Image description
 

হাফিজ সাইদের জামাত-উদ-দাওয়া বাংলাদেশে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে শঙ্কা তৈরি হয়েছে—উগ্র মতবাদ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সীমান্ত পেরিয়ে চরমপন্থী কার্যকলাপ মাথাচাড়া দিতে পারে। এই আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে, কারণ পাকিস্তানের আইএসআই বাংলাদেশে তাদের ঘুমন্ত শাখা আবার সক্রিয় করার চেষ্টা করছে।

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় জামিয়াত আহলে হাদীস-এর সাধারণ সম্পাদক ইবতিসাম এলাহী জাহির (জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সাইদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত) সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। বাংলাদেশ বিষয়ে যাদের ধারণা আছে, তাদের মতে—এই সফর নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদে বিশ্বাসী বাংলাদেশের সমাজে এমন সফর চরমপন্থার ধারণাকে উৎসাহ দিতে পারে।

গত সপ্তাহে জাহির বাংলাদেশে এসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকায় সফর শুরু করেন। এটি তার দ্বিতীয় সফর, ২০২৪ সালের আগস্টে মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর।

জানা গেছে, জাহির বাংলাদেশের আহলে হাদীস নেতা শেখ আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের ছেলে আবদুর রহিম বিন আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন।

তিনি রাজশাহীসহ সীমান্ত এলাকার কয়েকটি মসজিদে ভাষণ দিয়েছেন এবং আহলে হাদীস আন্দোলন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আসাদুল্লাহ আল গালিবের সঙ্গে দেখা করেছেন। তার সফরসূচিতে আরও কিছু সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনের কথা রয়েছে। তিনি সালাফি অনুসারীদের একটি সম্মেলনেও ভাষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

ভারতের নিরাপত্তা মহলে আশঙ্কা বাড়ছে—বাংলাদেশে আবার সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক সক্রিয় হয়ে উঠছে, যেটা ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের সময়কালকে মনে করিয়ে দেয়। তখন ভারতের অভ্যন্তরে চালানো বেশ কয়েকটি হামলার সূত্র পাওয়া গিয়েছিল ঢাকা-ভিত্তিক চরমপন্থী নেটওয়ার্কে, যেগুলো আইএসআই-এর সহায়তায় পরিচালিত হতো এবং বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামির সহযোগিতা পেত।

সেই সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহীরা, বিশেষ করে বাংলাদেশে অবস্থানরত উলফা নেতারা, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ও তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের কিছু মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করত।

অভিযোগ রয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই পাকিস্তান ও বাংলাদেশ—দুই দেশের চরমপন্থী সংগঠনগুলোকে গড়ে তুলেছে এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।

জাহিরের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, সেখানে চ্যারিটি কমিশন তাকে নিয়ে তদন্ত করেছিল এবং তাকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি উঠেছিল।