কাজের দেওয়ার কথা বলে রাশিয়া নিয়ে যুদ্ধে পাঠানো প্রবাসীদের স্বজনরা আজ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন। এ সময় প্রিয়জনকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানান। একইসঙ্গে অভিযুক্ত এজেন্সিকে শাস্তির আওতায় আনার দাবিও জানান তাঁরা।
মানববন্ধনে এক ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমি দালালকে বলি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।
আরেক ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কথা জানতে পেরে দালালকে জিজ্ঞাসা করি যুদ্ধে কেন পাঠাইতাছেন? দালাল বলে, যুদ্ধের কথা আমিও জানতাম না।
ওই স্বজন আরো বলেন, এজেন্সির মালিক তার ভাইকেও পাঠাইছে। এইজন্য আমরা বিশ্বাস করছি।
স্বামীর সঙ্গে গত পরশুদিন শেষ কথা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সেদিন তাকে যুদ্ধে নিয়ে গেছে। যুদ্ধে যাওয়ার আগে সে বলেছে, যুদ্ধে যাচ্ছি আর ফিরে নাও আসতে পারি। তোমরা যদি পারো আমারে বাংলাদেশে নেওয়ার চেষ্টা করো। এর পরে আর যোগাযোগ হয় নাই।
এর আগেও তিনদিনের মিশনে যুদ্ধে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে এই স্বজন বলেন, আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে ফিরে আসছেন। তারপর দুই দিন বিরতি দিয়ে আবার নিয়ে যাওয়া হইছে।
এর আগে তাদের এক মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই স্বজন। সে সময় এজেন্সির কাছে জানতে চাই তাদের সামরিক ট্রেনিং কেন করাচ্ছেন? তারা বলে, রাশিয়া অনেক বড় দেশ। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাদের যুদ্ধ লেগে থাকে। তাই আত্মরক্ষার জন্য ট্রেনিং করানো হচ্ছে। তবে এই পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কেউই কোনো পারিশ্রমিক পাননি বলে জানান এই স্বজন।
আরেক প্রবাসীর বোন বলেন, ৪ মাস আগে আমার ভাই গেছে। আমাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারে না। মেসেজ দিয়ে কথা বলে। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি আমাদের ভাইরা সুস্থ-সবল ভাবে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক আর দালালদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দৈনিক কালের কণ্ঠে বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি তুমুল আলোড়ন তৈরি করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মালী ও বাবুর্চির কাজ দেওয়ার কথা বলে রাশিয়া নিয়ে গিয়ে জোর করে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশিদের। এমন অন্তত ১০ ভুক্তভোগীর সন্ধান পায় দৈনিক কালের কণ্ঠ। এদের মধ্যে যুদ্ধে গিয়ে ‘মাইন বিস্ফোরণে’ আহত এক যুবকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।