Image description
 

দেশে রোগীদের অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, রোগ নির্ণয় ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যবহৃত মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক সরঞ্জামাদি, যন্ত্রপাতি ও রিএজেন্টের ৯৫ শতাংশই আসছে বিদেশ থেকে বৈধভাবে আমদানির মাধ্যমে। বর্তমানে বছরে আমদানি হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকার সামগ্রী। ভ্যাট-ট্যাক্স ও লভ্যাংশ মিলে এর বাজার দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকায়।

 
 

এতদিন এসব সামগ্রী আমদানির জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে কোনো ধরনের লাইসেন্স গ্রহণ, নিবন্ধন বা অনুমতি নিতে হতো না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে সহজ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমদানি করতে পারতেন আমদানিকারকরা। কিন্তু ২০২৩ সালে ‘ওষুধ ও কসমেটিকস আইন’ প্রণয়নের পর এসব সামগ্রী ওষুধ ও কসমেটিকসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ওষুধ ও কসমেটিকসের মতো এসবের আমদানি ও উৎপাদনেও বেশকিছু শর্ত বিধিবিধান আরোপ করা হয়। ইতিমধ্যেই এসব শর্ত পূরণে বিভিন্ন হাসপাতালকে চিঠি দিতে শুরু করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অধিদপ্তরের নিবন্ধন ব্যতিরেকে কেউ কোনো চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কিনতে ও ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্দেশ অমান্য করা হলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা ১০ বছরের কারাদ- অথবা উভয় দণ্ডে দ-িত হবেন।

 

এমন অবস্থায় নতুন আইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আমদানিকারকরা। তাদের মতে, কোনোভাবেই চিকিৎসা সরঞ্জামাদিকে ওষুধ ও কসমেটিকসের মধ্যে ফেলা যাবে না। এতে আমদানি জটিলতা, ব্যয় ও সময় বেড়ে যাবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সব প্রক্রিয়া শেষে একটি পণ্য আমদানিতে সময় লাগবে কমপক্ষে তিন মাস। রেজিস্ট্রেশন ফি-সহ জটিল ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে ১০-১৫ শতাংশ। এতে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাবে রোগীদের। চাহিদা অনুপাতে পণ্য আমদানি হবে না। এতে লাগেজ পার্টির মাধ্যমে পণ্য আসার পরিমাণ বর্তমান ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০-২০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এতে বৈধ আমদানিকারকের সংখ্যা ও আমদানি কমবে। সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। ঝুঁকির মধ্যে পড়বে জনস্বাস্থ্য।

 

এমন অবস্থায় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আমদানি ও উৎপাদনে স্বতন্ত্র আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন এবং আমদানি নিয়ম-নীতি সহজ করার দাবিতে পথে নেমেছে আমদানিকারকদের চারটি সংগঠন। এ নিয়ে তারা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সর্বশেষ স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনে আবেদন জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে ডায়াগনস্টিক রিএজেন্ট অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খান আবু দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমাদের মূল দাবি মেডিকেল ডিভাইসের জন্য স্বতন্ত্র আইন ও বিধিমালা করুক। কারণ এটা ওষুধ ও কসমেটিক না। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে এখন সংস্কার কমিশনে আমাদের দাবি জমা দেব। কারণ এটা বৈষম্যমূলক নীতি। ওষুধ ও কসমেকিটসের মধ্যে ডিভাইস ফেলা যৌক্তিক না।

 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমইআইএসএ) সাধারণ সম্পাদক আরশেদুল আলম পুলক বলেন, এই আইন শুধু ওষুধ ও কসমেটিকসের জন্য বলবৎ। যেহেতু মেডিকেল ডিভাইসের জন্য আলাদা কোনো আইন নেই, তাই অধিদপ্তর এই আইনের মধ্যে আমাদের ফেলে দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশ মেডিকেল ডিভাইসের বাজার ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। যথেষ্ট বড় বাজার, সেখানে আলাদা একটা বিধি থাকা উচিত। আলাদা আইন থাকা উচিত। ওষুধ আইনের কারণে আজ আমরা ওষুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ রকম মেডিকেল ডিভাইসের জন্য একটি আলাদা আইন বা বিধি হলে আমরাও এই ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব।

 

তবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আসরাফ হোসেন মেডিকেলে ডিভাইসকে ওষুধ জাতীয় পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, সবদেশেই মেডিকেল ডিভাইস ওষুধ হিসেবেই গণ্য হয়। কারণ এটিও শরীরে প্রবেশ করে। একই আইন দিয়ে এসব সামগ্রীও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সুতরাং আইনে কোনো সমস্যা নেই। যদি কোথাও কোনো পরিবর্তন বা সংযোজন-বিয়োজন করতে হয়, তা হলে সেটা আইন মন্ত্রণালয় দেখবে। আমাদের কাজ আইন বাস্তবায়ন করা।

 

