রাজধানীসহ আশপাশের এলাকার পানি নিরাপত্তা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা এখনো অপর্যাপ্ত। নদী-খাল দূষণ, অপর্যাপ্ত স্যুয়ারেজ নেটওয়ার্ক এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতার কারণে শহরের পানির মান ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘মেট্রো ঢাকা ওয়াটার সিকিউরিটি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম’ শিরোনামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
প্রকল্পটি ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা ওয়াসার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের লক্ষ্য খাল খনন ও পুনর্বাসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন এবং বর্ষার পানি দ্রুত নিষ্কাশন নিশ্চিত করা। তবে বর্জ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে নেওয়া প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। আলোচ্য প্রকল্প বাস্তবায়নে পরামর্শকদের পেছনে ৮০৮ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে, যাকে অস্বাভাবিক বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া সুনির্দিষ্ট সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে অত্যধিক ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে, যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে খোদ পরিকল্পনা কমিশনও। নানা ত্রুটিবিচ্যুতি থাকার পরও প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদনে চাপ রয়েছে এক উপদেষ্টার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘মেট্রো ঢাকা ওয়াটার সিকিউরিটি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১৭১ কোটি ২০ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পে বাস্তবায়ন কাজ চলতি মাসে শুরু করে ২০৩১ সালের মধ্যে শেষ করতে চায় এলজিআরডি মন্ত্রণালয়।
আলোচ্য প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য—টেকসই পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, পানি শোধনের সক্ষমতা বাড়ানো, ট্রিটমেন্ট প্লান্ট উন্নয়ন, নতুন বিতরণ লাইন তৈরি, ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানো, বিকল্প পানির উৎস তৈরি, আধুনিক শোধন প্রযুক্তি ব্যবহার, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা চালু করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, নদী-খাল দূষণ কমানো, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, নদীর পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পানিবাহিত রোগ কমানো এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার।
উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের পানি নিরাপত্তা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই সংকটাপন্ন। একদিকে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা, অন্যদিকে শহর-সংলগ্ন নদীগুলোর ভয়াবহ দূষণ ভবিষ্যতে পানির প্রাপ্যতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এ ছাড়া সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, অস্পষ্ট দায়িত্ব বণ্টন এবং দীর্ঘসূত্রতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটির বাউনিয়া ও রূপনগর খাল পুনর্বাসন, ডিএনসিসির জোন ২ ও ৩ থেকে ফিকাল স্লাজ ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য বাছাই কেন্দ্র নির্মাণ, ঢাকা দক্ষিণে কাজলা, মৃধাবাড়ি ও জিয়া সড়ক খালের পুনর্বাসন, নতুন গভীর ড্রেন নির্মাণ, ওয়ার্ড ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৭১ ও ৭২-এ উন্নত স্যানিটেশন কার্যক্রম এবং মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ডে একটি নতুন রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট নির্মাণ, নারায়ণগঞ্জে পানি নিষ্কাশন উন্নয়নে লক্ষণখোলা, লুহিয়ার, মজুমদার, সোনাকান্দা, মাহমুদ নগর ও মোডংগঞ্জসহ গুরুত্বপূর্ণ খাল পুনর্বাসন করা। এ ছাড়া ঢাকা ওয়াসার নর্দমা ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ২০ হাজার সংযোগ স্থাপন, ১৬ কিলোমিটার ইন্টারসেপ্টর নির্মাণ এবং স্লাজ লিফটিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তিন সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে ১০টি এসটিএস ও একাধিক এমআরএফ স্থাপন, যানবাহন ও সরঞ্জাম কেনা, ডিজিটাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঋণের টাকা পরামর্শকের পেছনে, প্রশাসনিক ব্যয়ই হাজার কোটি টাকার বেশি: পানি-বর্জ্য সংকট মোকাবিলায় প্রস্তাবিত প্রকল্পে বিতর্কিত বিষয় হয়ে উঠেছে পরামর্শক খাতের ব্যয়। ডিপিপি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রকল্পে মোট ১৬ ক্যাটাগরির পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে ৮০৮ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ ৩ হাজার ৮০১ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রকল্পে পরামর্শকদের পেছনেই খরচ হবে প্রায় ৮০৯ কোটি টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ২১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
