তফসিল ঘোষণার সাথে হুইসেল বাজিয়ে প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে নির্বাচনি ট্রেন। ভোটের তারিখ, সময় ও মনোনয়নসহ ভোট-সংশ্লিষ্ট খুঁটিনাটি জেনে গেছে জাতি। শেষ তিনটি নির্বাচনে যে ন্যক্কারজনক পরিস্থিতি দেখা গেছে, যে দুর্নাম কুড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে তা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ এসেছে। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর এখন বড় চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধি মানছে কি না, তা তদারকি করা। এ ছাড়া রয়েছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাহাড়সম বাধা।
নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম চ্যানেল 24-কে বলেন, একটা নির্বাচন কমিশন একা একা নির্বাচন করতে পারে না; তারা যত শক্তিশালী হোক, পারবে না। যদি রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সহযোগিতা না করে। নির্বাচন কমিশনকে মনিটরিং করতে হবে, আচরণবিধি ভাঙলে বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রয়োগ করতে হবে। নাহলে মাঠ সমান থাকবে না, পরিবেশটা অন্যরকম হয়ে যাবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেন, আমরা জানি আমাদের পুলিশ অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে। ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে এখনও সেনাবাহিনী দেশে আছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলার সে রকম উন্নতি আমরা দেখি না। এ ধরনের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার যদি অ্যাপ্লাই করা হয়, তাহলে সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা আরও মুশকিল হবে।
এবারের নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে মনে করেন অনেকে। কেননা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে গণভোট এবারের নির্বাচনের নতুন অনুসঙ্গ। এর সাথে পরিচিত নন সাধারণ ভোটররা। তাই বিভ্রান্তির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন দিলারা চৌধুরী।
তিনি বলনে, নির্বাচনে দুটি ব্যালট এবং দুটি বুথ করার কথা বলা হয়েছিল। এখানে ভোটাররা বিভ্রান্তিতে পড়ে যাবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। গণভোট কিন্তু সাধারণত হয়, গণভোটের ব্যাপক প্রচার থাকতে হয় এবং একটিই প্রশ্ন থাকে যে—আপনার এটিতে সম্মত কি না?
সুযোগ আছে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার। না হলে পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে ভোটিং ব্যবস্থাকে অপব্যবহার করে ক্ষমতাদখলের।
নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম বলেন, একটা নির্বাচন না। আগামী ২০-৩০ বছরের নির্বাচনের জন্য আমাদের এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যাতে নির্বাচনি পদ্ধতিকে ব্যবহার করে কেউ কোনোদিন ক্ষমতায় না আসতে পারে। অর্থাৎ এখানে নির্বাচনকে ধারাবাহিকভাবে সুষ্ঠু করতে হবে।
এবারের নির্বাচনে ভোট দেবেন ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি ভোটার, যাদের উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণ।