এনসিপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক শক্তির খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারকে গুলির ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা এক নারী সঙ্গীকে খুঁজছে পুলিশ। তাদের বাসা থেকে পুলিশ বিভিন্ন মাদকের আলামত সংগ্রহ করেছে।
সোমবার দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে মোতালেবকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি শঙ্কামুক্ত।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, তারা এখানে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন এবং নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।”
মোতালেব শিকদার (৪২) সোনাডাঙ্গা শেখপাড়া পল্লী মঙ্গল স্কুল এলাকার মৃত মোসলেম শিকদারের ছেলে। তিনি জাতীয় শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, আল আকসা মসজিদ স্মরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউজের নিচতলায় গুলির ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে, শনিবার রাত থেকে মোতালেব টানা সেই ফ্ল্যাটে ছিলেন।
সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল বলেন, ঘটনার পর পরই উপস্থিত জনতা তাকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যান। পরে মাথার সিটি স্ক্যান করার জন্য তাকে সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
“গুলিটি তার বাম কানের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে গেছে। এতে রক্তক্ষরণ হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান।”
মোতালেব এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, “তার মাথার বাম পাশে গুলি লেগেছে। হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের ড্রেসিংরুমে তার প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে।”
মুক্তা হাউজের মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার সাংবাদিকদের বলেন, “স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তন্বী নামে এক তরুণী এক মাস আগে নিচতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিওকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং প্রায়ই বাড়ির বাইরে থাকতেন।
“তার কক্ষে একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। পরে অন্যদের মাধ্যমে তার অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি জানতে পেরে এ মাসে বাড়ি ছাড়ার নোটিস দেওয়া হয়। ছাড়ার আগেই এ ঘটনা ঘটল।”
ঘটনার পর থেকে তন্বী নামের ওই নারী পলাতক রয়েছেন। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “ওই ফ্ল্যাট থেকে মাদকের বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। মোতালেবকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকিদের নাম জানা যাবে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”
এনসিপি খুলনা মহানগরের সংগঠক সাইফ নেওয়াজ বলেন, “মোতালেবকে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে খুলনায় একটি বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। সেটা নিয়ে তিনি কাজ করছিলেন।”

