যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি যুক্তিসংগত মনে করছে না বিএনপি। দলটির নেতাদের মতে, মুক্তিযুদ্ধ হবে বাংলাদেশের ভিত্তি। এমন মতামত উঠে এসেছে বিএনপির ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ খসড়ায়। সমমনা দলের সঙ্গে আলোচনা ও সম্মতির পর এটা চূড়ান্ত করবে বিএনপি।
বিএনপির ঘোষণাপত্রে ন্যূনতম সময়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদে সাংবিধানিক সংস্কার করার কথা বলা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিগত দিনের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ত্যাগ এবং জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি রয়েছে খসড়ায়।
জানা গেছে, এই খসড়া সমমনা ও জোট ছাড়াও অন্যান্য দলের কাছে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগির এ বিষয়ে মতবিনিময় করা হবে। সেখানে সবার মতামত ও সম্মতিতে এটা চূড়ান্ত করা হবে। শিক্ষার্থীদের ‘জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র’ খসড়ায় বলা হয়েছে, এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেওয়া হবে। তবে বিএনপি নেতাদের অভিমত, এটা অপ্রয়োজনীয়। এটাকে ডিক্লারেশন আকারে দিতে হবে। যখন এটা নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হবে, তখন এটা ঘোষিত হয়েছে বলে গণ্য হবে। ছাত্ররা এটাকে ব্যাকডেটেড প্রক্লেমেশন আকারে দেওয়ার যে কথা বলছে, সেটার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করছেন না নেতারা। বিএনপির খসড়া ঘোষণাপত্রে গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমর্থন বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। জাতীয় নাগরিক কমিটির ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা থাকলেও, সরকারের করা খসড়ায় তা নেই। বিএনপির ঘোষণাপত্রেও খালেদা জিয়া কিংবা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কিছু নেই।
খসড়ার শেষাংশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী নিম্নোক্ত রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করছি।’
কালের কণ্ঠ
‘জাতীয় সংসদই সংবিধান সংস্কার করবে’-এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল না করে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বিদ্যমান সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কার সাধনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ন্যূনতম সময়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদ প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার করবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের ওপর মতামতে এ বিষয়টি উল্লেখ করেছে বিএনপি।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে যে খসড়া ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছে, তার ওপর পরামর্শমূলক ঘোষণাপত্র তৈরি করেছে দলটি।
বিএনপি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এই ঘোষণাপত্রকে ‘প্রোক্লেমেশন’ না বলে ‘ডিক্লারেশন’ বলে উল্লেখ করেছে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে দলটির একজন শীর্ষ নেতা বলেন, কোনো বিপ্লব সফল করার আগে ‘প্রোক্লেমেশন’ দেওয়া হয়। বিপ্লব হওয়ার পর দিলে তাকে ‘ডিক্লারেশন’ বলতে হবে। বিএনপি এই ঘোষণাপত্র ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে গণ্য করার পক্ষে নয়।
বিএনপির তৈরি করা মতামতের খসড়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এতে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা সরকারের পতন পর্যন্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পরিক্রমা তুলে ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী শাসন যাতে আর ফিরে না আসতে পারে, সে ব্যাপারে দৃঢ় অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে।
এতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের গুম-খুন থেকে শুরু করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী সব অপরাধের বিচার চায় বিএনপি।
সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া খসড়া ঘোষণাপত্রের মূল চেতনা অক্ষুণ্ন রেখে নানা সংযোজন ও বিয়োজন করেছে বিএনপি।
এই মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা উচিত বলে মনে করে দলটি। মতামত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া ঘোষণাপত্রে বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের কথা বলা হলেও বিএনপি তা পাশ কাটিয়ে পরবর্তী সংসদে তা সংস্কারের কথা বলেছে।
সরকারের খসড়া ঘোষণাপত্রে সংবিধান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের সংবিধান স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ ও অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ মানুষের মতামত ও প্রত্যাশাকে প্রতিফলন করতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যর্থ করার পথ সুগম করেছিল। এ ছাড়া বিগত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন করে বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। তাই আমরা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে লালন করার দলিল ১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘রোজার পণ্যের বিপুল আমদানি’। খবরে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে নিত্যপণ্যের আমদানি দ্রুত বাড়ছে। গতকাল শুক্রবার শেষ হওয়া জানুয়ারি মাসে বিপুল পরিমাণ নিত্যপণ্য আমদানি হয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রে পুরো রোজার মাসের চাহিদার সমান। কিছু ক্ষেত্রে আমদানি রোজার চাহিদাকে ছাড়িয়ে গেছে।
আমদানিকারকেরা বলছেন, ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আরও নিত্যপণ্য আমদানি হবে। ফলে সরবরাহ বাড়বে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বড় কয়েকটি শিল্প গ্রুপের আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, পুরোনো আমদানিকারকদের কেউ কেউ নতুন করে সক্রিয় হয়েছেন। নতুন নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিত্যপণ্য আমদানিতে যুক্ত হয়েছে। ফলে কোনো সমস্যা হয়নি।
