ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদকে সীমান্তে আত্মগোপনে সহায়তার অভিযোগে গ্রেফতার আমিনুল ইসলাম রাজু আদালতে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার রাজুকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের ইন্সপেক্টর ফয়সাল আহমেদ।
আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই রুকনুজ্জামান।
বুধবার দুপুরে রাজুকে মিরপুর -১১ থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানান। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আমিনুল ইসলাম রাজু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালকে সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি রেকর্ড করা প্রয়োজন।
প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক রুকনুজ্জামান রাজুর জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর মিরপুর-১১ এলাকা থেকে আমিনুলকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরদিন আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রাজুসহ ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গঠন করে মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পল্টন এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তিনি মাথায় গুরুতর আহত হন। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের, যা পরবর্তীতে হাদি মারা যাওয়ার পর হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।