হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজের ‘স্ট্রং ভল্টের’ তালা ভাঙা নিয়ে চলছে তোলপাড়। গুঞ্জন উঠেছে, তালা ভেঙে লুট করা হয়েছে আমদানি করা ভারি কয়েকটি অস্ত্র ও গোলাবারুদ। তবে, এই তালা ভাঙা নিয়ে যেনো সংশ্লিষ্ট সকলেরই মুখ বন্ধ। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি বিমানবন্দরের দায়িত্বরতরা স্পষ্ট না করায় উঠেছে নিরাপত্তার প্রশ্ন। এর দায় এড়েতে পারে কেউই।
গেলো ১৮ অক্টোবর বিমানবন্দরে আমদানি কার্গো ভিলেজে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এরপর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠ। ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ‘স্ট্রং ভল্ট’। কাঠামোগত সক্ষমতায় ভয়াবহ আগুনেও তেমন কোন প্রভাব পরেনি ভল্টে। অক্ষত থেকে যায় আমদানি করা অস্ত্র, গোলাবারুদ, স্বর্ণসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র।
কিন্তু বিপত্তি আগুনেরও ১০ দিন পর, ২৮ অক্টোবর। ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া যায় নিরাপত্তা বেস্টনিতে থাকা স্ট্রং ভল্টের তালা। এই ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। যদিও ভল্ট থেকে কোন কিছু লুট হয়েছে কি-না তার কোন বর্ণনা নেই ওই জিডিতে। তবে কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর বলছে, লুট হয়েছে ভল্টে থাকা কয়েকটি অস্ত্র।
এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে চায়নি বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। ঘটনা অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানায় বিমান বাংলাদেশ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, এটা আমাদের বিমানের এককভাবে কোনো অথরিটি নেই যে গিয়ে দেখবে। জিনিসটা যখন জানাজানি হয় তখন সব বাহিনীর যারা যারা সম্পৃক্ত তারা এসে যা করার দরকার করছে। কি চুরি হয়েছে এগুলো তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বের হয়ে আসবে।
পুলিশ বলছে, বিমানবন্দর থানায় হওয়া সাধারণ ডায়েরি ধরে তদন্ত চলছে। তবে অস্ত্র বা অন্য কিছু লুট হয়েছে কি-না তা বেরিয়ে আসবে, তদন্তের পরই।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সংবেদনশীল জিনিস অস্ত্র-গোলাবারুদ। এক্ষেত্রে ইনভেন্টরি চেক করে এবং অন্যান্য সামগ্রিক বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে আমাদের যে তদন্ত প্রক্রিয়া সেটা অব্যাহত রেখেছি।
বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকারত এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তায় থাকা স্ট্রং ভল্টের তালা ভাঙা, উদ্বেগের বড় কারণ হিসেবে দেখছেন এই অ্যাভিয়েশন বিশ্লেষক।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ভয়াবহ রকমের একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এটা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে সবাইকে শংকিত করে তুলেছে এবং ষড়যন্ত্র বলেই আমরা মনে করতে পারি। কিছু লুট হয়েছে কিনা সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে। এটার একটা যথাবিহীত তদন্ত হওয়া উচিত।
এই ঘটনার আগেই ভল্টের নিরাপত্তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সতর্কমূলক চিঠি লিখে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।