বাজারে দাম কমবে কি না, তা নির্ভর করছে পণ্যের আমদানি মূল্যের ওপর। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূল্য যাতে বেড়ে না যায়, সে জন্য নিত্যপণ্যের সরবরাহব্যবস্থায় নিয়মিত তদারকি দরকার।
রোজার পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি ও দাম নিয়ে জানতে চাইলে এ খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান টি কে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, জানুয়ারিতে আমদানি বেড়েছে। পাইপলাইনে (আমদানি পর্যায়ে) থাকা পণ্য ফেব্রুয়ারি মাসে আসবে, অর্থাৎ বাজারে সরবরাহে ঘাটতি হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারও মোটামুটি স্থিতিশীল। তাতে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ দেখছি না।’
যুগান্তর
রাজউকের প্লট বরাদ্দে নৈরাজ্য নিয়ে দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘তালিকায় হাসিনার পিওন ড্রাইভার’। প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু মন্ত্রী, এমপি ও আওয়ামী আদর্শের রাজনীতিক নন। সরকারের বিশেষ কোটায় রাজউকের প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তদের তালিকায় আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়িচালক (ড্রাইভার) এবং আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের অফিস সহকারীরাও (পিওন)। এছাড়া হাসিনা সরকার বিশেষ আস্থাভাজন বিবেচনায় বিচারপতি, আমলাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিকে ইচ্ছামতো প্লট বরাদ্দ দেয়। রাষ্ট্রীয় বিশেষ অবদানের কোটায় প্লট দেওয়া হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায় ‘রাজনৈতিক আনুগত্যের বিবেচনা’।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে রাজউকের অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস রুলসের ১৩/এ উপবিধির (অসামান্য অবদান) অধীনে এসব প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে বলা হয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ-সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সমাজকর্মী, সরকারি চাকরিজীবী এবং রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিরা অসামান্য অবদান কোটায় প্লটের আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া রাষ্ট্র বা সরকার যদি কাউকে বিশেষ অবদান রেখেছেন বলে নির্বাচন করে, তাহলে তিনি প্লট পাবেন।
তবে আওয়ামী লীগ সরকারের আগেও ১৯৬৯ সাল থেকে বৈষম্যমূলক হিসাবে বিবেচিত ১৩ ধারা বিদ্যমান ছিল। ১৯৮৬ সালে এক দফা সংশোধনের পর এটি ১৩/এ ধারা এবং সর্বশেষ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার ২৫ আগস্ট সংশোধিত গেজেটে ১৩এ (১) এ, বি, সি বিধি প্রণয়ন করে। এর আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় বহু প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা নিয়ে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। বর্তমান সরকার এর সবই তদন্তের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘ছাত্রদের নতুন দল নেতৃত্বে থাকছেন নাহিদ!’। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মাসের প্রথমার্ধেই আসছে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের রাজনৈতিক দল। দলের নাম এখনো চূড়ান্ত না হলেও, দলের নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এ রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। সদস্যসচিব এবং অন্যান্য শীর্ষ পদে কারা থাকবেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে সদস্যসচিবসহ শীর্ষ পদগুলোতে আসার ক্ষেত্রে আলোচনায় আছেন নেতৃস্থানীয় আরো অন্তত তিন জন। জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে জানা গেছে।
জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, আমাদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশের জন্য দেশের মানুষেরা মুখিয়ে আছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার কারণে নীতিনির্ধারণী নেতারা চাচ্ছেন উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে কেউ একজন দলের হাল ধরুক। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত হলো তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম যেন নতুন দলের আহ্বায়ক হন। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
নাগরিক কমিটির অন্য নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে কেউ দলে যোগ দিতে হলে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে নাগরিক কমিটির একটা বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে শুধু নাহিদ ইসলাম সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন। এক্ষেত্রে আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সব মত ও পক্ষ একমত হয়েছে। এছাড়া নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করলে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে নাগরিক কমিটি থেকে আলী আহসান জুনায়েদ কিংবা আখতার হোসেন উপদেষ্টা পদে যোগ দিতে পারেন বলেও আভাস পাওয়া গেছে।
নয়া দিগন্ত
‘গণহত্যার বিচার চায় বিএনপি’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের গুম-খুন থেকে শুরু করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী সব অপরাধের বিচার চায় বিএনপি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের প্লাটফর্ম খেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে দেয়া জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের খসড়া ঘোষণাপত্রের মূল স্পিরিটকে অক্ষুণ্ণ রেখে নানা সংযোজন ও বিয়োজন এনে এমন অভিপ্রায়ের কথা উল্লেখ করেছে বিএনপি।
