চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়ার উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে তিনটি প্রবেশপথে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচিতে সংগঠনটির কর্মীরা অবস্থান নেন।
অবরোধকে কেন্দ্র করে বন্দর অভিমুখী সব প্রবেশপথে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্দরের স্বাভাবিক কাজে বাধা সৃষ্টি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর স্কপ নেতারা তিনটি স্থানে—মাইলের মাথা (সীমেন্স হোস্টেল এলাকা), টোল রোডের টোলপ্লাজা গেট এবং বড় পোল—অবরোধ পালনের ঘোষণা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ এবং স্কপ নেতৃবৃন্দ, যার মধ্যে ছিলেন টিইউসি সভাপতি তপন দত্ত, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার ও এসকে খোদা তোতন।
স্কপের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এনসিটি টার্মিনাল ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে ইজারা দেওয়ার বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যাখ্যা দিয়েছে যে নভেম্বর মাসে কোনো চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমান চেয়ারম্যান ছুটিতে থাকায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে, আর ডিসেম্বরের শুরুতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলে সরকারের এমন চুক্তি করার ক্ষমতাও সীমিত হয়ে যাবে।
তবে স্কপ নেতারা জানান, বিডার প্রধান নির্বাহী আশিক চৌধুরীর ‘সাত দিনের মধ্যে এনসিটির চুক্তি’ সংক্রান্ত মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের দাবি—একটি অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের কৌশলগত চুক্তি করার নৈতিক কিংবা আইনি অধিকার নেই।
নেতারা আরও বলেন, ছয় মাস ধরে স্কপ ধারাবাহিক আন্দোলন করছে এবং এতে শ্রমিক সমাজ, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ যুক্ত হয়েছে। ফলে একতরফাভাবে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে ৩৩ বছরের চুক্তি করে, যা আরও ১৫ বছর বাড়ানো যেতে পারে। একইদিন কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল পরিচালনায় সুইস একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২২ বছরের চুক্তি হয়। সরকারের পরিকল্পনায় এনসিটিও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার বিষয় রয়েছে।
শীর্ষনিউজ