বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে আবারও আলোচনায় সরগরম দেশ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেই সময় ঘটনাটি ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, প্রায় তিন দশক পর মামলাটি এখন রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়।
ঘটনাটি নতুন মোড় নেয় ১৯৯৭ সালে দেওয়া রেজভী আহমেদ ফরহাদের এক জবানবন্দি ঘিরে। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, “আমরাই সালমান শাহকে হত্যা করেছি। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়েছিল।” তার বক্তব্য অনুযায়ী, সালমান শাহর মৃত্যু ছিল ১২ লাখ টাকার চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ড। এই চুক্তি করেছিলেন সালমানের শাশুড়ি লতিফা হক লুসি।
রেজভীর দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আরও জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে গুলিস্তানের এক বারে বসে পরিকল্পনা করা হয় সালমানকে হত্যার। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদ, ছাত্তার, সাজু ও রেজভী। ফারুক সেখানে জানায়, সামিরার মা লতিফা হক লুসি এ কাজের জন্য টাকা দিয়েছেন। পরে চুক্তি হয় মোট ১২ লাখ টাকায়-এর মধ্যে ৬ লাখ আগে, বাকি ৬ লাখ কাজ শেষে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সেদিন রাত আড়াইটার দিকে ডন, ডেভিড, ফারুক ও আজিজ মোহাম্মদ এরা সবাই সালমানের ইস্কাটনের বাসায় যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সালমানের স্ত্রী সামিরা, শাশুড়ি লতিফা হক লুসি ও আত্মীয়া রুবি। রেজভীর দাবি, ঘুমন্ত সালমানকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অচেতন করা হয়, পরে ইনজেকশন পুশ করে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজাতে তার দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় মোট ১১ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। প্রধান আসামি সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক। বাকি আসামিরা হলেন প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, খলনায়ক ডন, ডেভিড, জাভেদ, ফারুক, মেফিয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আবদুস সাত্তার, সাজু ও রেজভী আহমেদ ফরহাদ।
দীর্ঘ ২৯ বছর পর এ মামলাটি আবারও আলোচনায় আসায় সালমান শাহর ভক্তরা নতুন করে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করছেন।