বাজার ৩০ হাজার কোটি টাকার : বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ (বিডা) ও বিএমএআইএসএর তথ্য অনুযায়ী, দেশে চিকিৎসা সরঞ্জামাদির বর্তমানে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে। এর মধ্যে আমদানি হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকার সামগ্রী। মূল আমদানিকৃত অর্থের সঙ্গে আরও ৫০ শতাংশ যোগ করে বাজার নিরূপণ করা হয়। এই ৫০ শতাংশের মধ্যে ভ্যাট-ট্যাক্স ৩০ শতাংশ ও লভ্যাংশ ২০ শতাংশ রয়েছে।

ছয় দেশ থেকে বেশি আসছে : আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বেশি আসছে ছয়টি দেশ থেকে। এগুলো হলো চীন, ভারত, জাপান, কোরিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপ। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, বেলজিয়াম ও জার্মান থেকেও আমদানি করা হচ্ছে। তবে চিকিৎসা যন্ত্রপাতির প্রায় পুরোটাই আসছে পাকিস্তান থেকে। ভারত থেকে বেশি আসে ডিসপোজেবল আইটেম যেমন ব্লাড ব্যাগ, ব্লাড টেস্ট, আইভি ক্যানোলা, স্টেন্ট ইত্যাদি। সাড়ে ৭০০ বেশি আমদানিকারক পাঁচ হাজারের বেশি ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আমদানি করছেন।

রেজিস্ট্রেশন করতে চিঠি দিচ্ছে অধিদপ্তর : আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, গত ছয় মাস ধরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় বড় হাসপাতালগুলোয় চিঠি দিচ্ছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। চিঠিতে বলা হয়েছে ‘আইনের গেজেটের আলোকে আপনারা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া চিকিৎসাসামগ্রী ব্যবহার করবেন না। যদি রাখেন বা ব্যবহার করেন, তা হলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা ১০ বছরের কারাদ- অথবা উভয় দণ্ডে দ-িত হবেন।’

অধিদপ্তরের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন : এসব চিকিৎসা সরঞ্জামাদির মান ও বাজার নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সক্ষমতা ও সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আমদানিকারকরা। তারা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, গত বছরের ২৮ মার্চে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালকের সঙ্গে আমদানিকারক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে অধিদপ্তর জানায়, একটি পণ্যের রেজিস্ট্রেশনের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করলে প্রথমে তারা অ্যাপ্রুভাল মিটিং করেন। সেখানে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ, প্রোডাকশনের কমপোজিশন ইত্যাদি দেখা হয়। এভাবে দুই-তিনটা ধাপ পেরোতে হয়। অধিদপ্তরের যে লোকবল ও যে সময় অর্থাৎ তিন মাসের আগে কোনো পণ্যের রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যায় না।

সেদিন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ১০ সদস্যের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট কমিটি গঠন করেন। এই কমিটির মেডিকেল ডিভাইসের রেজিস্ট্রেশন ফি ও রেজিস্ট্রেশন নিয়মকানুনের জন্য আলাদা বিধিমালা করার কথা ছিল। কিন্তু গত ১০ মাসে এই কমিটির কোনো মিটিং হয়নি।

আমদানিকারকরা আরও জানান, চিকিৎসা সরঞ্জামাদির গুণগত মান নিশ্চিত করতে ল্যাব টেস্টের নামে অধিদপ্তর ফি নেয়। অথচ টেস্ট করার কোনো ব্যবস্থা অধিদপ্তরের নেই।

এতদিন চলেছে আদালতের আদেশে : আমদানিকারকরা জানান, এরও আগে ২০১৬ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ‘মেডিকেল ডিভাইস নির্দেশিকা’ নামে একটি মেমো ইস্যু করে। তখন তারা প্রত্যেকটা কাস্টমসে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন ও এনওসি না করলে আমদানি মাল ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তখন তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেককে প্রধান করে একটি কমিটি করে। কিন্তু সেটাও কার্যকর হয়নি। বন্দরগুলোয় মাল আটকে দিতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে আমদানিকারকরা আদালতে রিট পিটিশন করেন। আদালত অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। এতদিন এভাবেই চলেছে। এখন নতুন আইন গেজেট হওয়ার পর আবার একই ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।

রেজিস্ট্রেশন ফি বেশি : আমদানিকারকরা জানান, ভারতে ক্যাটাগরি ভেদে এসব সামগ্রীর রেজিস্ট্রেশন ফি মাত্র ১০ ডলার (১২২ টাকা হিসেবে ১২২০ টাকা)। কিন্তু বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন ফি ৫৪ হাজার টাকা ও এর সঙ্গে ভ্যাট-ট্যাক্স মিলে খরচ দাঁড়ায় ৬৫ হাজার টাকা।