ঋণ করে পরামর্শক খাতে এই বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাবকে অস্বাভাবিক ও অত্যাধিক বলছেন পরিকল্পনা কমিশন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ঋণের বড় অংশ যদি পরামর্শকদের পেছনে খরচ হয়ে যায়, তাহলে এ প্রকল্পে জনগণের উপকারের তুলনায় বাইরের বিশেষজ্ঞদের আয়ই দাঁড়াবে বেশি। দেশের উন্নয়ন প্রকল্পে পরামর্শক ব্যয় সাধারণত এত বেশি হয় না। কিন্তু এই প্রকল্পে তা ২১ শতাংশের বেশি, যা নজিরবিহীন। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও এলজিআরডি বহু বছর ধরে কাজ করার পরও ১৬ ধরনের পরামর্শক নিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকার পানি নিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বড় প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সেই সুযোগে পরামর্শক ও প্রশাসনিক ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর চেষ্টা উদ্বেগজনক। ঋণের অর্থ অযৌক্তিক খাতে ব্যয়ের প্রস্তাব করা হলে এর দায় শেষ পর্যন্ত দেশের মানুষের ওপরই পড়বে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, এই প্রকল্পে যে পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে, সেটা অনেক বেশি।
খাল খনন বা পুনর্বাসনে বাইরে থেকে কেন পরামর্শক লাগবে—এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, যে মন্ত্রণালয় এবং সংস্থাগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে, তাদের তো প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। এসব তো তাদের নিয়মিত দায়িত্ব। তাদের নিজস্ব স্টাফরা কিন্তু এই কাজটা করতে পারেন। প্রকল্পে যদি খুব উচ্চ প্রযুক্তির নকশা, জটিল কারিগরি ডিজাইন বা ‘সোফিস্টিকেটেড’ কাজ থাকত, তাহলে বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নেওয়ার যৌক্তিকতা থাকত, কিন্তু এমন কাজে ৮০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করার প্রস্তাব করা হয়েছে—এটা অতিরঞ্জিত, কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ ধরনের প্রস্তাব যারা করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ডিপিপি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পরামর্শকদের পাশাপাশি বেতন-ভাতা ও প্রশাসনিক ব্যয়েও প্রকল্পের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বাবদ বরাদ্দ ১২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন ভাতা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, অফিস উপকরণ ও পরিচালন ব্যয় ৯৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। অর্থাৎ পরামর্শক, বেতন ও প্রশাসনিক ব্যয় মিলিয়ে মোট খরচ হবে ১ হাজার ৩২ কোটি ১১ লাখ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলোচ্য প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়নে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপ, যাদের সরকারি ডিপিপি প্রণয়নের অভিজ্ঞতা নেই এবং সরকারি পরিকল্পনা প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা কম। তারাই অনেকগুলো পরামর্শক খাত যুক্ত করেছে, যেগুলো আসলে এখানে আসার কথা নয়।
খাল পুনর্বাসনে কিলোমিটারপ্রতি খরচ ৪৮ কোটি টাকা: প্রকল্পের সবচেয়ে বড় ব্যয় খাত খাল পুনর্বাসন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র নির্মাণ, যার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা। তিন সিটির মোট ২২ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার খাল পুনর্বাসনে বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রায় ৮৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরের মাত্র ৭ দশমিক ৬ কিলোমিটার খাল পুনর্বাসনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৭ কোটি টাকা এবং ঢাকা দক্ষিণের ৫ দশমিক ৩ কিলোমিটারের জন্য ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ ঢাকায় কিলোমিটারপ্রতি খরচ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটির খাল পুনর্বাসনে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় অর্ধেকেরও