‘এমন জীবন করিবে গঠন-হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন’। কবি গোলাম মোস্তফার বিখ্যাত এই পঙক্তিরই যেন জীবন্ত প্রতিচ্ছবি শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি। যিনি এখন অসমাপ্ত মহাকাব্যের তরুণ মহাবীরের জ্বলজ্বলে এক নাম। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে পেলেন এক বীরোচিত বিদায়। তার জানাজায় জনসমুদ্রের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে এলো শোক, ভালোবাসা আর অকৃত্রিম শ্রদ্ধার ধ্বনি। লাখো মানুষের কান্নার রোলে ভারি হয়ে উঠেছিল আকাশ-বাতাস। যার কণ্ঠ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্রনিনাদ, যার চোখে ছিল ইনসাফের বাংলাদেশের স্বপ্ন—তাকে শেষ বিদায় জানাতে এসে মানুষ শুধু একজন নেতাকে নয়, বিদায় জানিয়েছে নিজেদের এক সাহসী উচ্চারণকেও।
শহীদ হাদির জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য গতকাল শনিবার সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষের মিছিল ছিল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে। রাজধানীর সব পথ যেন এসে মিলে যায় এক মোহনায়। দুপুর ১টার দিকেই প্রশস্ত ওই সড়ক কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। তাদের কারও মাথায় ছিল জাতীয় পতাকা বাঁধা, কেউবা আবার পতাকা জড়িয়েছিলেন গায়ে। অনেকে স্লোগান দিচ্ছিলেন ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাব’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’। জানাজায় অংশ নিতে আসা অনেক মানুষকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। তারা যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বিপ্লবী এই তরুণের বিদায়।
মানুষের ভিড় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর বিশাল রাজপথ ছাপিয়ে দুই প্রান্তে ফার্মগেটের খামারবাড়ি ও আসাদগেট পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। আর উত্তর দিকে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র পর্যন্তও ছিল মানুষ আর মানুষ। জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এটাই ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জানাজা। জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের খামারবাড়ি গোল চত্বরের সামনে দিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কাউকে সন্দেহ হলে সেখানে তল্লাশি করা হচ্ছিল। তবে এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে তল্লাশি করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দুপুর সোয়া ১টার দিকে হাদির মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আসাদগেট সংলগ্ন সংসদ ভবনের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। জানাজা উপলক্ষে নিরাপত্তায় ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এবং বিজিবির পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিলেন।
দুপুর আড়াইটায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির জানাজা হয়। বড় ভাই মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক এতে ইমামতি করেন। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। জানাজার আগে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন এবং হাদির জীবনী পড়ে শোনান। পরে তার পরিবারের পক্ষে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বক্তব্য দেন। এ সময় আব্দুল্লাহ আল জাবের বলে ওঠেন, ‘আমরা এখানে কি কান্নার জন্য এসেছি? আমরা এখানে কীসের জন্য এসেছি? আমার ভাইয়ের রক্তের বদলা নেওয়ার জন্য আজকে আমরা এই জানাজায় দাঁড়িয়েছি।’
এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও হাদির হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদিকে ১৬৮ ঘণ্টা আগে গুলি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে? আমরা মনে করছি, খুনি একজন নয়, পুরো একটা খুনি চক্র কাজ করেছে। খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী, পুরো খুনি চক্রকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা ওসমান হাদির রক্তকে বৃথা যেতে দেব না। ওসমান হাদির রক্তের মাধ্যমে এ দেশে ইনসাফ কায়েম হবে।’
তবে কোনো ধরনের সহিংসতার উসকানিতে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাবের বলেন, ‘ইনকিলাব মঞ্চ থেকে সব ধরনের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