আমদানিকারকরা আরও বলেন, কোনো একটি পণ্য একবার রেজিস্ট্রেশন করার পর সেটার মেয়াদ পাঁচ বছর থাকে। এরপর আবার করতে হয়। এমনকি রেজিস্ট্রার করা পণ্য প্রতিবার আমদানির আগে পরিমাণ অনুমোদন করে নিতে হয়। অথচ এক লাখ পিস অনুমোদন চাইলে অধিদপ্তর দেয় ৪০ হাজার পিস। অর্থাৎ আমদানিতে ধাপে ধাপে প্রতিবন্ধকতা।

ব্যয় বাড়বে ১০-১৫% : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক বলেন, দেশে কিছু কিছু পণ্যের ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত ট্যাক্স, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, এই দুটো মিলে ৫২ শতাংশ খরচ পড়ে। অতিরিক্ত রেজিস্ট্রেশন ফি, ভ্যাট-ট্যাক্স, আমদানি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে একটি পণ্য আমদানিতে ১০-১৫ শতাংশ ব্যয় বেড়ে যাবে। এই ব্যয় বহন করতে হবে রোগীদের। সে ক্ষেত্রে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাবে।

এই আমদানিকারক আরও বলেন, আমদানি জটিলতা কমলে দামও কমবে। যেমন ব্লাড ব্যাগ বাংলাদেশে আমদানি করে পাঁচ থেকে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। আমদানি জটিলতা না থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠান আমদানি করত ও বাজারে এই পণ্য সরবরাহ বেশি হতো। রোগীরা কম দামে কিনতে পারত।

৫% প্যাকিং হয় : আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, মোট চাহিদার ৯৫ শতাংশ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আমদানি হচ্ছে। বাকি যে ৫ শতাংশ, সেটাও বাইরে থেকে এনে দেশে প্যাকেটজাত করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আমদানিকারক বলেন, ব্লাড ব্যাগ দেশে উৎপাদন হয় না। মহাখালীর একমাত্র সরকারি প্ল্যান্ট বন্ধ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে। ব্যবসায়ীরা চীন থেকে এনে মূল কোম্পানির নামে এখানে রি-প্যাকিং করেন। বিপি মেশিন, গ্লাভস, বিভিন্ন ধরনের নিডল, অক্সিজেন মাস্ক, ডায়াবেটিস স্ট্রিপ, নেবুলাইজার মাস্কসহ যেসব পণ্য খুবই প্রচলিত, সেসব পণ্য দেশে উৎপাদনের নামে বিদেশ থেকে এনে রি-প্যাকিং করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ এগুলো আমরাও বৈধ পথে আসলটা আনতে পারি। আমাদের অনুমতি দেয় না।

লাগেজ বেড়ে যাবে ১০-২০% : আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে ৫ শতাংশেরও কম পণ্য লাগেজ পার্টির মাধ্যমে দেশে আসছে। আমদানি জটিলতা ও খরচ বেড়ে গেলে লাগেজ ১০-২০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। চিকিৎসা সরঞ্জামাদির মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

একজন আমদানিকারক বলেন, কোনো পণ্যের চাহিদা এক লাখ পিস, অধিদপ্তর অনুমতি দেয় ৪০ হাজার পিস আমদানির। পরে আবার মাল আসতে সময় লাগবে তিন মাস। কিন্তু এর মধ্যে রোগীরা তো বসে থাকবে না। তখনই লাগেজ পার্টির মাল বাজারে ঢোকে।

মূল চার জটিলতা : আমদানিকারকরা জানান, ওষুধ প্রস্তুত করার জন্য রেসিপি অনুমোদনের আবেদন করতে হয় এবং রেসিপি অনুমোদন সাপেক্ষে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে হয়। ওষুধের প্রস্তুতির জন্য এটা স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু মেডিকেল ডিভাইসের ৯৫ শতাংশই আমদানিনির্ভর। আমদানিকৃত মেডিকেল ডিভাইসের জন্য রেসিপি অনুমোদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আমদানিকৃত মেডিকেল ডিভাইস ইউএস-এফডিএ বা সিই বা আইএসও সার্টিফাইড হওয়া সত্ত্বেও ফ্রি সেল সার্টিফিকেট জমা দিতে হয় এবং সেটি আবার বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বারা সত্যায়িত করতে হয়। এটি সময় সাপেক্ষ ও অযৌক্তিক।

আমদানিকারকরা আরও জানান, প্রোডাক্ট রেজিস্ট্রেশন করার পরও প্রতিবার এলসি করার আগে ঔষধ অধিদপ্তর থেকে ইনডেন্ট অ্যাপ্রোভাল প্রসেস সম্পন্ন করে তারপর আমদানি করতে হয়। যার কারণে স্বাভাবিক আমদানি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত ও দেরি হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারক বলেন, আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আমদানি হতো। এক এলসির মাল ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা এলসি পাঠাতাম। কিন্তু এখন উল্টো। এক এলসির মাল আসার পর কয়েক ধাপ পেরিয়ে আরেক এলসির মাল আনার প্রস্তুতি। মাঝখানে কমপক্ষে পাঁচ মাস চলে যায়। এটা খুব কঠিন হয়ে গেছে।