রাজধানীর গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া মার্কেট-২-এর অবৈধ এবং বেজমেন্টের ৯১১টি দোকান উচ্ছেদ করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ নিয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পরে তাপসের সময়েই তার লোকজন নকশাবিহীন ২১০টি অবৈধ দোকান নির্মাণ করে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের সাম্রাজ্য বন্ধ হলেও থেমে নেই অসাধুচক্রের অবৈধ চক্রান্ত। নতুন করে মার্কেটের বেজমেন্টের চারটা গেটে তালা লাগিয়ে ভেতরে দোকান নির্মাণ চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২-এর সিটি প্লাজা, নগরপ্লাজা ও জাকের প্লাজার আন্ডারগ্রাউন্ড বা বেজমেন্টে অসাধুচক্র দোকান নির্মাণ করছে। জাকের প্লাজার সি ব্লক আন্ডারগ্রাউন্ডের চারটা গেট সাটার লাগিয়ে ভেতরে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। আর নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা বেজমেন্টে সাটার লাগিয়ে রাতের অন্ধকারে ইট-বালু নিয়ে এসে এই তিন মার্কেট কাজ ধরতেছে। তবে নগর প্লাজা মার্কেটের ব্যবসায়িক কমিটিকে না জানিয়ে এই চক্র অবৈধ পন্থায় দোকান নির্মাণ করছে। অবৈধভাবে আদালতের দোহায় দিয়ে সিটি করপোরেশনের অনুমোদনবিহীন মার্কেট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চক্রান্ত করছে এই অসাধুচক্র।
অভিযোগ উঠেছে, এসব কাজে সহযোগী হিসেবে রয়েছে জাকের মার্কেটের তাজুল ইসলাম, মো: হানিফ, রহিম ও মালেক। এছাড়া, নগর প্লাজায় আছে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা বাকের, ইব্রাহিম, মান্নান আরো অনেকে। এদের মূল মাস্টারমাইন্ড জাকের মার্কেট সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ।
মার্কেটের ব্যবসায়িক কমিটির দাবি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার চক্রান্ত করতেছে এই চক্র। তারা দোকান মালিক সমিতিকে না জানিয়ে অবৈধ পন্থায় দোকান নির্মাণের কাজ করছে। বিগত আমলের ফ্যাসিবাদের দোসর এই চক্র। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমরা চাচ্ছি সরকারি এবং সিটি করপোরেশনের অনুমোদনবিহীন কোনো দোকান নির্মাণ না হোক।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, গত জুলাইয়ে করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২-এর সিটি প্লাজা (ব্লক-এ), নগরপ্লাজা (ব্লক-বি) ও জাকের প্লাজা (ব্লক-সি) পরিদর্শন করেন। এই মার্কেটে করপোরেশনের বরাদ্দকৃত দোকান আছে এ ব্লকে ১৭৬টি, বি ব্লকে ১৭৬টি ও সি ব্লকে ১৭৯টি। তবে বরাদ্দকৃত দোকানের বাইরে মার্কেট সমিতির নেতারা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদরা মিলে মার্কেটের সিঁড়ির নিচে, টয়লেট ভেঙে, লিফটের সামনে, ফাঁকা জায়গায় আরো ২১০টি অবৈধ দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে।
এদিকে, গত ২৭ নভেম্বর সিটি মার্কেটের নিচতলার একটি টয়লেট ভেঙে আরো দু’টি দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার পতনের পরও মার্কেট সমিতি ফাঁকা স্থানে দোকান নির্মাণ করে ২০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে।
এছাড়া ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেটের এই নগরপ্লাজা ও সিটি প্লাজার ষষ্ঠ তলা থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত করপোরেশন আরো ৬৮৪টি দোকান নির্মাণ করলেও এখন পর্যন্ত এসব দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তবে এই চক্রটি এসব দোকানের তালা ভেঙে ভাড়া দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।