জোরপূর্বক দেহব্যবসায় নামানোর অভিযোগ তদন্তে করতে গিয়ে চক্রের ফাঁদে পা দেয়া ১২ বাংলাদেশি নারী ও পশ্চিমবঙ্গের দুই নারীকে উদ্ধার করেছে ভারতের গুজরাট রাজ্যের ভারুচ জেলা পুলিশ। এসময় এই নারী পাচারকারী ও দেহ ব্যবসা পরিচালনা চক্রের মাস্টারমাইন্ডসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভারুচ জেলা পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশের স্থানীয় অপরাধ শাখা (এলসিবি) এবং স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) সম্প্রতি একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় এলসিবি পুলিশ ফারুক শেখ নামে একজন বাংলাদেশি এজেন্ট সম্পর্কে গোপন তথ্য পান, যার বিরুদ্ধে স্থানীয় স্পা সেন্টার ও বিউটি পার্লারে বাংলাদেশি যৌনকর্মী সাপ্লাই দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায়, অভিযুক্ত ফারুক বাংলাদেশ থেকে নারীদের বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে ভারতে নিয়ে ভারুচ এবং অঙ্কলেশ্বরের স্পাগুলোতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করেছেন। পাশাপাশি জাম্বুসারে নিজের বাড়িতে আটকে রেখে কিছু মহিলার মাধ্যমে পতিতালয় পরিচালনা করছেন।
এর মধ্যে তিনজন নারী ভারুচে নাজিম খান পরিচালিত মুসকান স্পাতে কাজ করতেন এবং তিনজন ভারুচে রইস শেখ নামে এক ব্যক্তির পরিচালিত একটি গেস্ট হাউসে কাজ করতেন। আর চারজন মহিলাকে অঙ্কলেশ্বরে সুজিতকুমার পরিচালিত একটি স্পাতে পাঠানো হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, একই সময়ে তিনটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ নারী এবং রইস শেখের বাড়ি থেকে আরও চারজনকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক বলেছেন, ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি ও পশ্চিমবঙ্গের এই নারীদের গুজরাটে নিয়ে আসা হয়েছিল। আটক হওয়া ৪ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই পাচার চক্রের সদস্যরা শুধু গুজরাট নয়, এজেন্টের মাধ্যমে রাজস্থান, গোয়া ও মধ্যপ্রদেশে সবমিলিয়ে প্রায় ৬০ জন নারীকে পাচার করেছে যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। তাদের প্রত্যেককেই উদ্ধারের জন্য সেসব রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের সময় আটক হওয়া ৪ ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইল ফোন এবং নগদ ৬৪ হাজার রুপি ছাড়াও বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিচয়পত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। আটক হওয়া চারজনের নামে ১৯৫৬ সালের অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনের বিভিন্ন ধারা এবং ২০২৩ সালের ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে মামলা করা হয়েছে।
শীর্ষনিউজ