হাদির জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল যেন প্রতিবাদের পাঠশালা। শিখিয়েছিলেন মাথা উঁচু করে সত্য বলার সাহস, আর অন্যায়ের সামনে নত না হওয়ার দৃঢ়তা। জানাজার কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের চোখের জল বলছিল— এই শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। তবে কান্নার মধ্যেও ছিল এক অদ্ভুত প্রত্যয়; শরিফ ওসমান হাদির দেখানো পথে ইনসাফ, ন্যায় আর আধিপত্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন একদিন বাস্তবায়ন হবেই। তার জীবনই রয়ে গেল সেই অমলিন অঙ্গীকারের সবচেয়ে শক্তিশালী সাক্ষ্য হিসেবে।
জানাজায় অংশ নিয়েছে লাখো বিক্ষুব্ধ প্রাণ। তারা সবাই হাদির হত্যাকারীদের বিচার দাবির পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা চান। শরীরে লাল পতাকা জড়িয়ে হাদির জানাজায় অংশ নেন ঢাকার সাভার কলেজের শিক্ষার্থী আরিফিন শাওন। হাদিকে চোখের সামনে কোনোদিন দেখেনওনি। তবু তার দুচোখ থেকে অঝোরে ঝরছিল পানি। শাওনকে দেখে মনে হয় যেন তার কোনো আপনজনের বিদায়ের দিন। সত্যিই হাদি পুরো দেশবাসীর আপনজন হয়ে উঠেছেন। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে আরিফিন শাওন বলে ওঠেন, ‘দ্রুত ওসমান হাদি ভাইয়ের হত্যাকারীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। হাদি ভাই হত্যার বিচার না হলে আমরা কেউ নিরাপদে থাকতে পারব না।’
ষাটোর্ধ্ব ধানমন্ডির বাসিন্দা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক জানাজায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু এত বড় জানাজা দেখিনি। শহীদ হাদি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। এ কারণে এত মানুষ জানাজায় অংশ নিয়েছেন।’
জানাজার আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ‘ওসমান হাদি, তোমাকে আমরা বিদায় দিতে আসিনি। তুমি আমাদের বুকের মধ্যে আছো। বাংলাদেশ যতদিন টিকে থাকবে, তুমি আমাদের মধ্যে থাকবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে এখানে হাজির হয়েছি, পথে পথে ঢেউয়ের মতো লোক আসছে, সারা দেশজুড়ে কোটি কোটি মানুষ আজকে এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছে, তারা তাকিয়ে আছে হাদির কথা শোনার জন্য। আজকে বিদেশে যারা আছে, বাংলাদেশি, এই মুহূর্তে তারাও হাদির কথা জানতে চায়। প্রিয় ওসমান হাদি, তোমাকে আমরা বিদায় দিতে আসিনি। এখানে তুমি আমাদের বুকের ভেতরে আছো এবং বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি সব বাংলাদেশির বুকের মধ্যে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজকে তোমাকে, প্রিয় হাদিকে বিদায় দিতে আসিনি। তোমার কাছে আমরা ওয়াদা করতে এসেছি। তুমি যা বলে গেছ, সেটা যেন আমরা পূরণ করতে পারি, সেই ওয়াদা করার জন্য আমরা একত্র হয়েছি। সেই ওয়াদা শুধু আমরা নই, পুরুষানুক্রমে বাংলাদেশের সব মানুষ পূরণ করবে। সেই ওয়াদা করার জন্যই আমরা তোমার কাছে আজকে এসেছি।’
জানাজা শেষে বিকেল ৩টার দিকে হাদির মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের ছাদে করে আসতে দেখা যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম ও ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবেরকে। তারা মাইকে জনতাকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং মরদেহ নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে সহযোগিতার অনুরোধ করেন। যদিও শেষবারের মতো অন্তত প্রিয় ওসমান হাদির লাশবাহী গাড়ি ছুঁয়ে দেখতে আপ্রাণ চেষ্টা করতে দেখা যায় তার ভক্তদের।
ওসমান হাদির মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর সময় তার কয়েকজন রাজনৈতিক সহকর্মী বলতে থাকেন, ‘হাদি ভাই, আমাদের রেখে তুমি একা কোথায় চলে যাচ্ছো, আমাদেরও নিয়ে যাও, একা তো চলে যাওয়ার কথা না... ও হাদি ভাই...!’ বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে হাদির মরদেহ ফ্রিজার ভ্যান থেকে কবর দেওয়ার উদ্দেশ্যে বের করা হয়। মরদেহ কবরস্থানে প্রবেশের মুহূর্তে তার অসংখ্য সহকর্মীর চোখে অশ্রু ঝরতে দেখা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হাদি ভাইয়ের সঙ্গে অসংখ্য দিন নির্বাচনী কাজে যুক্ত ছিলাম। হাদি ভাইয়ের স্মৃতিগুলো কোনোভাবেই ভোলা যাচ্ছে না। এমন একজন হাদি আর কখনো ফিরে আসবেন বলে মনে হয় না।’
