পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার অনেক বেশি সংস্কার করেছে। এর মধ্যে অনেক উচ্চবিলাসী সংস্কারও আছে–যা আগামী নির্বাচিত সরকারের পক্ষে হজম করা একটু কঠিন হতে পারে। তবে সরকার বেশির ভাগ সংস্কার কিংবা সংস্কারের নির্যাস গ্রহণ করবে বলে আশা করেন তিনি। কারণ, জনগণের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখেই তাদের কাজ করতে হবে।
আজ সোমবার জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি–একনেক বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। রাজধানীর শেরেবাংলানগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেস্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এসব প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৫ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থ ৯ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। বিদেশি ঋণ ৫১০ কোটি টাকা। বাকি ৩৭৯ কোটি টাকা বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নিজস্ব যোগান।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে অনেক বড় বড় সংস্কার হচ্ছে। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কমিটির সুপারিশ ছিল এবং মন্ত্রণালয় থেকেও বহু প্রস্তাব এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা অনেক অধ্যাদেশ রেখে যাচ্ছি। যেমন বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার একটা অধ্যাদেশ হলো। তাদের হাতে বেশি স্বাধীনতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে কিনা, তা নতুন সরকার এসে নিশ্চয়ই আবার দেখবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অস্বস্তিকর মনে হতে পারে। কারণ, এখন ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত- জামিন, রিমান্ড বা দণ্ড কোনোটিই আর আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। নতুন সরকার অবশ্যই বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করবে। তবে তার আশা, এ সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রমের মূল নির্যাসটুকু নির্বাচিত সরকার গ্রহণ করবে কারণ জনগণের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখেই তাদের কাজ করতে হবে।
এ সময় ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বিভিন্ন খাতের সংস্কার কমিটি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), ক্রয় নীতিমালাসহ বিভিন্ন সংস্কার তুলে ধরেন। পরবর্তী জাতীয় সংসদ এসব অধ্যাদেশ পর্যালোচনা করে আইন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, প্রকল্প পরিচালকদের সমস্যা রয়েই গেছে। মুশকিল হলো যে এখন কেউ প্রকল্প পরিচালক হতে চাচ্ছেন না। আর ঠিকাদারেরাও এখন বেশি উৎসাহী হচ্ছে না। তিনি বলেন, যত দূর শুনেছি, দুর্নীতি খুব কমেনি বা চাঁদাবাজি। এসবও শোনা যাচ্ছে।