Image description

অনেকদিন ধরে সিলেটের রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ। অসামাজিকতা চলছে পার্কের ভেতরে থাকা ১৫টি কক্ষে। বাইরে থেকে     ছেলে-মেয়েরা সেখানে অবাধ মেলামেশা করে। গ্রামের ভেতরে পার্কে এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। রোববার বিকালে তারা এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন। কয়েকশ’ মানুষ গিয়ে রিজেন্ট পার্কের ভেতরে হানা দেন। আটক করেন ৮ প্রেমিক জুটিকে। তাদের মধ্যে অনেকেই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। পরে অভিভাবক ডেকে এনে তারা বিয়েও দিয়ে দিয়েছেন। তবে; বিয়ের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছে। সিলেট শহরতলীর মোগলাবাজার এলাকায় রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টের অবস্থান। এটি প্রবাসী বিনিয়োগের একটি প্রকল্প। নানা সময় এই পার্কটি আলোচনা এসেছে। কয়েক বছর আগেও পার্কের ভেতরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে পার্ক কর্তৃপক্ষের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- পার্কের ভেতরে অসামাজিক কর্মকাণ্ড রুখতে  রোববার বিকালে কয়েকশ’ স্থানীয় জনতা হানা দেয়। এ সময় তারা পার্কের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি করে অসলগ্ন অবস্থায় যুবতী-যুবতীকে দেখতে পান। এ সময় তারা ৮ জুটিকে আটক করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে ভাঙচুর চালায়। অসামাজিক কাজের কয়েকটি কক্ষে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ গিয়ে স্বাভাবিক করে। পাশাপাশি দক্ষিণ সুরমার ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সঙ্গে আটক করা যুবক-যুবতীকে নিজেদের জিম্মায় নিতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু স্থানীয়রা সেটি না করে ওই যুবক-যুবতীদের অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে আসেন। উপস্থিত থাকা কয়েকজন এলাকাবাসী জানিয়েছেন- অভিভাবকদের সম্মতিতে ৪ জুটিকে তাৎক্ষণিক বিয়ে দেয়া হয়েছে। আর বাকিদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিয়ে পড়ান সিলাম ইউনিয়নের কাজী আব্দুল বারী। তিনি জানিয়েছেন- বিবাহিতদের মধ্যে তিনজনের ১০ লাখ করে এবং একজনকে ১২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। বিয়ে দেয়া চার যুগলের মধ্যে-সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, ওসমানী নগর উপজেলার বাসিন্দা রয়েছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ সুরমা বিএনপি’র সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজুল। তাজুল মানবজমিনকে জানিয়েছেন- পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়া সেখানে গিয়ে স্বাভাবিক করি। এরপর আটক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের এনে আটজনকে বিয়ে পড়িয়ে দিই এবং বাকিদের পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দিই। যা হয়েছে সব পরিবারের উপস্থিতিতে হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় সিলেটজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় পার্কটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার কথা জানিয়েছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মিডিয়া মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন- পার্ক কর্তৃপক্ষ পার্কটি বন্ধ করে দিয়েছেন। ভাঙচুর কিংবা সংক্ষুব্ধ কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দেননি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। মোগলাবাজার থানার ওসি মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন- আটককৃতদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিয়ের বিষয় সম্পর্কে জানেন না বলে জানান। এলাকার লোকজন জানিয়েছেন- কয়েক বছর আগে  মোগলাবাজারে প্রবাসী বিনিয়োগে রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্ট যাত্রা শুরু করে। এখানে পার্টি সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে যখন পার্টি থাকে না তখন সেখানে ঘুরতে যায় অনেকে। সম্প্রতি সময়ে এ পার্কের ভেতরে যুবক-যুবতীদের ভিড় বেশি দেখা দেয়। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়; পার্কের ভেতরে থাকা কক্ষগুলোতে অসামাজিক কাজ চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে এখানে এই কাজ করে। কয়েক মাস ধরে পার্কের ভেতরে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে। এ নিয়ে এলাকার অনেকেই পার্কের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীদের সতর্ক করেছিলেন।