কম, ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া মাস্টার ডিপ ড্রেন নির্মাণে ৯০ কোটি ৭৫ লাখ, একটি এফএসটিপিতে ৬০ কোটি ৫০ লাখ, ১৭টি এসটিএস পুনর্বাসনে ৪১ কোটি ১৪ লাখ, ১০টি এসটিএসসহ এমআরএফ স্থাপনে ১৪৪ কোটি ৭১ লাখ এবং একটি রিসাইক্লিং প্লান্টে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব রয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রপাতি ও যানবাহন কেনায় ব্যয় হবে ৫৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় খরচ ধরা হয়েছে ১৬০টি ভ্যাকিউম ট্রাক, থ্রিহুইলার ও ছোট যানবাহন কেনায় ৩০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পাশাপাশি ১০০টি কমপ্যাকটর ট্রাক ও স্কিড লোডার কিনতে ১৭০ কোটি ৬১ লাখ টাকা খরচের প্রস্তাব রয়েছে। বাকি ব্যয় বিভিন্ন ছোট যানবাহন ও অফিস সরঞ্জামে।
এডিপিতে না থেকেও অনুমোদনের তোড়জোড়: ব্যয় প্রস্তাবে অসংগতির পাশাপাশি প্রকল্প অনুমোদন নিয়েও তৈরি হয়েছে তোড়জোড়। সাধারণ নিয়মে যে কোনো নতুন প্রকল্প বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) তালিকায় স্থান পাওয়ার পরই অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু আলোচ্য প্রকল্পটি এডিপির তালিকায় নেই। তার পরও বিশেষ অনুমতি নিয়ে প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরেই ডিপিপি জমা হওয়ার পর নভেম্বরেই ওঠে পিইসি সভায়। সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার চাপেই প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এতে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাইয়ের নির্ধারিত সময় পাননি পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আলোচ্য প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সম্প্রতি যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকল্প প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে আসার পর নভেম্বরে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। পিইসি সভায়ও প্রকল্পটি অনুমোদনহীন তালিকায় যুক্ত না থাকার বিষয়টি আলোচিত হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য প্রকল্পের বিভিন্ন খাতের ব্যয়ের অসংগতি, বিশেষত পরামর্শক খাতের অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণে প্রকল্প পর্যালোচনায় বেশ কিছু আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
পিইসি সভা সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে পরামর্শক খাতে যে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে, তা অত্যধিক। বিশ্বব্যাংকের ঋণের একটি বড় অংশই পরামর্শকদের পেছনে খরচ হয়ে যাবে। এ ছাড়া অন্যান্য অনেক খাতে অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে, বেশ কিছু অসংগতিও রয়েছে। এমনকি গাড়ি কেনা বা জনবল নিয়োগের বিষয়ে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নেওয়া হয়নি, করা হয়নি পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষাও। সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনায় একই প্যাকেজে একাধিক ক্রয় পদ্ধতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা পিপিআর-বিধি পরিপন্থি।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, সময় স্বল্পতার কারণে পিইসি সভার আগে সবকিছু যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। তার পরও পিইসি সভায় পরামর্শক খাতে অস্বাভাবিক ব্যয়, বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ এবং ডিপিপির অসংগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থা তা সন্তোষজনকভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি। পিইসির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো, অসংগতি সংশোধন এবং ডিপিপি পুনর্গঠন করে প্রস্তাবটি ফের কমিশনে পাঠাতে বলা হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় নানা অসংগতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা শাখার যুগ্ম সচিব ড. আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, পরামর্শক খাতের ব্যয় প্রাক্কলনে ভুল হয়েছিল। পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় পরামর্শকসহ অনেকগুলো পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেই পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী সংশোধনের কাজ চলছে, সংশোধন শেষে ডিপিপি পুনর্গঠন করে ফের পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। সেক্ষেত্রে ব্যয় অনেকটা কমে যাবে। তবে সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।