ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া পোস্ট তিনি লিখেছেন, বিপ্লবী ওসমান হাদিকে মহান আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করুন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার সাহসিকতা থেকে তরুণদের অনুপ্রাণিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।
পোস্টে কমেন্ট বক্সে তিনি আরও লিখেছেন, এমন মৃত্যু সত্যিই ঈর্ষণীয়। পরিণতি জেনেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীনতার এরচেয়ে উত্তম উদাহরণ নিকট অতীতে বিরল। মৃত্যুভয় জয় করে শাহাদাতের এমন আকাঙ্ক্ষা লালন করতে কেবল আদর্শ মুসলিম তরুণরাই পারে। হে আল্লাহ, আমাদের সবাইকে তুমি এমন স্বার্থক মৃত্যু দান করো।
এর আগে, জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারের সময় গত ২০ ডিসেম্বর দুপুরে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। গুলি মাথা ভেদ করে যাওয়ায় গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিউতে নেওয়া হয়। তিনদিন পর সোমবার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।সেখানে গত কয়েকদিন চিকিৎসা চললেও ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার আর উন্নতি হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ নামে একজনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার সহযোগী আলমগীর শেখ মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন। এই দুজন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাদের মধ্যে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা মোসা. হাসি বেগম (৬০), স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু রয়েছেন।
এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, মো. কবির, আব্দুল হান্নান, মো. হিরন, মো. রাজ্জাক, ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া আক্তার এবং হালুয়াঘাট সীমান্তে মানব পাচারকারী হিসেবে পরিচিত সিমিরন দিও ও সঞ্জয় চিসিম।
উল্লেখ্য, গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক মাস আগেই হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন ওসমান হাদি। গত নভেম্বরে ফেসবুক দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোন ও মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
পোস্টে তিনি আরও লেখেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকেরা তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে জীবননাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছিয়ে যাবেন না।
