Image description

কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ভূমিকম্প মানুষের মনে গভীর দগদগে দাগ ফেলে গেছে। নগরবাসী এখনো শঙ্কায় আবার কি বড় কোনো ধাক্কা অপেক্ষা করছে? এই অনিশ্চয়তা ও আতঙ্কের মধ্যেই ধীরে ধীরে খুঁজছেন স্বাভাবিকতায় ফেরার পথ।

ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা অনেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেন। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির ছবি ও ভিডিও ছাড়াও নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন অনেকে। 

হাসপাতালের হুইলচেয়ারে বসা বাবার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে সৈকত সাদিক নামের এক সাংবাদিক লেখেন, ‘আব্বাকে ব্রেনের সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে আসছি কেরানীগঞ্জের একটি হাসপাতালে। ওয়ার্ডবয় যখন আব্বাকে হাসপাতালে প্রবেশ করাবে, হঠাৎ এমন সময় ভূমিকম্প। হাসপাতালে ছোটাছুটি। আব্বাকে হুইলচেয়ারে রেখেই ওয়ার্ডবয় জীবন বাঁচাতে দৌড়। আল্লাহ মেহেরবান। বড় বিপদ থেকে বাঁচা গেল।’

উপস্থাপিকা ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আরজে সমৃদ্ধি তাবাস্সুম (RJ Somriddhi Tabassum) নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন- ‘ভূমিকম্পের সময় আমি দরজা খুলে দৌড় দেওয়ায় আমার পোষা পাখি আমার সাথে উড়াল দেয়। আমার সাথে ঘুমায় সে।ওর নাম pookie। কথা বলে আর শিস ফুকাতে পারে। বাসাবো কালীবাড়ির সামনে কারো বাসায় গেলে যদি ফিরিয়ে দিতেন আমার আত্মা শান্তি পেতো খুব। হলুদ লুটিনো ককটেল মেইল।’

বিশিষ্ট ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, ‘এভাবেই এক মহাকম্পন মহাপ্রলয়ে রূপ নেবে একদিন। সেদিন সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো। নিশ্চয় কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ংকর ব্যাপার (সূরা হাজ্জ : ১)। ভূমিকম্পের মাত্রা আরেকটু বেশি হলেই হয়তো আমাদের অনেকের জীবনের শেষ দিন হতো আজ। আজকে ভূমিকম্প অনেক বড় সতর্কবার্তা রেখে গেল আমাদের জন্য।’

শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী এলাকায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং এটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। আহত হয়েছেন ছয় শতাধিক মানুষ। 

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্যে জানা গেছে, সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে ৬০৬ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং গুরুতর অবস্থায় ১৬ জনকে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অনেক রোগী এখনো হিসাবের বাইরে থাকায় আহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।