মধুপুরের পীর ও সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা আব্দুল হামিদ বলেছেন, হারাম ও কোনো বাতিলের সঙ্গে আপস নেই। এখানে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা এসেছিলেন। তাদেরকে বলেছি-আপনারা যদি ক্ষমতায় গিয়ে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা না করেন তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে।
তিনি শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাদিয়ানীর অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এই মাটি আলেম-ওলামার মাটি, এই মাটি পীর-দরবেশের ঘাঁটি। এখানে যত বজ্জাতি-শয়তানি করেছো, ভাল হয়ে যাও। তিনি সরকারকে তওবা করা এবং ভাল হয়ে ফিরে আসার আহ্বান জানান। অন্যথায় খুনি হাসিনার মত দেশ থেকে পালাতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মাওলানা আব্দুল হামিদ বলেন, নবীর (সা.) পরে কোনো নবী নেই। বেদআতে হেদায়েত নেই।
মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সদস্য ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান।
এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং দেশ-বিদেশের শীর্ষ আলেম-ওলামা বক্তব্য রাখেন। এ সময় ক্ষমতায় গেলে কাদিয়ানীনের অমুসলিম ঘোষণার দাবি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি আদায়ে প্রয়োজনে ঢাকা অবরোধ, সংসদ অভিমুখে লংমার্চ, সচিবালয় বন্ধ করে দেয়া সহ নানা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
মহাসম্মেলন থেকে কাদিয়ানীদের ইসলাম ও মুসলিম পরিচয় বন্ধ, তাদের সব বিতর্কিত ও ইসলামবিরোধী প্রচারণা নিষিদ্ধ সহ ছয় দফা ঘোষণা করা হয়। এটি পেশ করেন-বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। এই ছয় দফা অনতিবিলম্বে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-
আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বস্তরের আলেম-উলামা ও তাওহিদি জনতার অংশগ্রহণে গণস্বাক্ষর; মে ও জুন মাস জুড়ে দেশের প্রতিটি জেলায় দায়িত্বরত জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান; জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশের প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় খতমে নবুওয়ত সম্মেলন আয়োজন করা হবে।
এসব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার পরও যদি কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করার ন্যায়সঙ্গত দাবি সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত না হয়, তবে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণের লক্ষ্যে দেশের প্রতিনিধিত্বশীল শীর্ষ উলামায়ে কেরামকে নিয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন আহ্বান করা হবে।