বিএনপি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা সরকারের পতন পর্যন্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পরিক্রমা তুলে ধরে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের খসড়া ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করেছে। এই ঘোষণাপত্রে ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী শাসন যাতে আর ফিরে না আসতে পারে, সে ব্যাপারে দৃঢ় অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ন্যূনতম সময়ে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারে মানুষের প্রত্যাশার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। দলটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এই ঘোষণাপত্রকে ‘প্রোক্লেমেশন’ না বলে ‘ডিক্লারেশন’ বলে উল্লেখ করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা গত ৩১ ডিসেম্বর গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষত বিএনপির আপত্তির কারণে সেই ঘোষণাটা আসেনি। অবশ্য আগের দিন ৩০ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক মতৈক্যে ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগের কথা জানানো হয়। এরপর ছাত্রদের তৈরীকৃত ঘোষণাপত্রের খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘জিডিপির আকার ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিরঞ্জিত হতে পারে’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, দেশের জিডিপির আকার ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার। যদিও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন নথিতে পাওয়া তথ্য এবং অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের জিডিপির প্রকৃত আকার ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে হতে পারে। এলডিসি থেকে উত্তরণ ও উন্নয়নকে অতিরঞ্জিত করে দেখাতে গিয়ে বিগত সরকার দেশের জিডিপি পরিসংখ্যানকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছে। সরকারিভাবে এ তথ্যকে প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে অন্তত ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে, যাতে করে সরকার বিদেশ থেকে বেশি ঋণ নিতে পারে এবং জিডিপির তুলনায় ঋণের অনুপাত অনেক নিচে থাকে।
গত দেড় দশকের সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেক। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারেননি দেশী-বিদেশী অর্থনীতিবিদ ও পর্যবেক্ষকরা। এ অবস্থায় দেশের জিডিপির প্রকৃত পরিমাণ জানতে অর্থনীতিবিদ, বেসরকারি সংস্থা ও পরিসংখ্যান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে বণিক বার্তা।
বাংলাদেশের জিডিপির আকার নিয়ে সরকারের দাবিকৃত ৪৫৯ বিলিয়ন ডলারের তথ্যটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাদের সবাই। দেশের অর্থনীতির প্রকৃত আকার নিয়ে তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে নানারকম অভিমত। তবে তা কোনোভাবেই ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি না বলে মনে করছেন তারা।
আজকের পত্রিকা
‘স্মার্ট কার্ডের আওতায় আসবেন কৃষকেরা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, কৃষি খাতে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি বিতরণে স্বচ্ছতার জন্য কৃষকদের স্মার্ট কার্ডের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ইতিমধ্যে পার্টনার প্রকল্পের আওতায় ‘কৃষক স্মার্ট কার্ড নীতিমালা, ২০২৫’-এর খসড়া তৈরি করেছে। গত ৩০ জানুয়ারি ছিল এ বিষয়ে অংশীজনদের মতামত জানানোর শেষ দিন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষক স্মার্ট কার্ড নীতিমালার লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে একটি সমন্বিত কৃষক ডেটাবেইস (তথ্যভান্ডার) তৈরি করা। এর মাধ্যমে দেশের কৃষকদের কাছে ই-কৃষিসেবা পৌঁছে দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ও টেকসই কৃষিব্যবস্থার ভিত গড়ার চেষ্টা করা হবে।
জানা গেছে, স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষকদের ডিজিটাল প্রোফাইল (তথ্য-সংবলিত পরিচিতি) তৈরি করা হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে যাচাইয়ের মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা হবে। এ কার্ড সরকারি বরাদ্দ ও পুনর্বাসন সহায়তা দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে বিতরণে কাজে
লাগানো হবে। কৃষকেরা স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি একটি ই-ভাউচার ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সরকারি ভর্তুকি গ্রহণ করতে পারবেন। বীজ, সার, সেচসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ ও সেবা ক্রয়ে এই ভর্তুকি ব্যবহার করা যাবে। কর্মকর্তারা আশা করছেন, স্মার্ট কার্ড ব্যবস্থার মাধ্যমে ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা নিশ্চিত হবে। এটি কৃষিসেবা প্রদানকারী ও কৃষিপণ্য বিক্রেতাদের (ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর) সঙ্গে কৃষকদের আর্থিক লেনদেনও সহজতর করবে।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘বিদেশিদের তৎপরতা বাড়ছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের মতামত দিতে শুরু করেছে। এর আগে ভারত ছাড়া আর কেউ দ্রুত নির্বাচনের কথা না বললেও এখন প্রায় সব পক্ষই চায় দ্রুত নির্বাচন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীর সরকারকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন দেওয়া দেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারাও দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মতামত দিচ্ছে। পাশাপাশি দাতা সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও নানাভাবে নির্বাচিত সরকারের বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তারা চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরুক। এ নিয়ে তারা বিএনপিসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছে।
তবে বিদেশিরা গত তিনটি নির্বাচনের মতো ভোট দেখতে চায় না। তারা ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের শেষ তিনটি নির্বাচনের মতো ভোটারবিহীন, রাতের ভোট কিংবা সব দলের অংশগ্রহণহীন নির্বাচন চায় না। তারা চায় দেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে আসুক।