বগুড়ার নন্দীগ্রামে গোলাম রব্বানী নামে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মসজিদের গাছ বিক্রি করে অন্তত ৮০ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ওই নেতা।
এ ঘটনায় সোমবার (২০ জানুয়ারি) উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের আপুশাগাড়ী জামে মসজিদ কমিটির পক্ষে সাকাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে গোলাম রব্বানীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। নন্দীগ্রাম থানার এসআই নাজমুল হক অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত গোলাম রব্বানী নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আপুশাগাড়ী জামে মসজিদের জমির ৫.৯২ একরের মধ্যে ৫.১৫ একর জবরদখল করেছেন গোলাম রব্বানী, হাফিজুর রহমান ও আদম আলীসহ তাদের লোকজন। তারা প্রভাব বিস্তার করে জমি ও পুকুর দখলের পর লিজ দিয়েছেন। পরে গাছপালা বিক্রি ও পুকুর লিজ বাবদ অন্তত ৮০ লাখ টাকা লুট করেছেন। মসজিদ কমিটি একাধিকবার জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, আপুশাগাড়ী মৌজার ২ নম্বর খতিয়ানের ৫.৯২ একর জায়গার মধ্যে ৫.১৫ একরে মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, আবাদি জমি, পুকুর, ভিটে ও ডোবা রয়েছে। গত ১০ নভেম্বর পুকুর লিজ ও গাছ বিক্রির টাকার হিসাব চাওয়ায় মসজিদ কমিটির সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলটির স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়েন গোলাম রব্বানী। সেসময় তার লোকজন প্রভাব বিস্তার করে মসজিদের পুকুর কব্জায় নিয়েছিল। বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে দাপট দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এদিকে বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ শাসনামলে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ম্যানেজ পলিটিক্স করতেন। দলের দুঃসময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তিনি বিএনপির দলীয় কর্মসূচিতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত এবং নেতাকর্মীদের খোঁজ পর্যন্ত রাখেননি।
এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, মসজিদের পুকুর ও জায়গা জবরদখল করিনি। কোনো প্রভাব বিস্তারের প্রয়োজন পড়েনি। ওয়াকফ স্টেটের নিয়ম মেনেই দখলে আছি। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কোনো সখ্যতা নেই। যারা থানায় অভিযোগ করেছে তারাই আওয়ামী লীগ করে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার বলেন, বিএনপির কোনো নেতাকর্মী দখলবাজি বা প্রভাব বিস্তার করছে না। এমন অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে আওয়ামী লীগের দোসররা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কেউ বিএনপির নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার করে অনৈতিক সুবিধা বা দখলবাজি করলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে।