রাজধানীর শ্যামবাজারে ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে মামলার প্রধান
আসামি এমামুল এহসান নয়ন এবং তার সহযোগী অয়ন গাঙ্গুলী পলাশকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার রাতে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১০ ও র্যাব-৪ আভিযানিক দল তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত বিদেশি রিভলবার, তাজা কার্তুজ ও ফায়ার করা কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। এ সময় র্যাব-৪, সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার কেএন রায় নিয়তি উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে মাওলাবক্স চক্ষু হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে মসলা ব্যবসায়ী ও শ্যামবাজার কাঁচাবাজার মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের হলে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। পরে রাত ১০টা ৫ মিনিটে র্যাব-১০ এর একটি চৌকস দল র্যাব-৪ এর সহযোগিতায় কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়ন ও পলাশকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় নয়নের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কদমতলীর শ্যামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি রিভলবার, ২০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও হত্যায় ব্যবহৃত ২টি খালি খোসা।
এক বছর ধরে হত্যার পরিকল্পনা: র্যাব’র প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নয়ন একজন ব্যবসায়ী এবং ‘রহমত উল্লাহ গ্রুপ’-এর চেয়ারম্যান। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তিনি ভিকটিমের মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকায় শ্যামবাজার কাঁচাবাজারের একটি দোকান কেনেন। কিন্তু দোকান হস্তান্তরের সময় ভিকটিম অতিরিক্ত ২৪ লাখ টাকা দাবি করায় তাদের মধ্যে তীব্র বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপরই নয়ন আব্দুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় একটি বিদেশি রিভলবার কেনেন এবং হত্যার পর পালিয়ে নেপালে যাওয়ার জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসার আবেদন করেন। এমনকি তিনি ১৩ই ডিসেম্বর ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইটের টিকেটও বুকিং করেছিলেন। র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, ঘটনার দিন সকালে নয়ন তার শ্যালক পলাশের সঙ্গে পোস্তগোলায় দেখা করে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আব্দুর রহমান মাওলাবক্সের গলি দিয়ে দোকানে যাওয়ার সময় নয়ন পথরোধ করে প্রথমে বুকে গুলি করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মাথায় আরও একটি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে হত্যার পর তারা পালিয়ে যায়। প্রথমে তারা নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপনের চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়ে তারা মিরপুর-১০ হয়ে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে পালানোর চেষ্টা করছিল, তখন র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে।