নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নতুন সিদ্ধান্তে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভেতরে চলছে অস্থিরতা। শীর্ষস্থানীয় নেত্রী তাসনিম জারাসহ কয়েকজন ইতিমধ্যে দলত্যাগ করেছেন। কেউ কেউ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদানের বিরোধিতা করলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। এমন এক পরিস্থিতিতে পবিত্র কোরআনের আয়াত স্মরণ করে মহান আল্লাহর সাহায্য কামনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু।
রোববার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মিতু লিখেন, ‘নিশ্চয়ই আমার রব আমার সাথে আছেন। তিনি আমাকে পথ দেখাবেন।’
বাক্যটি হলো কোরআনের সূরা আশ-শু'আরা-এর ৬২ নম্বর আয়াতের একটি অংশ, যা হজরত মুসা (আ.) ফিরাউনের সাথে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বলেছিলেন, যখন তার সম্প্রদায় ভয় পেয়েছিল। এটি আল্লাহর প্রতি অটল বিশ্বাস এবং ভরসার একটি শক্তিশালী উক্তি, যা যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে পথ প্রদর্শনের আশ্বাস দেয়।
এদিকে জামায়াতসহ ৮ দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুক্ত হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা জামায়াতসহ ৮ দলীয় জোটের সঙ্গে একসঙ্গে নির্বাচন করছি। আমরা সবাই গণভোটে ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে কাজ করব। কে কোন আসন থেকে নির্বাচন করব তা আগামীকাল (সোমবার) আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। জোটের বাইরে আমাদের আলাদা কোনো প্রার্থী থাকবে না। ওই সব আসনে আমরা জোটের পক্ষে কাজ করব।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি সেখানে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা করে যাচ্ছিল। আমরা সে বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে এবং সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর জন্য আজকের এই তাৎক্ষণিক প্রেস ব্রিফিং।
নাহিদ বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি যে, আমরা আসন্ন এই নির্বাচনে এককভাবে অংশগ্রহণ করতে চাই। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চাই। সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা চলছিল। আমরা সারাদেশ থেকে মনোনয়ন আহ্বান করেছিলাম, যারা প্রার্থী হতে চায়। পরে আরও দুটি দলের সাথে আমাদের একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছিল। সংস্কার প্রশ্নে তখন আমরা বলেছিলাম যে আমরা তিনটি দল মিলে যে সংস্কার জোট, আমরা একত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।
তিনি আরও বলেন, শরিফ ওসমান হাদির যে শাহাদাত বরণ এবং তাকে প্রকাশ্যে গুলি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনেক বেশি পরিবর্তন হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড, এই শাহাদাত বরণের মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারছি, বাংলাদেশ আধিপত্যবাদী আগ্রাসনী শক্তি এখনো কার্যকর রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যাদেরকে আমরা পরাজিত করেছিলাম, তারা নির্বাচন বানচাল করার জন্য এখনো চক্রান্ত করছে।