কুমিল্লা বঙ্গবন্ধু ল কলেজ। ৩০ বছর পর জানা গেলো এই কলেজের অধ্যক্ষের এলএলবি পাসের সনদটি জাল! এর আগে থেকে ৪৪ বছর ছিলেন আইনজীবী। তিনি অ্যাডভোকেট সরদার মো. আলী আজাদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু ল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইলিয়াছ। এ নিয়ে কুমিল্লার আদালতপাড়ায় সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কুমিল্লার সিনিয়র অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার খান বলেন, ‘এটি অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। এই সরদার মো. আলী আজাদ ৪৪ বছর আইনজীবী ছিলেন। ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর। ৩০ বছর ধরে অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ প্রতারণা করলে ছাত্ররা কী শিখবে? তাও আবার আইনজীবী তৈরির কলেজে।’
বঙ্গবন্ধু ল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘তিনি (আলী আজাদ) সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে দীর্ঘ ৪৪ বছর আইন পেশা এবং বঙ্গবন্ধু ল কলেজে ৩০ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিষয়টি জেনে কলেজের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি লজ্জিত। তার শাস্তি দাবি করছি। এ ছাড়া আরও যারা ভুয়া সনদ নিয়ে কাজ করছেন তাদেরও শনাক্ত করা হোক।’
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু ল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘সরদার মো. আলী আজাদ বঙ্গবন্ধু ল কলেজে দীর্ঘ সময়ে অধ্যক্ষ ছিলেন। তার দুর্নীতির বিষয়ে গঠিত কমিটি কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে দেখে, তার ১৯৬৮ সালের সনদে লেখা কুমিল্লা, বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। তখনও তো বাংলাদেশ হয়নি। ডিগ্রির সনদ খুঁজতে গিয়েও দেখি একই অবস্থা। এরপর আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিই তার এলএলবি সনদের সত্যতা নিয়ে। সেখান থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানিয়েছেন সনদটি জাল। আমরা তার আইনজীবী সনদ বাতিলের জন্য বার কাউন্সিলে আবেদন করবো।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষ নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্যাহ পাটোয়ারী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ল কলেজ থেকে সরদার মো. আলী আজাদের একটি সনদ আমাদের পাঠানো হয়েছে। আমরা তা যাছাই করে দেখেছি। সনদটি জাল।’
অভিযুক্ত সরদার মো. আলী আজাদ জানান, তার সম্মানহানির জন্য এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তবে সনদ জালের বিষয়ে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। একবার বলেন, ১৯৮০ সালে সনদ পাননি। প্রশংসাপত্র পেয়েছেন। আবার বলেন, তিনি লেখাপড়া করেই আইনজীবী হয়েছেন, তবে তার কাছে কোনও সনদ নেই।