Image description
 

দেশের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডিং (আইএসপি) খাতে সংগঠিত গুরুতর সাইবার হামলা ও আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়েছেন। 

 

ওই স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেছেন, কিছু প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে সংগঠিত DDoS (সাইবার অপরাধীচক্র) আক্রমণের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী আইএসপি-দের নেটওয়ার্ক ও ব্যবসা ধ্বংসের চেষ্টা করছে—এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ সরকার ও বিটিআরসি-র হাতে এসেছে।

 

পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব নিশ্চিত করেছেন, দায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম সরকারের হাতে এসেছে। সাইবার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, কোনো নেটওয়ার্কে বেআইনি প্রবেশ, হ্যাকিং, বা ইচ্ছাকৃত সেবা বিঘ্ন ঘটানো একটি গুরুতর অপরাধ।

 

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আসছে, তারা নতুন লাইসেসিং প্রক্রিয়ায় সুযোগ পাবে না। তাদের বর্তমান লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে।’

অন্যদিকে, তিনি লাইসেন্স নবায়ন ও শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় থাকা অনেক আইএসপি কোম্পানির বিপুল পরিমাণ বকেয়ার বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যারা সরকারি বা বেসরকারি কোম্পানি থেকে ব্যান্ডউইথ কিনে অর্থ পরিশোধ না করে কৌশলে অন্য আইটিসি বা আইআইজিতে শিফট হয়েছেন, তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না।

গুরুত্বর আর্থিক অপরাধের প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, এছাড়াও সাবেক সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত কিছু কোম্পানি কোটি কোটি টাকার পাওনার নামে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভুয়া চেক প্রদান করে চেক বাউন্সিং প্রতারণা করেছে (যেমন আমরা নেটওয়ার্ক)। এসব গুরুতর আর্থিক অপরাধের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’ তিনি আরও জানান, বকেয়া অপরিশোধিত রেখে কোনো লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না।

দেশের ইন্টারনেট সেবা খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি সব আইএসপি প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন:

  • দ্রুত অ্যান্টি-DDoS সেটআপ ও লোড-ব্যালান্সার স্থাপন করুন।
  • নেটওয়ার্ক নিরাপত্তায় যথাযথ বিনিয়োগ করুন।
  • প্রতিযোগিতা বন্ধ বা সীমিত করতে টার্গেটেড অন্যায় আচরণ বন্ধ করুন।

তিনি ক্ষতিগ্রস্ত আইএসপিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নিজের পরিচিত কিংবা ভাই-বেরাদার বলে DDoS আক্রমণকারীদের নাম লুকিয়ে রাখবেন না। বরং ক্ষতিগ্রস্তরা একত্র হয়ে মামলা করুন, আপনারা মামলা করলে সরকার অপরাধ দমনে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দিতে সক্ষম হবে।’

পোস্টের শেষে তিনি বলেন, ‘বিটিআরসি আক্রমণকারীদের ধরবে, পাশাপাশি আপনারাও নিজেদের অবকাঠামোকে নিরাপদ করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করবেন। যৌথভাবে কাজ করে আমরা বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবা খাতকে আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করবো।’