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি চত্বরে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের প্রাঙ্গণ যেন রূপ নেয় এক শোকস্তব্ধ জনসমুদ্রে। দাফন শেষে মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন কবরস্থান গেটের বাইরে অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবী, হাদির রাজনৈতিক সহযোদ্ধা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। দাফনের মুহূর্তে পুরো এলাকা নীরব হয়ে যায়। মোনাজাত শুরু হতেই অনেকেই আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। কেউ দুহাত তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন, কেউ নিচুস্বরে কোরআনের আয়াত পড়তে থাকেন। দাফনকালে উপস্থিতরা হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, তার মৃত্যু শুধু পরিবারের নয়, গোটা দেশের জন্যই এক অপূরণীয় ক্ষতি।
হাদির পরিবার ও স্বজনদের আহাজারিতে আরও ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। প্রিয়জনকে কবরে শায়িত করার শেষ মুহূর্তে স্ত্রী-স্বজন ও সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সহযোদ্ধারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে চোখ মুছতে থাকেন। শেষ মোনাজাতে মুসল্লিরা আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে দোয়া করেন—তিনি যেন শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে শোক সইবার শক্তি দান করেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন শরিফ ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আল্লাহ আমার ভাই শরিফ ওসমান হাদিকে কবুল করুন এবং শহীদ হিসেবে মর্যাদা দেন। তার জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দেন। পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দেন।’ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ যারা শরিফ ওসমান হাদির সঙ্গী ছিলেন এবং যারা অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন–তাদের সবার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। একই সঙ্গে রেখে যাওয়া ইনকিলাব মঞ্চ এবং হাদির অসম্পন্ন সব কাজ আগামীতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে তৌফিক প্রার্থনা করা হয়।
তখন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ হাদিকে শাহাদাতের জজবা হিসেবে কবুল করে নিয়েছেন। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত তৃতীয় শহীদ হিসেবে আল্লাহ কবুল করেছেন। আমি আমার মাকে কবরে শুইয়ে দিয়েছি, আজ হাদিকে কবরে শুইয়ে দিতে এসেছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘শহীদ হাদির পরিবারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সম্প্রসারিত পরিবারের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। আমরা মনে করি, তার পরিবার আজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় পরিবারেরই অংশ। এই কঠিন সময়ে ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে যে সহযোগিতা তারা করেছেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
উপাচার্য বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানটি কেবল একটি দাফনস্থল নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর একটি প্রতীক। আপনারা জানেন, এখানে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি রয়েছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একাধিক সন্তানও এখানে শায়িত আছেন। এই স্থানে শহীদ হাদিকে দাফনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সন্তানের প্রতি সম্মান জানিয়েছে।’
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে প্রকাশ্য দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ওসমান হাদি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয় তাকে। চিকিৎসকদের ভাষায়, তার অবস্থা ছিল ‘অত্যন্ত সংকটজনক’।
উন্নত চিকিৎসার আশায় গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল; দীর্ঘ এক যাত্রা। যদিও শেষ পর্যন্ত এই বিপ্লবীর জীবন্ত সত্ত্বার আর দেশে ফেরা হয়নি। এক সপ্তাহের জীবন-মৃত্যুর লড়াই শেষে হার মানেন এই তরুণ নেতা। ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্ম নেওয়া ওসমান হাদির শৈশব কেটেছে এক মাদ্রাসা শিক্ষক বাবার স্নেহছায়ায়। বাবা মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক। নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবনের শুরু, সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।