Image description

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনার্স-মাস্টার্স পড়িয়ে বেকার তৈরি করা হচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেকনিক্যাল শিক্ষা গ্রহণ করে। আর আমাদের এখানে উল্টো। সকলে অনার্স-মাস্টার্স পড়ে বেকার হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলো তো আছেই, পাশাপাশি জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে পরিকল্পনা কমিশনে শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব)-এর নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন তিনি। এসময় ইরাবের সভাপতি ফারুক হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান সালমান, ইরাবের সাবেক সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ, নিজামুল হক, শরীফুল আলম সুমনসহ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিক্ষা প্রশাসনকে আগে অন্তত দুর্নীতি কমাতে হবে এবং সুস্থির অবস্থায় আনতে হবে। কারণ এখানে সব বদলি হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কম্পোনেন্টে বহুকিছু মেরামত করতে হবে। এরপর আমি যদি থাকি তখন আমার শেষ দিকে সবগুলো মিলে একটা ‘শিক্ষা উপদেষ্টা পরিষদ’ হয়তো তৈরি করে দেবো। তবে ‘শিক্ষা কমিশন’ বললেই আগের ব্যর্থ শিক্ষা কমিশনের কথা মনে হয়। তাই আমি এটাকে ‘শিক্ষা কমিশন’ বলতে চাচ্ছি না।

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের দুর্নীতি একদিনে সমাধান করা সম্ভব না। আমি মন্ত্রণালয়ে একবার বলেছি, সেটাকে দুর্নীতি মুক্ত করতে চাই। সেটি মন্ত্রণালয়ের সবাই শুনেছে। কিন্তু শিক্ষার অধিদপ্তরগুলোতে যায়নি। সেখানে গিয় প্রথমে একটি সতর্ক বার্তা দিতে হবে। তারপর দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে একটি উদাহরণ তৈরি করতে হবে।

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনবার চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তিতে কত টাকা ব্যয় হত; গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তারা কত টাকা আয় করছেন—এই দুটি বিষয়ের হিসাব নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে এই হিসাব নেওয়া হবে।

শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের বিষয়ে এখন কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই জানিয়ে অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিক্ষা প্রশাসনকে আগে অন্তত দুর্নীতি কমাতে হবে এবং সুস্থির অবস্থায় আনতে হবে। কারণ এখানে সব বদলি হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কম্পোনেন্টে বহুকিছু মেরামত করতে হবে। তারপর আমি যদি থাকি তখন আমার শেষ দিকে সবগুলো মিলে একটা ‘শিক্ষা উপদেষ্টা পরিষদ’ হয়ত একটা তৈরি করে দেবো। তবে ‘শিক্ষা কমিশন’ বললেই আগের ব্যর্থ শিক্ষা কমিশনের কথা মনে হয়। তাই আমি এটাকে ‘শিক্ষা কমিশন’ বলতে চাচ্ছি না।

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি অন্যায্য করে তিনি বলেন, তারা প্রাথমিকের সমমান। অথচ প্রাথমিকে জাতীয়করণ করা হয়েছে কিন্তু ইবতেদায়ীকে বাইরে রাখা হয়েছে। ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের বেতন ১৫০০, প্রধান শিক্ষকের বেতন ৩০০০ টাকা মাত্র। তাদের সমস্যাটা জেনুইন, কিন্তু এই মুহূর্তে অনশন করে আমাদের বিব্রত করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। এটি না করে বরং কি করে কি করা যায় সেই চিন্তা করতে আমাদের সময় দেন। অগ্রাধিকার অনুযায়ী আমরা যাতে কাজ শুরু করে দিতে পারি। আমরা শুরু করতে দিতে যায় যাতে পরবর্তী সরকার এসে বুঝে যে এরা আসলেই বঞ্চিত। এদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন।