Image description

দেশে চাঁদাবাজির মাত্রা যেন কমছেই না বরং ক্রমান্বয়ে তা বেড়েই চলেছে। একদিকে আকাশচুম্বী নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অন্যদিকে দেদারসে চাঁদাবাজি এর সাথে রয়েছে বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের সীমানাহীন দুর্নীতি এবং খেলাপি ঋণ, যা টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি করেছে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে। ফলে জনজীবনে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ সঙ্কট।

সম্প্রতি দেশের অর্থনীতির হালচাল নিয়ে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দীন আহমেদ। এ সময় অর্থনীতির বিভিন্ন দিক এবং অবস্থা নিয়ে কথা বলেন এই প্রবীন অর্থনীতিবিদ এবং সরকারের এই উপদেষ্টা। এসময় অর্থ উপদেষ্টা জানান, দেশের অর্থনীতিকে প্রায়ই ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী সরকার। পৃথিবীর কোন দেশ সম্ভবত নেই যাদের ব্যাংকিং খাতের এমন বেহাল দশা হয়েছে।

প্রসঙ্গক্রমে, অর্থ উপদেষ্টা তুলে ধরেন দেশের ভয়াবহ চাঁদাবাজির কথা। এই উপদেষ্টার মতে দেশে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে চাঁদাবাজি। অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্যে, দেশে এখন তিন ধাপে চাঁদাবাজি করা হয়। উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের পর বিবিসির সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন যে, এই চাঁদাবাজির সাথে কারা সম্পৃক্ত?

উত্তরে সালেহউদ্দীন আহমেদ দাবি করেন, আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের নেতা-কর্মীরা এখনও সমানভাবেই চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন। সাংবাদিক জানতে চান আওয়ামীলীগ কিনা, উত্তরে তিনি বলেন, হ্যাঁ। দ্বিতীয়ত এখন যারা ইমারজিং পার্টি, রাজনীতিতে মাঠপর্যায়ে রয়েছে তারাও চাঁদাবাজি করছে এবং অন্য পক্ষ হিসেবে তিনি বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় চাঁদাবাজদের দোষারোপ করেছেন। এসময় তিনি উদাহারণ দিয়ে বলেন, 'মহাস্থানগড় থেকে ঢাকাতে পণ্য আনতে তিন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়।'

চাঁদাবাজি কেন কমানো যাচ্ছে না এমন প্রশ্ন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা জানান, যেহেতু তারা দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন তাই তারা খুববেশি জোড় করতে পারেন না। চাইলের দমন-পীড়ন চালাতে পারেন না। এছাড়া রাজনৈতিক সরকারের পলিটিক্যাল আর্মস বা রাজনৈতিক লোকজন থাকায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু যেহেতু তারা রাজনৈতিক সরকার না তাই স্বাভাবিকভাবেই সেই সুযোগটিও তাদের হাতে নেই। এছাড়াও পুলিশকে তারা আর নৃশংসভাবে উপস্থাপন করতে চান না এটাও স্পষ্ট করেছেন তিনি। এছাড়াও, ভোক্তা অধিকার সঠিকভাবে কাজ করছে না এমনটাও বলেন তিনি।
এসময় তিনি আশা ব্যক্ত করেন, দেশের অর্থনীতি আগের থেকে অনেকটাই ভালো অবস্থায় রয়েছে। হয়তো কৃষি পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে অন্যান্য পণ্যের দাম কমেছে, ধীরে ধীরে কৃষিপণ্যের দামও কমে যাবে।

এছাড়াও, এই উপদেষ্টা আশা ব্যক্ত করেন, খুব দ্রুতই দেশের অর্থনীতিতে একটা ভালো পরিবর্তন আসবে এবং মুদ্রাস্ফীতিও অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।